সত্যের পথে ডাকতে রসুলের আগমন

সত্যের পথে ডাকতে রসুলের আগমন

ফাইল ছবি

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়ায় এসেছিলেন মিথ্যা থেকে মানুষকে দূরে রাখতে। যারা সত্যের পথের অনুসারী তাদের আখিরাতের জীবনে কীভাবে পুরস্কৃত করা হবে তার বার্তাবাহক হিসেবে। আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘আমি আপনাকে সমগ্র জাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে পাঠিয়েছি,অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।’ সুরা সাবা, আয়াত ২৮। অন্যত্র মানব জাতিকে লক্ষ্য করে মহান স্রষ্টা ইরশাদ করেছেন, ‘মুহাম্মদ তোমাদের পুরুষদের মধ্যে কারও পিতা নন। বরং তিনি হলেন আল্লাহর রসুল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।’ সুরা আহজাব, আয়াত ৪০। আল্লাহ রব্বুল আলামিন সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন বিশ্ব তথা মানব জাতির জন্য রহমত হিসেবে। হজরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমে দুনিয়ার বুকে প্রথম নবীর আগমন,মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে পৃথিবীতে নবী-রসুলের আগমন পর্বের সমাপ্তি টানা হয়েছে। হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর পৃথিবীতে আর কোনো নবী আসবেন না। তিনি হলেন সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য মনোনীত নবী। কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ পৃথিবীতে আসবে তারা তাঁর উম্মতের মধ্যেই গণ্য হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পথে মানুষকে ডাকার এ মহান জিম্মাদারি তাঁর উম্মতের মধ্যে যারা কোরআন-হাদিসের জ্ঞানে জ্ঞানী তাদের ওপর দিয়েছেন। তিনি এ কথাও বলেছেন, তাঁর পরে যদি কেউ নবী হতো সে হতো ওমর। কিন্তু পৃথিবীতে আর কোনো নবী আসবে না। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগে যে হাজার হাজার নবী-রসুল এসেছেন তাদের বিশেষ সম্প্রদায়ের নবী-রসুল হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আখিরি নবীর আগমন ঘটেছে সমগ্র মানব জাতির জন্য। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে নবী! আমি আপনাকে বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি।’ সুরা আম্বিয়া, আয়াত ১০৭। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের কথা আল কোরআনের পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলোয়ও উল্লিখিত ছিল। এ বিষয়ে ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে বনি ইসরাইল! আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহর পাঠানো রসুল, সত্যতা বিধানকারী সেই তাওরাতের, যা আমার আগে এসেছে, আর সুসংবাদদাতা এমন একজন রসুলের যে আমার পরে আসবে, যার নাম হবে আহমদ।’ সুরা  সফ, আয়াত ৬। হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তি মিশনের লক্ষ্য ছিল জুলুমের অবসান ঘটিয়ে মানব জীবনের সব ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার ও ইনসাফ কায়েম। ২৩ বছরে প্রাণান্ত প্রয়াস চালিয়ে তিনি তা কার্যকর করেন সার্থকভাবে। আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি সমাজে ন্যায়বিচারের মানদন্ড সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। জাতি-ধর্ম, বর্ণ-শ্রেণি, পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন, ধনী-দরিদ্র, প্রভু-ভৃত্য সবার ক্ষেত্রে বিচার সমান, এখানে বিন্দুমাত্র হেরফেরের অবকাশ ছিল না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দীনে অটল থাকার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলাম বিষয়ক গবেষক।