গভীর রাতে পাবনা পুলিশ সুপারের কম্বল বিতরন

গভীর রাতে পাবনা পুলিশ সুপারের কম্বল বিতরন

গভীর রাতে পাবনা পুলিশ সুপারের কম্বল বিতরন

এ কোন মানব দরদী। দীর্ঘকায় মানুষটির পরণে প্যান্ট,টি-শার্ট। শীত বুঝে গায়ে দিলেন কালো রঙের সোয়েটার। মাস্কে মুখ ঢাকা। গাড়িতে উঠলেন। চলতে শুর করলো গাড়ি। তার গাড়ির পেছনে রওনা হল কয়েকটি পিকাপ গাড়ি। একটি গাড়ি ভর্তি কম্বল।

চুপচাপ চলে গেলেন ঈশ্বরদী বাজারের মাহবুব আহমেদ খান স্মৃতি মঞ্চ, বুকিং কাউন্টার ও জংশন স্টেশনে। ব্যস্ততম ঈশ্বরদী তখন ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছে। গাড়ি-ঘোড়া কমে আসছে বাজার সড়কের রাস্তায়। উত্তরের বাতাস থেকে ধেয়ে আসছে কনকনে হাঁড় কাঁপানো শীত। স্টেশন এলাকায় জুবুথুবু হয়ে ঘুমাচ্ছেন কিছু অসহায় বৃদ্ধ-পথশিশু।

যে মানব দরদী মানুষটি শীতার্তের গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি আর কেও নন। যিনি পাবনাবাসীর মনি কোটায় আসন করে নিয়েছেন। তিনি আর কেও নন। তিনি পাবনা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান পিপিএম।

গাড়ি থেকে নেমে কম্বল হাতে একে একে জড়িয়ে দিতে থাকলেন মানুষগুলোকে। একটু উঞ্চতা পেয়ে জেগে উঠলেন কেউ কেউ। বিস্ময় ভরা চোখে তাকিয়ে দেখলেন কম্বল জড়িয়ে দেয়া মানুষটি আর কেউ নন পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান। বৃদ্ধদের কেউ কেউ হাত বাড়িয়ে আশীর্বাদ করলেন। বিনয়ের সঙ্গে এসপি দোয়া চাইলেন।

বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা জেলা পুলিশের উদ্যোগে ২০০ জন শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।

বিতরণ শেষে জেলা পুলিশের নিজ ফেসবুক আইডিতে পুলিশ সুপার বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শীতে অসহায় মানুষের পাশে আমাদের একটু দাঁড়ানোর প্রয়াস আপনাদের জন্যই।’

এসময় পুলিশ সুপারের সাথে ছিলেন-পাবনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোঃ মাসুদ আলম, ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান, আমবাগান ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) শহিদুল ইসলাম, ঈশ্বরদীর থানার ডিএসবি ইন্সপেক্টর (ইনচার্জ) শেখ মোঃ মোবারক পারভেজ ও  থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাদিউল ইসলামসহ জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, পাবনা ও ঈশ্বরদীসহ এ অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় পথশিশুরদের কষ্টের শেষ নেই। এখানে এক সপ্তাহব্যাপী ১১ থেকে ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা চলছে বলে ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ মোঃ নাজমুল হক জানান।