৩০ বছরের বন্ধ্যাত্ব ঘোচালো শ্রীলংকা

৩০ বছরের বন্ধ্যাত্ব ঘোচালো শ্রীলংকা

ছবি: সংগৃহীত

বাঁ-হাতি ব্যাটার চারিথ আসালঙ্কার সেঞ্চুরিতে  অস্ট্রেলিয়ার  বিপক্ষে  ওয়ানডে সিরিজ  জিতলো স্বাগতিক শ্রীলংকা। এই জয়ে দীর্ঘ ৩০ বছর পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতলো শ্রীলংকা। 

গতরাতে সিরিজের উত্তেজনাপূর্ণ  চতুর্থ ওয়ানডেতে শ্রীলংকা ৪ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে লংকানরা। চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে থাকা শ্রীলংকার জন্য এই সিরিজ জয় অবিস্মরনীয় অর্জন। ঘরের মাঠে ১৯৯২ সালে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিলো শ্রীলংকা। আর ২০১০ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলো  লংকানরা। 

সিরিজ জয়ের সাথে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়েও থাকলো শ্রীলংকা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে  প্রথম সেঞ্চুরির ইনিংসে ১১০ রান করে ম্যাচের সেরা হন আসালঙ্কা।
কলম্বোতে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে শ্রীলংকা। টপ-অর্ডার ব্যর্থ হওয়ায়  ৩৪ রানেই ৩ উইকেট হারায় লংকানরা। তবে দারুনভাবে শুরুর ধাক্কাটা সামলেছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও আসালঙ্কা। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে ১০০ বলে ১০১ রানের জুটি গড়েন ডি সিলভা ও আসালঙ্কা। ৭টি চারে ৬১ বলে ৬০ রানে ডি সিলভার বিদায়ে ভাঙ্গে জুটি। 

দলীয় ১৩৫ রানে ডি সিলভার বিদায়ের পর পরের ব্যাটারদের সাথে চারটি জুটিতে ১২১ রান জড়ো করেন আসালঙ্কা। ৯৯তম বলে ১৫ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান আসালঙ্কা। ৪৮তম ওভারে আসালঙ্কাকে বিদায় করেন  অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্স। আউট হওয়ার আগে ১০টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০৬ বল খেলে নিজের স্মরনীয় ইনিংসটি সাজান আসালঙ্কা।
শেষদিকে হাসারাঙ্গা ডি সিলভার ২০ বলে অপরাজিত ২১ রানের কল্যাণে ৪৯ ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। অস্ট্রেলিয়ার কামিন্স-ম্যাথু কুনেমান ও মিচেল মার্শ ২টি করে উইকেট নেন।

 জয়ের জন্য ২৫৯ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে  তৃতীয় ওভারেই অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। রানের খাতাই খুলতে পারেননি ফিঞ্চ। তবে মার্শকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ বলে ৬৩ রান তুলে শুরুতে অধিনায়ককে হারানোর ধাক্কা ভুলিয়ে দেন ওয়ার্নার। মার্শ ২৬ রানে থামলেও, মিডল-অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন ওয়ার্নার। এক রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন  এ তারকা  ব্যটার।

মার্নাস লাবুশানের সাথে ৩৫, অ্যালেক্স ক্যারিকে নিয়ে ৩০ ও ট্রাভিস হেডের সাথে ৫৮ রান যোগ করেন ওয়ার্নার। এমন অবস্থায়  ৩৫ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১৮৪ রান তুলে ম্যাচ জয়ের পথেই ছিলো অস্ট্রেলিয়া। কারন ৬ উইকেট হাতে নিয়ে তখন শেষ ১৫ ওভারে ৭৫ রানের দরকার ছিলো অসিদের। 
কিন্তু ৬৫ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারের স্বাদ পেতে  হয় অস্ট্রেলিয়াকে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৯ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে জয় বঞ্চিত হয়েছিলো অসিরা।

১৮৯ থেকে ১৯২ রানের মধ্যে হেড-গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও ওয়ার্নারের বিদায়ে বড় ক্ষতি হয় অস্ট্রেলিয়ার। হেড ২৭ ও ম্যাক্সওয়েল ১ রান করেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৯তম সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে ৯৯ রানে থামতে হয় ওয়ার্নারকে। ১২টি চারে ১১২ বল খেলেন ওয়ার্নার। 
১৯২ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর লোয়ার-অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে শেষ চেষ্টা করেন কামিন্স। অষ্টম উইকেটে ক্যামরুন গ্রিনের সাথে ৩১ ও কুনেমানকে নিয়ে ১৭ তুলেন কামিন্স। ৪৯তম ওভারের পঞ্চম বলে নবম ব্যাটার হিসেবে ব্যক্তিগত ৩৫ রানে আউট হন কামিন্স। 

শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিলো ১৯ রান। প্রথম পাঁচ বল থেকে তিনটি চারে ১৪ রান তুলে ম্যাচে উত্তেজনা তৈরি করেন কুনেমান। শেষ বলে ৫ রানের দরকার পড়ে অসিদের। কিন্তু শেষ বলে আউট হন কুনেমান। ফলে ২৫৪ রানে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। বল হাতে শ্রীলংকার চামিকা করুনারতেœ-ধনাঞ্জয়া-ভান্দারসে ২টি করে উইকেট নেন। 
আগামী ২৪ জুন একই ভেন্যুতে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। 

সূত্র: বাসস