সিরাজগঞ্জে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলছে জমজমাট বিড়ি ব্যবসা

সিরাজগঞ্জে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলছে জমজমাট বিড়ি ব্যবসা

সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পুনঃব্যবহৃত ব্যান্ডরোল ও জাল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বিড়ির ব্যবসা জমজমাটভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। সিরাজগঞ্জের অধিকাংশ হাটবাজার ও দোকানে নকল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন বিড়িতে সয়লাব হয়ে গেছে। পুনঃব্যবহৃত ব্যান্ডরোল ও জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে ১৫-২০ টি ব্রান্ডের বিড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে কম মূল্যে বাজারজাত করা হচ্ছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অসাধু বিড়ি ব্যবসায়ী ও কোম্পানি এসব অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে লুটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এসব অসাধু বিড়ি ব্যবসায়ী ও কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ধরণের পদক্ষেপ গ্রহন করছে না প্রশাসন। একদিকে সরকার বছরে বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে আর অন্যদিকে প্রকৃত রাজস্ব প্রদানকারী বিড়ি শিল্প মালিকরা চরম ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আমিনা, জয়নাল, মাষ্টার, কানু, শরিফ, ময়না, বুলু, জুই কিসমত, সাথী, মধু, সিহাব, নিউ রাজা, নাহিদ, রাজা, ফুল, ৫নং, শরিফা ও আশিক ব্রান্ডের বিড়ি পুনঃব্যবহৃত ব্যান্ডরোল ও জাল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। তারা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিড়ি বাজারজাত করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুনঃব্যবহৃত ব্যান্ডরোল ও জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে ২৫ শলাকার প্রতি প্যাকেট আমিনা বিড়ি ১২ টাকা, জয়নাল বিড়ি ১২ টাকা, মাষ্টার বিড়ি ১০ টাকা, কানু বিড়ি ১২ টাকা, শরিফ বিড়ি ১৪ টাকা, ময়না বিড়ি ১০ টাকা, বুলু বিড়ি ১২ টাকা, জুই কিসমত বিড়ি ৮ টাকা, সাথী ১০ টাকা, মধু বিড়ি ১২ টাকা, সিহাব বিড়ি ১০ টাকা, নিউ রাজা বিড়ি ১০ টাকা, নাহিদ বিড়ি ৮ টাকা, রাজা বিড়ি ১০ টাকা, ফুল বিড়ি ১০ টাকা, ৫নং বিড়ি ১০ টাকা, শরিফা বিড়ি ১০ টাকা ও আশিক বিড়ি ১০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অনুযায়ী ২৫ শলাকার প্রতি প্যাকেট বিড়ির সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৮ টাকা। এরমধ্যে রাজস্ব বাবদ (ব্যান্ডরোলের মূল্য ৮.১০ টাকা+অগ্রীম আয়কর ০.৮১ টাকা + স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ০.১৮ টাকা=৯.০৯ টাকা) সরকারকে ৯.০৯ টাকা দিতে হয়। এছাড়া বিড়ি শ্রমিকদের পারিশ্রমিক, বিড়ি তৈরির কাগজ ক্রয়, তামাক ক্রয়সহ বিভিন্ন খরচ রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক বিড়ি ব্যবসায়ী জানান, আসল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বিড়ি বিক্রি করলে তেমন লাভ হয় না। বেশির ভাগই লস হয়। তাই নকল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বেশির ভাগ লোক বাজারে বিড়ির ব্যবসা করে। তবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই কাজ করেন বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ ফজলার রহমান বলেন, সিরাজগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলার বিভিন্ন স্থানে অসাধু ব্যবসায়ী ও কোম্পানী পুনঃব্যবহৃত ব্যান্ডরোল ও জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে বিভিন্ন ব্রান্ডের বিড়ি বাজারজাত করছে। এতে সরকার বছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে আর আমরা প্রকৃত রাজস্ব প্রদানকারী বিড়ি শিল্প মালিকরা চরম ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছি। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহী বিভাগের কমিশনার, কাস্টমস্ এক্সাইজ ও ভাট কমিশনারেট বিভাগ বরাবর আমরা আবেদন করেছি।