ইবি উপাচার্যের পিএসের কক্ষে হামলা : সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মিলছে না

ইবি উপাচার্যের পিএসের কক্ষে হামলা : সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মিলছে না

ইবি উপাচার্যের পিএসের কক্ষে হামলা : সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মিলছে না

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যের কার্যালয়ে একান্ত সচিবের কক্ষে হামলার চারদিন পেরোলেও মেলেনি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন ঘটনার সময় ক্যামেরার সংযোগ বন্ধ থাকায় ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। একইসঙ্গে উপাচার্যের কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্কেও ফুটেজ রেকর্ড হয়নি বলে জানা গেছে। কে বা কারা কবে থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন এ ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। একইসঙ্গে উপাচার্যের কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ না মেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

উপাচার্যের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পিএসের কক্ষে ও উপাচার্যের কক্ষে একাধিক সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ক্যামেরাগুলো সচল ছিল বলেই জানতেন কর্মকর্তারা। হামলার ঘটনার পর সিসি ফুটেজ নিতে গেলে দেখা যায় কোনোটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং কোনোটির হার্ডডিস্কে সমস্যায় রেকর্ড হয়নি। উপাচার্যের কক্ষের ক্যামেরা সচল থাকলেও গত ৬ এপ্রিলের পর থেকে ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার পর উপাচার্যের কক্ষের ক্যামেরা সচল করা হয়েছে। তবে এখনো পিএসের কক্ষের ক্যামেরার সংযোগ এখনো বন্ধ রয়েছে।

উপাচার্যের একান্ত সচিব আইয়ুব আলী বলেন, ‘আমরা জানি সিসি ক্যামেরা সচল রয়েছে। ঘটনার পর আইসিটি সেলের এক্সপার্টকে ফুটেজ দেখতে বললে তিনি জানান, ক্যামেরার সংযোগ বন্ধ ছিল। কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে সংযোগ বন্ধ করেছে এটা বলতে পারবো না। কেউ অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই হয়তো এ কাজ করেছে।’

সহকারী প্রক্টর ড. শাহেদ আহমেদ বলেন, ‘উপাচার্য স্যারের কক্ষেও গত ৬ এপ্রিলের পর কোনো ফুটেজ নেই। ক্যামেরার রেকর্ড বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। কেউ ইচ্ছা করেও করতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সবাই দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। মূলত আইসিটি সেলই ক্যামেরার দেখভাল করে।’

আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক আহসানুল আম্বিয়া বলেন, ‘সিসি ক্যামেরাগুলো দেখভালের দায়িত্ব আমাদের হলেও স্ব স্ব অফিসই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। কোন সমস্যা হলে আমরা ঠিক করে দিই। ওই ঘটনার পর আমাদের এক্সপার্টরা গিয়ে জানতে পেরেছে পিএসের কক্ষের সিসি ক্যামেরা সংযোগ বন্ধ ছিল। এছাড়া উপাচার্যের কক্ষের ক্যামেরার হার্ডডিস্কেরও ফুটেজ রেকর্ড হয়নি। কতদিন থেকে ফুটেজ রেকর্ড হচ্ছে না এটা বলা যাচ্ছে না। আমাদেরকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি, দায়িত্ব দিলে হয়তো বের করা যাবে কতদিন থেকে রেকর্ড বা সংযোগ বন্ধ ছিল। এবং পাশর্^বর্তী অন্য দপ্তরের ক্যামেরার ফুটেজও হয়তো পাওয়া যাবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘যারা বিষয়গুলো দেখভাল করে তারা সচেতন হলে এমন হতো না। আমাদের ধারণা ছিল না এমন কিছু হবে। এখন থেকে সচেতন হতে হবে। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা একটা তদন্ত কমিটি করেছি। আইনী পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজের চেয়ে আমরা নিজেদের চোখে যে সকল আলামত দেখেছি এটা আরো বড় ডকুমেন্ট।’

হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি:

হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেনকে আহবায়ক ও কোষাধ্যক্ষ দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার জাহিদুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক শেলীনা নাসরীন, সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আসাদুজ্জামান ও সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান বিষয়টি নিশ্চত করেন।

মামলা দায়ের:

রেজিস্ট্রার দপ্তরের পক্ষ থেকে গত রবিবার মামলার সুপারিশ করা হলে এর ভিত্তিতে মামলা এজাহারভূক্ত করেছে ইবি থানা। অভিযুক্ত টিটো মিজান ও রাসেল জোয়ার্দারের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫-২০ জনের নামে দ-বিধির ১৪৩, ১৮৬, ৪৪৭, ৩৪২, ৪২৭ ও ৫০৬ ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলা নম্বর ০৬। মঙ্গলবার ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আননূর জায়েদ বিপ্লব এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের মামলার প্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি।’