দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর জাপান ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়াস

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর জাপান ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়াস

ছবি: সংগৃহীত

জাপান বর্তমান বিশ্ব বাজারে একটি অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তি। বিশ্ব অর্থনীতির সমকালীন সূচকগুলো পর্যালোচনা করলে এটি স্পষ্ট। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৯৬ সালে যখন জাপানে মাথাপিছু আয় ছিল ৩৬ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাথাপিছু আয় ছিল ২৭ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার। সে বছর বিশ্ববাণিজ্যের ১০ শতাংশ ছিল একা জাপানের। বছরটিতে ৪১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানির বিপরীতে দেশটির আমদানির পরিমাণ ছিল ৩৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সে বছর জাপানের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের পরিমাণ দুই হাজার বিলিয়ন ডলারের ওপর পৌঁছে। অথচ তার ঠিক ৫০ বছর আগে অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরে জাপানের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়, বিধ্বস্ত এবং দুর্বল, যা বর্তমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলায় জাপানি অর্থনীতি মূলত পঙ্গু হয়ে পড়ে। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরবর্তী বছরগুলোতে খাদ্যাভাব, অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতি এবং ব্যাপক চোরাকারবারি ব্যবসায় অর্থনীতি দারুণ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। জাপানিরা বহির্বিশ্বে তাদের সব দখলীয় এলাকা থেকে বিতাড়িত হয়। ফলে আট কোটি জনসংখ্যার সাথে সহসা ৬০ লাখ বিদেশফেরত জাপানি যুক্ত হয়। বোমা হামলায় কারখানাগুলো ধ্বংসস্ত‚পে পরিণত হয়। সামরিক ক্রয় ও কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাজার হঠাৎ করে সীমিত হয়ে পড়ে। মার্কিন জেনারেল ডগলাস ম্যাক আর্থারের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনীর দখলদার প্রশাসন জাপানের বহির্বাণিজ্যের ওপর বিশেষ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। ফলে বিদেশের বাজারে জাপানি সামগ্রীর চাহিদা পড়ে যায়, কাঁচামাল আমদানি বাধাগ্রস্ত হওয়ায় উৎপাদন ও সরবরাহ সক্ষমতা হ্রাস পায় এবং এর ফলে বিতরণ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট বিশাল কর্মজীবী বেকার হয়ে পড়ে।

বিপর্যস্ত ও বিব্রতকর এ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে প্রাথমিক পর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই অর্থনৈতিক সহায়তায় জাপানি জনগণ তাদের অর্থনীতি পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করে। আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান, কঠোর পরিশ্রমী ও আত্মমর্যাদা সম্পর্কে সচেতন জাপানি জনগণ শত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে সাফল্যের সন্ধান পায়। ১৯৫১ সালের মধ্যে জাপানের জিএনপি ১৯৩৪-৩৬ সালের পর্যায়ে পৌঁছে এবং ১৯৫৪ সালে রিয়াল টার্মে মাথাপিছু আয় ১৯৩৪-৩৬ সালের পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।

পরিত্যক্ত সামরিক বাহিনীর লোকবল এবং বিদেশফেরত বেসামরিক জনবল একত্রে জাপানের বিশাল কর্মীবাহিনীতে রূপান্তরিত হয়। বিশাল সামরিক ব্যয় ও যুদ্ধে যুবকদের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বন্ধ হওয়ায় শিল্প কলকারখানার জন্য বাড়তি বরাদ্দ ও প্রশিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল লোকবল পাওয়া যায়। ম্যাক আর্থার প্রশাসন বেশ কিছু সংস্কারমূলক কর্মসূচি গ্রহণের ফলে আর্থ প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। একচেটিয়া ব্যবসায় নিয়োজিত বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে দেয়ায় তাদের দখলে থাকা বিশাল ভূসম্পত্তি জনসাধারণ, বিশেষ করে চাষিদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া সম্ভব হয়।

লেবার ইউনিয়নের কর্মকাণ্ডে বিব্রতকর বাধাগুলো অপসারণ করা হয় এবং সবার চাকরির শর্তাবলি পুননির্ধারিত হয়। এর ফলে কর্মপরিবেশে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। উৎপাদনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাতীয় অর্থনীতির মুখ্য দুই খাত হিসেবে কয়লা ও ই¯পাত শিল্পকে নির্বাচন করায় এ দুই খাতে উল্লেখযোগ্য উৎপাদন নিশ্চিত হয় যা পশ্চাৎশিল্প সংযোগ হিসেবে অন্যান্য বেশির ভাগ শিল্পের টেকসই উন্নয়নে বিশেষ সহায়ক হয়। নতুন শাসনতন্ত্রে ‘যুদ্ধ নাস্তি’ ধারা সংযুক্ত হয়।

সামরিক ব্যয় সম্পূর্ণ লোপ পায়। ফলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য সামরিক বাহিনী বাবদ ব্যয়সাশ্রয় শুধু নয় জাতীয় চিন্তাচেতনার ক্ষেত্রেও একটা পরিশীলিত প্রত্যয় ও মেজাজ ফিরে আসে। যুদ্ধে ত্যক্তবিরক্ত ও সর্বস্বান্ত জাপানি জনগণ জেনারেল ম্যাক আর্থারের শাসনতান্ত্রিক সংস্কারকে স্বাগত জানায় এবং যুদ্ধে উন্মত্ত জাপানি জাতিকে বাধ্যতামূলকভাবে শিল্প কারখানা ও কৃষিতে ফিরিয়ে দেয়ায় তাদের আর্থসামাজিক জীবনব্যবস্থায় যে বিশেষ তাৎপর্যবাহী অগ্রগতি সাধিত হয় তার জন্য কৃতজ্ঞতাবোধ করে। দীর্ঘমেয়াদে দেখা যায় যুদ্ধে পরাজয় বরণে ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মিত্র বাহিনীর দখলদারিত্বে এবং বিশেষ করে জেনারেল ম্যাক আর্থারের প্রশাসনাধীনে অর্থনৈতিক ভিত পুনর্নির্মাণের সুযোগ লাভের ফলে বিশ শতকের শেষার্ধে জাপান অর্থনৈতিক পরাশক্তির পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।

যুদ্ধ শেষ হওয়ার ৯ বছর পর, ১৯৫৫ সালে জাপানি অর্থনীতি যুদ্ধ-পূর্ববর্তী অবস্থায় আসতে সক্ষম হয়। ১৯৫৬ সালে জাপান সরকার ‘অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে’ ঘোষণা দিতে সক্ষম হয় যে ‘যুদ্ধোত্তর কালের অবসান ঘটেছে, যুদ্ধ-পূর্ববর্তীকালে অর্থনীতি যেখানে ছিল আমরা এখন সেখানে।’ উল্লেখ্য, ১৯৫৬ সালে জাপানের অর্থনীতির আকার ছিল বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থানের শতকরা ১ ভাগেরও কম। সে সময় মাথাপিছু আয় ছিল ২৬৯ মার্কিন ডলার, রফতানি দুই বিলিয়ন ডলার, আমদানি ২.৫ বিলিয়ন ডলার আর বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের পরিমাণ ছিল মাত্র ০.৭ বিলিয়ন ডলার। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকে জাপানি অর্থনীতি মূলত টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিকে অগ্রসর হয়। পুরো ষাটের দশকে এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে এর মাঝে ১৯৬২ সালে একটি এবং ১৯৬৫ সালে আরেকটি অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলা করেই। পুরো ষাটের দশকে গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ১১ শতাংশের কাছাকাছি থাকে। এর তুলনায় এ দশকে জার্মানিতে গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪.৬ শতাংশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪.৩ শতাংশ। ষাটের দশকে জাপানের এ প্রবৃদ্ধি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পূর্ববর্তী ত্রিশের দশকে গড় প্রবৃদ্ধির (৪ শতাংশ) প্রায় তিনগুণ তো বটেই।

এটি সর্বজনবিদিত ও স্বীকৃত যে, পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে জাপানি অর্থনীতির অভ‚তপূর্ব সাফল্য বেসরকারি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ এবং নিত্যনতুন শিল্প উদ্যোগ গ্রহণের ফলেই সম্ভব হয়েছিল। জাপানিদের ঘরোয়া সঞ্চয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোর অধিক অর্থলগ্নিতে তথা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে পুঁজি সরবরাহে সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বিদেশী কোম্পানির লাইসেন্স নিয়ে ব্র্যান্ড আইটেম উৎপাদনে জাপানিদের গভীর মনোনিবেশের ফলে উৎপাদনে প্রকর্ষতাসহ উৎপাদিত সামগ্রীর প্রকার, পরিমাণ ও গুণগতমান বৃদ্ধি পায়, সরবরাহ বৃদ্ধি পায় এবং বহির্বিশ্বের বাজারে জাপানি সামগ্রীর নতুন চাহিদা সৃষ্টি হয় ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এ সময়ে জাপানি উৎপাদন ব্যবস্থায় আরেকটি বিশেষ সুযোগ সংযুক্ত হয় আর তা হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রশিক্ষিত শ্রমিক। এ সময় প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ ও প্রতিভাদীপ্ত শ্রমিক উৎপাদনকর্মে সংযুক্ত হতে থাকে এবং কৃষি থেকেও শ্রমিক শিল্প কারখানায় ব্যাপকভাবে স্থানান্তর হতে থাকে। এ প্রেক্ষাপটে বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে জাপানি অর্থনীতিতে অর্জিত অভূতপূর্ব সাফল্যে সে দেশের শিল্প ব্যবসা বাণিজ্যের ভূমিকাই যে ছিল মুখ্য- তা বলা বাহুল্য।

অতি সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদ, মোট ভূখণ্ডের মাত্র ত্রিশ ভাগ বাস ও চাষযোগ্য জমি এবং ভূমিকম্পপ্রবণ দ্বীপপুঞ্জের দেশ জাপানের অর্থনীতির ভিত মূলত শিল্প-ব্যবসায়-বাণিজ্যের ওপর একান্তভাবে নির্ভরশীল। প্রক্রিয়াজাত শিল্পসামগ্রী রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনই জাপানি অর্থনীতির অন্যতম অবলম্বন। বিদেশী প্রযুক্তি প্রয়োগ এবং প্রক্রিয়াজাত শিল্প উৎপাদনের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল অপরিসীম। আর এ উদ্দেশ্য অর্জনে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রয়োগপ্রক্রিয়ায় জাপানের বড় বড় ট্রেডিং হাউজগুলোর (জাপানি ভাষায় শোগো শোষা) ভূমিকাও ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শোচনীয় পরাজয়ের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতিকে পুনর্গঠন ও পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে জাপান সব কিছুর ওপর শিল্প-ব্যবসায়-বাণিজ্যে বিনিয়োগে মনোনিবেশের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের নীতি গ্রহণ করে। ১৯৪৭ সালে অর্থাৎ যুদ্ধ শেষ হওয়ার দুই বছরের মধ্যে, বৈদেশিক বাণিজ্য বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার লক্ষ্যে পদ্ধতি সংস্কারসহ নিয়ন্ত্রণমূলক নীতিমালায় আনা হয় ব্যাপক পরিবর্তন। এর দুই বছর পর, ১৯৪৯ সালে মুদ্রা বিনিময় হার ডলারপ্রতি ৩৬০ ইয়েনে বেঁধে দেয়া হয়। জাপান সরকার এ সময় বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে কয়েকটি পোষক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯৪৭ সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠিত মিনিস্ট্রি অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (মিটি), ১৯৫০ সালে এক্সপোর্ট ব্যাংক অব জাপান (যা সত্তরের দশকে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট (এক্সিম) ব্যাংক এবং হালে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-পারেশন (জেবিআইসি) হিসেবে ওভারসিজ ইকোনমিক কো-অপারেশন ফান্ডের (ওইসিএফ) সাথে একীভ‚ত হয় এবং ১৯৫৮ সালে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো)। মিটি আন্তর্জাতিক বাজারে জাপানের প্রবেশ নিশ্চিত করতে নীতি ও পদ্ধতি নিয়ে নিরন্তর গবেষণা এবং বহির্বাণিজ্য বৃদ্ধির কর্মপন্থা নির্ধারণে ও নিয়ন্ত্রণে, এক্সিম ব্যাংক আমদানি-রফতানিকারকদের পুঁজি সরবরাহসহ যাবতীয় আর্থিক লেনদেনে নিশ্চয়তা নির্ভরতার বিধান করে এবং জেট্রো জাপানি পণ্যের বিদেশে বাজার সৃষ্টিতে এবং একই সাথে বিদেশী পণ্যের (কাঁচামাল) জাপানে আমদানি বিষয়ে উৎসাহ অনুপ্রেরণা ও প্রণোদনার দায়িত্ব পালন করতে থাকে।

বিদেশে জাপানি পণ্যের বাজার প্রসারে এবং সরকারের সাথে আমদানি-রফতানি নীতি, রীতিপদ্ধতি সংস্কারসংক্রান্ত সংলাপে ও সুবিধাবলি আদায়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পণ্য ও শিল্প খাতওয়ারি আমদানি-রফতানি সমিতিগুলো গড়ে ওঠে এ সময়। সমিতিগুলো বাজার গবেষণা, তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং নিজেদের উৎপাদিত পণ্যের গুণগতমান উন্নয়নে মনোনিবেশ করে এবং বাজার অনুসন্ধান ও উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ব্যবসায়-বাণিজ্য-বিষয়ক তথ্য উপাত্ত ও সংবাদবাহী দৈনিক পত্রিকা এবং বিশেষায়িত সাময়িকীগুলোর প্রকাশনাও শুরু হয় এ সময়।

পঞ্চাশের দশকে জাপান সরকার ব্যবসায়-বাণিজ্য ক্ষেত্রে বেশ কিছু পদ্ধতি প্রবর্তন করেন যার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল রফতানি উৎসাহিতকরণ। এদের মধ্যে, ‘রফতানি আয় থেকে করযোগ্য আয় বাদ দেয়ার পদ্ধতি’, ‘রফতানি অর্থায়নের ব্যবস্থা সহজীকরণ’ ‘রফতানি বীমাপদ্ধতি’ প্রবর্তন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ব্যবসায় ও বণিক সমিতিগুলোর মতামত, পরামর্শ ও প্রস্তাবকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থার প্রধান, শিল্প গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোর নেতারা প্রতি মাসে নিজ নিজ নির্ধারিত তারিখে পৃথকভাবে সংবাদমাধ্যমগুলোর সাথে দেশের অর্থনীতি, শিল্প উৎপাদন পরিস্থিতি ও ব্যবসায়-বাণিজ্য বিনিয়োগ নীতি নিয়মাবলি ব্যাখ্যা এবং সে সবের প্রয়োগ সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা ও মতবিনিময় করতেন, এ পদ্ধতি ও কর্মসূচি এখনো বলবৎ আছে।

লেখক : ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ

 সাবেক সচিব, এনবিআরএর সাবেক চেয়ারম্যান