ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ কুবি সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে

ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ কুবি সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সহকারী প্রক্টর ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অমিত দত্ত

 কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সহকারী প্রক্টর ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক অমিত দত্তের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রনেতা এসব বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অমিত দত্ত।

জানা যায়, অমিত দত্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। সেই সুবাধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে প্রায়ই তিনি তার ক্যাম্পাস জীবনের প্রভাব বিষয়ে গল্প করে থাকেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনেকের সাথে তার সখ্যতা আছে বলে কুবি শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ প্রত্যাশী অনেককে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে লবিং করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, ‘তিনি আমাদেরকে তার ক্যাম্পাস জীবনের প্রভাব নিয়ে গল্প করেন। ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন দাবি করে গর্ব করেন। কিন্তু তিনিই আবার ছাত্রলীগের নেতাদের অশ্রাব্য ভাষায় গালি দেন। তার এরকম আচরণে আমরা বিব্রত।’ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান বিদ্যুৎ বলেন, ‘তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নেতাকে রাজনীতি শিখিয়েছেন বলে দাবি করেন। তবে একজন শিক্ষকের পরিচয় হওয়া উচিৎ তিনি শুধুই শিক্ষক, ক্যাম্পাস জীবনের ইতিহাস টেনে তিনি যে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তা নিন্দনীয়।’

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, মাস কয়েক আগে যখন নতুন কমিটি দেওয়ার তোড়জোড় চলছিল, তখন তিনি আমাকে লেখক ভট্টাচার্যের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন বলে আশা দিয়েছিলেন। তবে তিনি কখনোই আমাকে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেননি। এসব বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, ‘তিনি সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে বিতর্ক শিখিয়েছেন বলে বেড়ান।

এতে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। এধরনের অপপ্রচার পুরোপুরি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একজন শিক্ষকের কাজ কখনো ছাত্রজীবনের রাজনীতিকে প্রদর্শন করে প্রভাব বিস্তার করা হতে পারে না।’ এসব বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এর ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। নাম বলে বেড়ান, ঢাবির এমন আরেক প্রভাবশালী নেতাকে ফোন দিলে সংবাদে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জন্য খুবই বিব্রতকর। তিনি কলেজ জীবনেই রাজনীতি ও বিতর্ক শিখেছেন।

ওই শিক্ষক তাকে কীভাবে নতুন করে তা শিখিয়েছেন, তা তাঁর বোধগম্য নয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইনান বলেন, ‘ছাত্রলীগের সাবেক কোনো নেতাকর্মী বর্তমান ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে চলবে এই বিষয়টি খুবই আপত্তিকর। একজন শিক্ষকের কাজ হবে নৈতিক, মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন জাতি গড়ে তোলা। তিনি ক্যাম্পাস জীবনে কী করেছেন, তা দিয়ে বর্তমান কর্মজীবনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করা শিক্ষকতার মতো মহৎ কর্মের পরিপন্থি। এ দায় ছাত্রলীগ নেবে না।’ তবে সবক’টি অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক অমিত দত্ত বলেন, ‘আমি কখনো এরকম কিছু করিনি। এ বিষয়ে আমি আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’