সাভারে ছাত্র-জনতা হত্যার ৮ মামলায় জাকির গ্রেফতার

সাভারে ছাত্র-জনতা হত্যার ৮ মামলায় জাকির গ্রেফতার

প্রতীকী ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাভারে ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনায় দায়ের আট মামলার আসামি জাকির হোসেন ওরফে ভাগ্নে জাকির ওরফে ট্যাপা জাকিরকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রবিবার ভোর রাতে তাকে সাভার মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।  

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া ট্যাপা জাকির সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীবের কথিত ভাগ্নে বলে জানা গেছে। 

তিনি রাজীবের সব অবৈধ ব্যবসা দেখাশোনা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।  

পুলিশ জানায়, সাভারে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে অনেক ছাত্র-জনতা হতাহত হয়। পরে ভুক্তভোগী পরিবার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এমন আটটি হত্যা মামলার আসামি জাকির। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর জাকির হোসেনসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দেন। 

সাভার মডেল থানায় ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহম্মেদ মুঈদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গ্রেফতার ট্যাপা জাকিরকে শনিবার রাতে সাভার মডেল থানায় হস্তান্তর করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া  ছাত্র-জনতা হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রবিবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে ১০ দিনে রিমান্ডের আবেদনও করা হয়েছে।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সাভারে রেডিও কলোনী ব্যাংক টাউন এলাকা থেকে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছিল। সেদিন মনজুল আলম রাজীবে নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ঠিক একদিন আগে গত ৪ আগস্ট সাভার বাসস্ট্যান্ডে অদূরে মডেল মসজিদের এলাকার এ রকম আরেকটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেদিন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছোড়া হয়েছিল। 

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মনজুল আলম রাজীবের ব্যাক্তিগত সহকারী রাজু আহম্মেদ এবং শ্যালক মাজাহারুল ইসলাম রুবেল, আতিকুল ইসলাম আতিক, সাবেক চেয়ারম্যান সুজন, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান শাহিন,সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে এগিয়ে যাচ্ছেন। গত জুলাই ও আগস্টের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকার সাভারে ও আশুলিয়ার যেসব এলাকা উত্তাল হয়ে উঠেছিল, এর মধ্যে বাইপাইল অন্যতম। এর মধ্যে জুলাই এবং ৪ আগস্ট সাভার বাসস্ট্যান্ড থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল পর্যন্ত সড়কে অবস্থানকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করা হয়েছিল। আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে সাভারে এলাকায় দলবল নিয়ে সক্রিয় ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রাজীব এবং সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম। গত ৫ আগস্ট দুপুরের পর তারা আত্মগোপনে চলে যান। এখন পর্যন্ত তাদের কাউকেই গ্রেফতার করা যায়নি।