শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করার প্রত্যয় ইবি শিবির সভাপতির
ছবি: প্রতিনিধি
ইবি প্রতিনিধি: এবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারির পরিচয় প্রকাশ্যে এসেছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সংগঠনটির ঐতিহাসিক পল্টন ট্র্যাজেডি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মধ্য দিয়ে তারা প্রকাশ্যে আসেন।
সংগঠনটির সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এইচ এম আবু মুসা। অন্যদিকে সেক্রেটারি ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান।
প্রকাশ্যে আসার পর মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে ক্যাম্পাসের বটতলায় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে সংগঠনটি। এসময় সংগঠনটির সভাপতি এইচ এম আবু মুসা শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তুলে বিশ^বিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকীকরণের দিকে এগিয়ে নিতে দল-মত ভুলে সবাইকে একটি প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দাবি-দাওয়া আদায়ে দল-মত ভুলে সকল সাধারণ শিক্ষার্থীকে একটি জায়গায় এসে দাঁড়াতে হবে। আন্তর্জাতিকীকরণে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষাখাতে উন্নয়নের জন্য উপাচার্য যে চিন্তাগুলো করছেন, আমরা সবাই মিলে যদি সহযোগিতা করি তাহলে প্রশাসন সেই কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে পারবে। সবাইকে একসাথে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার আহবান জানাচ্ছি।’
এছাড়া ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে সভাপতি বলেন, ‘বিগত সময়ে শিক্ষার্থীরা দেশে ছাত্র-রাজনীতির যে রূপ দেখেছে তা মূলত ছাত্র-রাজনীতি নয়। ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, হল থেকে নামিয়ে দেওয়া ও শিবিরসহ বিরোধীমত দমনে হামলা করেছে, মামলা দিয়েছে। বিগত ১৬ বছর শিক্ষার্থীরা এসবই দেখছে, আর এগুলোকেই ছাত্র-রাজনীতি ভাবছে। এগুলো ছাত্র-রাজনীতির কার্যক্রমের অংশ হতে পারে না। আমরা স্পষ্ট করছি, ছাত্রশিবির কোনো লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন নয়। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনোভাবের সঙ্গে ছাত্রশিবির সম্পূর্ণ একমত। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যা চায় একটি দায়িত্বশীল ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরাও তাই চাই।
তিনি আরও বলেন, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বলতে মূলত বোঝায়, কোনো ছাত্রসংগঠনকে উপর থেকে কোনো একটা পক্ষ নিয়ন্ত্রণ করা। সেদিক থেকে ছাত্রশিবির একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। আমাদের প্রত্যেকটা কার্যক্রম গঠনতন্ত্রের আলোকে পরিচালিত হয়। শিবিবের নেতা নির্বাচন হয় সংগঠনের সদস্যের প্রত্যক্ষ ভোটে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ জামায়ামেত ইসলামীর সাথে শিবিরের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, জামায়াতের সাথে সাংবিধানিকভাবে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ছাত্রশিবির একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। তবে আদর্শগত দিক থেকে তাদের সাথে আমাদের মিল রয়েছে।
এছাড়াও ক্যাম্পাসে ভিন্ন মতের সংস্কৃতি চর্চার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে সভাপতি আবু মুসা বলেন, ছাত্রশিবির সুষ্ঠু সংস্কৃতি চর্চায় বিশ^াস করে। সেক্ষেত্রে ক্যাম্পাসে যেকোনো মতের সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের নিজস্ব মত অনুযায়ী সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে পারবে। এখানে ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমাদের বাঁধা দেওয়ার কিছু নেই। এটা তাদের মৌলিক অধিকার।