স্পেনে ভয়াবহ বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৯৫ জন

স্পেনে ভয়াবহ বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৯৫ জন

সংগৃহীত

স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতে গত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) মুষলধারে বৃষ্টির ফলে আকস্মিক বন্যা দেয়। এতে সেতু এবং ভবনগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে বেঁচে থাকতে মানুষ বাড়ির ছাদ কিংবা গাছে উঠতে বাধ্য হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। এখনো ‘অনেক নিখোঁজ মানুষ’ থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বুধবার জাতীয় ভাষণে নাগরিকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পুরো স্পেন আপনাদের সাথে কাঁদছে। আমরা আপনাদের ত্যাগ করব না।

ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশে অন্তত ৯২ জন ও এর আশপাশে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এবারের বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বেশি। ওই বছর দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় কমপক্ষে ১৫০ জন মারা যান।

জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা এইএমইটির মতে, ভ্যালেন্সিয়ার নিকটবর্তী শহরগুলোর একটি চিভায় মঙ্গলবার মাত্র আট ঘণ্টার মধ্যে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। এই সময় ৪৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে, যা এক বছরের বৃষ্টিপাতের সমান।

স্প্যানিশ সেনাবাহিনী এবং জরুরি সেবার সদস্যরা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। আকস্মিক জলোচ্ছ্বাসে রাস্তা নদীতে পরিণত হয়েছ।

এদিকে, ভ্যালেন্সিয়ার পাশের শহর হর্নো দে আলসেডোর মেয়র জানিয়েছেন, কীভাবে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে পানির স্তর এক মিটারের বেশি বেড়েছে। তিনি বলেন, স্রোত খুব দ্রুত এসেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যেম পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বন্যার পানি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে, সেতু ভেঙে পড়ছে এবং রাস্তায় গাড়ি টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একটি ভিডিওতে মানুষকে ভেসে যাওয়া থেকে বাঁচতে গাছে আঁকড়ে থাকতে দেখা গেছে।

বিবিসি বলছে, রেডিও এবং টিভি স্টেশনগুলো বন্যাকবলিত এলাকায় আটকে পড়া লোকেদের কাছ থেকে সাহায্যের জন্য বা প্রিয়জনদের সন্ধান করার জন্য শত শত কল পেয়েছে বলে জানা গেছে। জরুরি পরিষেবাগুলো অনেক এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না।

স্থানীয় কর্মকর্তা মিলাগ্রোস টোলন স্প্যানিশ পাবলিক টেলিভিশন স্টেশন টিভিইকে জানিয়েছেন, জরুরি পরিষেবা কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নিখোঁজদের সন্ধানের জন্য ড্রোন ব্যবহার করছেন। এই লোকদের খুঁজে বের করাটাই এখন অগ্রাধিকারে আছে।

স্পেনের রাষ্ট্রীয় আবহাওয়া সংস্থা এইএমইটি ভ্যালেন্সিয়া অঞ্চলে একটি লাল সতর্কতা এবং আন্দালুসিয়ার কিছু অংশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা ঘোষণা করেছে।

এদিকে, বন্যার কারণে ভ্যালেন্সিয়ায় বেশ কয়েকটি ফ্লাইটসহ পরিবহন সেবা বিঘ্নিত হয়েছে। সমস্ত ট্রেন পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। সমস্ত স্কুল এবং ক্রীড়া ইভেন্ট স্থগিত করা হয়েছে এবং পার্কগুলো বন্ধ থাকবে।