ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রতিষ্ঠা ছাড়া কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়:মুফতি মোহাম্মদ রেজাউল করিম
ছবি : প্রতিনিধি
টিআই তারেক: শনিবার (২ নভেম্বর ২০২৪) বিকালে যশোর শহরের মুন্সি মেহেরুল্লাহ ময়দানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ,যশোর জেলা শাখার সভাপতি মিয়া মুহাম্মদ আব্দুল হালিম এর সভাপতিত্বে "ছাত্র জনতার গণ বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ঘোষণা ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তন এবং কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, "জুলুম নির্যাতন অত্যাচারে অতিষ্ঠ জনগণ বিগত দিনের দখলদার, চাঁদাবাজ গুম খুনের সরকার চায় না"। তিনি আরও বলেন, “শুধু নেতার পরিবর্তন করলে হবে না সাথে নীতির সংষ্কার করতে হবে। দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশ থেকে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও লুটপাট বন্ধ করতে হবে। ইসলামের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সকল ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। সকল ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে চোখ কান খোলা রেখে আগামী নির্বাচনে হাতপাখাকে বিজয়ী করতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত ১৬ বছরে শাহাদাৎ বরণকারী নেতাকর্মী ও সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শাহাদাৎ বরণকারী মেধাবী ছাত্র ছাত্রী, নিস্পাপ শিশু, সাংবাদিক, সাধারণ জনতা, দলীয় নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সহ নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয় ও আহতদের সুস্থতা কামনা করা হয়। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপদেষ্টা অধ্যক্ষ নাজমুল হুদা, সিনিয়র সহ—সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল আলম খোকা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা.আবু নসর, সহ—সভাপতি মাওলানা আব্দুল হালিম, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সরদার, জেলা সদস্য মাওলানা গোলাম আজম খান, সংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ আব্দুর রশিদ, প্রচার—দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক ও ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক গাজী সহিদুল ইসলাম, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ফজলুল করিম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক বিল্লাহ, বাবলুজ্জামান, সদর থানা সভাপতি মোঃ আখতারুজ্জামান, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম জেলা সভাপতি মাস্টার মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, চৌগাছা থানা সভাপতি আনিচুর রহমান, বাঘারপাড়া থানার সভাপতি বেলাল হুসাইন, ঝিকরগাছা থানার সভাপতি আব্দুল কাদের, শার্শা থানার সভাপতি মাওলানা কামাল সহ প্রমুখ।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, "ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও তার দোসররা অর্জিত বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এখনো নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের সকল নেতাকর্মীদেরকে এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় কাজ করতে হবে"। সমাবেশে জুলাইয়ে হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং গত ১৬ বছরে সংঘটিত রাজনৈতিক, প্রশাসনিক হত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার, দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমার দাবি জানানো হয়। বিশেষ অতিথি খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হোসেন বলেন, "গতানুগতিক নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিল করে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পি আর) পদ্ধতি একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এটি চালু করলে জনগণের ভোটের ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ হবে এবং প্রত্যেক রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী তাদের প্রাপ্ত ভোটের শতাংশ অনুযায়ী আসন পাবে, যা জনগণের ইচ্ছাকে আরও সঠিকভাবে প্রতিফলিত করবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মানুষের জান মাল লুটপাট করবে না বরং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে"। বিগত ৫৩ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।