দেড় মাস পর আজ খুলছে সাজেকের দুয়ার

দেড় মাস পর আজ খুলছে সাজেকের দুয়ার

ফাইল ছবি

দেড় মাস পর পর্যটকদের জন্য আজ থেকে খুলছে দেশের বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্পট সাজেক ভ্যালি।

গত ২০ সেপ্টেম্বর শেষবারের মতো পর্যটকরা সাজেক প্রবেশের পর পাহাড়ের সংঘাত এবং নিরাপত্তার জন্য পর্যটক ভ্রমণে প্রশাসনের নিরুৎসাহিত করণের ফলে আর পর্যটকরা সাজেকমুখি হতে পারেন নি। এদিকে রাঙামাটি জেলায় গত ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ বিধি-নিষেধ তুলে নিলেও সাজেকের অবস্থানগত কারণে খাগড়াছড়ি জেলার সড়ক ব্যবহার করে এই স্পটে যাতায়াতের ফলে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) থেকে পর্যটকরা সাজেক যেতে পারবেন। কারণ এদিনই খুলে দেয়া হচ্ছে খাগড়াছড়ির বিনোদন কেন্দ্রগুলো।

এদিকে গত দেড় মাস ধরে সাজেকে পর্যটক ভ্রমণ করতে না পারায় ৮-৯ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সাজেক পর্যটক সংশ্লিষ্টরা জানান, সাজেকে ১১৬টি হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে। এছাড়ার ১৪টির বেশি রেস্তোরাঁ থাকলেও গত দেড় মাস ছিল না কোনো বিক্রি।

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ বলেন, ‘অবশেষে সাজেকে পর্যটক ভ্রমণের বিধি-নিষেধ খুলতে যাচ্ছে। তবে মনে হচ্ছে না আপাতত ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো। কারণ সামনে বার্ষিক পরীক্ষা তাই অভিভাবকরা এসময় ঘুরতে বের হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাজেকে মৌসুম শুরু হয় জুলাই থেকে, কারণ এখানে বর্ষার সৌন্দর্য এবং শীতের সৌন্দর্য আলাদা নজর কাটে পর্যটকদের। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর আমাদের কোনও ব্যবসা হয়নি। তারপরও আমরা আশাবাদী পর্যটকরা আসলে সব কিছু ঠিক হয়ে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেড় মাসে আমাদের প্রায় ৮-৯ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। হয়তো বা আরও বেশিও হতে পারে। খরচ কমানোর জন্য ব্যবসায়ীরা অনেক স্টাফকে ছুটি দিয়েছেন। আমার রিসোর্টে ছয়জন স্টাফ ছিল, তাদের মধ্যে চারজনকে ছুটিতে পাঠিয়েছি। দুইজন রয়েছে আপাতত। এভাবে সবাই বেশিরভাগ স্টাফ ছুটিতে পাঠিয়েছে।’

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন বলেন, ‘শুধু লোকসান রিসোর্ট-কটেজ কিংবা রেস্টুরেন্ট মালিকদের হয়নি। পর্যটকদের বহনে জিপ চালক, হেলপারদের অলস সময় কাটাতে হয়েছে। সাজেকে স্থানীয় পাহাড়িরা তাদের বাগানে উৎপাদিত ফলমূল, বাঁশকোড়লসহ হাতে বানানো অনেককিছুই বিক্রি করে, তাদের আয়ও বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক ফলমূল পচে গিয়েছে। তারপরও বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ায় স্বস্তি এখানকার সকলের।’

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, গত ১ নভেম্বর থেকে রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে যে বিধি-নিষেধ ছিল, তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সাজেক রাঙামাটি জেলায় হলেও এর অবস্থানগত কারণে এটি খাগড়াছড়ি জেলার ওপর দিয়ে যেতে হয়, যেহেতু খাগড়াছড়িতে ৫ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য বিধি-নিষেধ খুলে দেওয়া হচ্ছে, তাই ৫ নভেম্বর থেকে পর্যটকরা সাজেকে ভ্রমণ করতে পারবেন। আর নিরাপত্তা নিয়ে কোনও শঙ্কা নেই বলে তিনি জানান।