কোনাবাড়ী এ বি এম ফ্যাশন কারখানার ১১৮ শ্রমিক ছাঁটাই
ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুরের কোনাবাড়ী আমবাগ এলাকায় অবস্থিত এ বি এম ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের ছাঁটাই সংক্রান্ত একটি নোটিশ কারখানার মূল ফটকের সামনে টানানো হয়েছে। এই তালিকায় ১১৮ জন শ্রমিকের ছবি, নাম, এবং পরিচিতি নম্বর উল্লেখ রয়েছে। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে শ্রমিকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কারখানার প্রধান ফটকের সামনে একটি নোটিশ সাঁটিয়ে বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, শ্রমিকদের অযৌক্তিক দাবি এবং ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে কারখানার কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কর্মপরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছিল শ্রমিকদের নিয়ম-বহির্ভূত দাবির কারণে, যার কারণে আমরা শ্রম আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছি।
তবে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তাদের দাবি ছিল ন্যায্য এবং তারা শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার্থেই আন্দোলন করছিলেন।
একজন শ্রমিক বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন বৃদ্ধি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, এবং অন্যান্য সুবিধার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম। আমাদের জন্য আজ কাজ নেই, কিন্তু পরিবারের দায়িত্ব কে নেবে।
স্থানীয় শ্রম অধিকার কর্মীরা মনে করেন, এ ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে শ্রমিকদের পরিবার চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে পারে।
একজন শ্রম অধিকার কর্মী জানান, শ্রমিকদের আন্দোলনকে কারখানা কর্তৃপক্ষ হয়তো ন্যায়সঙ্গতভাবে বিবেচনা করেনি, তবে এ ধরনের ছাঁটাইয়ের পরোক্ষ প্রভাব শিল্প খাতের ওপর পড়তে পারে।
তিনি আরো বলেন, এ পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি এড়াতে শ্রমিক-কর্তৃপক্ষ উভয়ের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে সমস্যা সমাধান করা উচিত।
স্থানীয় শ্রম অধিকার সংগঠনের নেতারা আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্থানীয় শ্রম অধিকার সংগঠনগুলো এ ছাঁটাইয়ের বিষয়ে দ্রুত তদন্ত এবং শ্রমিকদের সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। তারা শ্রমিকদের জন্য যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক উদ্যোগ প্রত্যাশা করছে।
এ বি এম ফ্যাশন লিমিটেডের সিদ্ধান্ত কী শ্রমিকদের স্বার্থে শোষণ নাকি প্রতিষ্ঠানের ন্যায্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই প্রশ্নে এখন স্থানীয় বাসিন্দা এবং শ্রমিক অধিকার সংগঠনের মধ্যে তীব্র আলোচনা চলছে।