গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা থেকে সরে এলো কাতার
ফাইল ছবি
হামাস ও ইসরায়েল ‘আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আন্তরিক ইচ্ছা না দেখানো’ পর্যন্ত গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতা আর করবে না কাতার।
দেশটির এক কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে শনিবার (৯ নভেম্বর) এ কথা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, কাতার একইসঙ্গে ইসরায়েল ও হামাসকে জানিয়ে দিয়েছে, যে পর্যন্ত না তারা আগ্রহ নিয়ে একটি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে রাজি হবে, তারা (দোহা) মধ্যস্থতা আর চালিয়ে যেতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের পাশাপাশি কাতারও গাজায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করার জন্য চলমান আলোচনায় বড় ধরনের ভূমিকা পালন করছিল। অক্টোবরের মাঝামাঝি শুরু হওয়া এ আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে, হামাস স্বল্প মেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কাতার ইতোমধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত ‘ইসরায়েল ও হামাসের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকেও জানিয়ে দিয়েছে’।
তিনি আরও বলেন, কাতার মার্কিন প্রশাসনকে জানিয়েছে, যখন হামাস ও ইসরায়েল আন্তরিক ইচ্ছার সঙ্গে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসতে চাইবে তখন তারও মধ্যস্থতায় ফের যুক্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাতারের কাছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে আর নিরাপদ আশ্রয় না দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
ঊর্ধ্বতন কূটনৈতিক সূত্রগুলো গণমাধ্যম আল আরাবিয়াকে নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ১০ দিন আগে দোহা হামাসকে দেশটি ছেড়ে যেতে বলেছে কারণ তারা গাজায় কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি করতে অস্বীকার করেছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, হামাসকে কাতার যে অনুরোধ জানিয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের দাবি বা অনুরোধের কারণে নয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা শুক্রবার রয়টার্সকে জানান, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রস্তাবগুলো বারবার প্রত্যাখ্যান করার পর হামাসের নেতাদের যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অংশীদার (দেশের) রাজধানীতে আর স্বাগত জানানো উচিত নয়। কয়েক সপ্তাহ আগে হামাস আরেকটি জিম্মি মুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর আমরা এটি কাতারকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছি।
শুক্রবার একদল রিপাবলিকান সিনেটর বাইডেন প্রশাসনকে দোহায় বসবাস করা হামাস কর্মকর্তাদের সম্পদ জব্দ করার জন্য এবং হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা খালেদ মেশাল ও খলিল আল হায়াকে প্রত্যর্পণ করার জন্য কাতারকে চাপ দিতে বলেছে। পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ হামাস নেতাদের আতিথেয়তা দেওয়াও বন্ধ করতে বলেছে।
ওই সিনেটররা লিখেছেন, হামাসের পরাজয় এখন সময়ের ব্যাপার। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাতারের একটি চুক্তির অংশ হিসেবে দেশটি হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় দিয়েছিল।
হামাস গাজা থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে উচ্ছেদ করার পর গোষ্ঠীটির সঙ্গে যোগাযোগের একটি পথ খোলা রাখার জন্য এর রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় দিতে দোহাকে অনুরোধ করেছিল ওয়াশিংটন।