যার যার সঙ্গে ঈর্ষা করা জায়েজ
ছবিঃ সংগৃহিত।
ঈর্ষা একটি ভয়াবহ আত্মিক যন্ত্রণার নাম। এটির প্রতিক্রিয়া প্রায় হিংসার মতোই। এতেও রয়েছে অতৃপ্তির তিক্ততা; অন্যের ভালো কিছু নিজের জন্য কামনা বা আরও ভালো কিছুর আকাঙ্খায় চাপা কষ্ট। অন্যের সফলতায় নিজেকে ছোট মনে হওয়া এবং নিজের মধ্যে অন্যের আকর্ষণীয় গুণাবলী প্রত্যাশা করা ঈর্ষাপরায়ণ লোকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
ইসলামে ঈর্ষা নিন্দনীয়। তবে, কিছু ব্যক্তির সঙ্গে ঈর্ষা করা জায়েজ। তারা কারা? তারা হলেন- ১. কোরআনের শিক্ষায় শিক্ষিত ও তেলাওয়াতকারী। ২. যে ধনী সত্য ও ন্যায়ের পথে খরচ করে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, দুই ব্যক্তি ছাড়া অন্যকারো সঙ্গে ঈর্ষা করা যায় না। এক, যাকে আল্লাহ তাআলা কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন এবং সে তা দিনরাত তেলাওয়াত করে। আর তা শুনে তার প্রতিবেশীরা তাকে বলে, হায়! আমাদের যদি এমন জ্ঞান দেওয়া হতো, যেমন অমুককে দেওয়া হয়েছে, তাহলে আমিও তার মতো আমল করতাম।
দুই. যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন এবং সে সম্পদ সত্য ও ন্যায়ের পথে খরচ করে। এ অবস্থা দেখে অন্য এক ব্যক্তি বলে, হায়! আমাকে যদি অমুক ব্যক্তির মতো সম্পদ দেওয়া হতো, তাহলে সে যেমন ব্যয় করছে, আমিও তেমন ব্যয় করতাম।’ (বুখারি: ৫০২৬)
উল্লেখিত দুই ব্যক্তির মতো হতে পারা অনেক সৌভাগ্যের বিষয়। কারণ, কোরআনের শিক্ষা লাভ করা আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত। এদের মর্যাদা আলাদা এবং তারা আল্লাহর পরিজন। (সুরা আনকাবুত: ৪৯; ইবনে মাজাহ: ২১৫)
আর আল্লাহর রাস্তায় তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় করা অনেক বড় ইবাদত। এর ফজিলত সীমাহীন। কোরআনের অনেক আয়াত ও অসংখ্য হাদিসে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এমনকি মুমিনের জান ও মাল জান্নাতের বিনিময়ে আল্লাহ কিনে নিয়েছেন। (সুরা তাওবা: ১১১) আরেক আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নিয়মিত সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদের যা দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তারা এমন একটি বাণিজ্যের আশা করে যা কখনই ব্যর্থ হবে না।’ (সুরা ফাতির: ২৯)