এএসপি আনিসুলের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ১০

রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনার পর তার মৃত্যুকে ‘হত্যা’ বলছে পুলিশ। এ মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আনিসুল করিম শিপনের বাবা বাদী হয়ে আদবর থানায়  ১৫ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ইতোমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-আরিফ মাহমুদ জয়, রেদোয়ান সাব্বির, মাসুদ, জোবায়ের হোসেন, তানভীর হাসান, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ ও সাইফুল ইসলাম।

মঙ্গলবার তেজগাঁও পুলিশের ডিসি হারুন-অর রশীদ এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। এই ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ, ব্যবস্থাপনার জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ডিসি হারুন আর রশিদ আরও বলেন, মাইন্ড এইড হাসপাতালের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। অবৈধভাবে তারা মানসিক রোগীর চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করে আসছে। 

উল্লেখ্য, মানসিক অসুস্থতার কারণে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিমকে স্বজনেরা রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে নিয়ে যান। আর সেখানে কর্মচারীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে সেখান থেকে পাওয়া সিসি টিভি ফুটেজ থেকে দেখা যায় যে, সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে টানাহেঁচড়া করে হাসপাতালটির একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। এ সময় হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে তাঁকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। তখন নীল পোশাক পরা আরো দুজন কর্মচারী তাঁর পা চেপে ধরেন। আর মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারীকে হাতের কনুই দিয়ে তাঁকে আঘাত করতে দেখা যায়। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁধা ছিল। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর চার মিনিট পর আনিসুলকে যখন উপুড় করা হয় তখনই তাঁর শরীর নিস্তেজ ছিল। একজন কর্মচারী তখন তাঁর মুখে পানি ছিটালেও আনিসুল নড়াচড়া করছিলেন না। তখন কর্মচারীরা কক্ষের মেঝে পরিষ্কার করেন। সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রন পরা এক নারী কক্ষটিতে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষটির দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তাঁর বুকে পাম্প করেন সাদা অ্যাপ্রন পরা ওই নারী।

৩১তম বিসিএসের পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম সর্বশেষ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তার স্ত্রী শারমিন সুলতানাও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই দম্পতির চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে।