লাগাতার ব্যক্তিগত আক্রমণে ফেসবুক ছাড়লেন সৌমিত্র কন্যা

লাগাতার ব্যক্তিগত আক্রমণে ফেসবুক ছাড়লেন সৌমিত্র কন্যা

ছবি:সংগৃহীত

শুধু বাবাকে নয়, তিনি হারিয়েছেন নিজের সহযোদ্ধাকে, কমরেডকে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর কান্নাভেজা গলায় একথাই বলতে শোনা গিয়েছিল কন্যা পৌলমী বসুকে। তবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার একটা অংশের নিশানায় প্রয়াত অভিনেতার পরিবার, মূলত তাঁর কন্যা। ফেসবুকে একের পর এক কুরুচিকর এবং বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট দেখে ক্ষুদ্ধ পৌলমী সোশ্যাল মিডিয়াতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মঙ্গলবার রাতে। এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাও নেন তিনি। লালবাজার সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জমা দেন সৌমিত্র কন্যা। তবে তাতেও লাভ হয়নি। তাই বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন পৌলমী।

বেশ কিছু ফেসবুক পোস্টে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সম্পর্ক মজবুত ছিল না, গোটা পরিবার ৮৫ বছরের অভিনেতার উপর কতখানি আর্থিকভাবে নির্ভরশীল ছিল, কেন করোনা পরিস্থিতিতে সৌমিত্রবাবুকে বাইরে কাজ করা থেকে আটকায়নি মেয়ে- এই সব নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরা হয় ওই বিতর্কিত পোস্টগুলিতে। করোনা পরিস্থিতিতে যে মেয়ে ৮৫ বছর বয়সী বাবাকে কাজ করা থেকে আটকায়নি, সে বাবার মৃত্যুর পর করোনার কারণ দেখিয়ে কেন বাড়ি যেতে নিষেধ করছে সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।

এই বিতর্কের সপাট জবাব দিয়ে পৌলমী ফেসবুকের দেওয়ালেই লিখেছিলেন- ‘ননসেন্স এবং অর্ধ-সত্য…. কবে থামবে এই নোংরামো..সেলেব্রিটির পরিবার বলে যা ইচ্ছে তাই বলবে… সোশ্যাল মিডিয়া বলে যা খুশি তাই লিখবে’। এরপর লালবাজার সাইবার ক্রাইমেও অভিযোগ জানান তিনি। কিন্তু তাতেও আক্রমণের শাণ কমেনি। এরপর নাম না করে পরোক্ষভাবে গোটা বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় চাউর করা হতে থাকে। এতেই ক্ষুদ্ধ,বীতশ্রদ্ধ পৌলমী নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ডিলিট অথবা ডি-অ্যাক্টিভেট করে দিয়েছেন। লাগাতার ৪০ দিন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর অবশেষে পরাজিত হন বাংলা ছবির ‘অপরাজিত’ তারকা। গত রবিবার কলকাতার বেলেভিউ হাসপাতালে দুপুর ১২.১৫ নাগাদ মাল্টি অর্গ্যান ফেলিউরের কারণে মৃত্যু হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। গত ৫ অক্টোবর করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেতা। পরেরদিন তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনামুক্ত হলেও কোভিড সংক্রান্ত সমস্যার ধকল সইতে পারেনি তাঁর ৮৫ বছরের শরীর।

উল্লেখ্য মঙ্গলবার প্রয়াত বাবার শ্রাদ্ধ-শান্তির অনুষ্ঠান করেন পৌলমী। দক্ষিণ কলকাতার এক মঠে হয়েছে এদিনের এই ধার্মিক আনুষ্ঠান। এই সম্পর্কে পৌলমী বসু জানিয়েছেন- ‘এই জায়াগাটা বেশ সবুজে পরিপূর্ণ। এখানে বাবার কাজ করে মনে একটা শান্তি লাগছে। আমার বাবার যদিও এই ধরণের ক্রিয়াকলাপে খুব একটা বিশ্বাস ছিল না। পারলৌকিক আচারের আনুষ্ঠানিকতাতে কোনও ভক্তি ছিল না, তবুও যেহেতু মা মানেন- তাই কাজ করতে হত তাই এমন একটা জায়গা বাছলাম যেটা ওঁনার পছন্দ হবে। এটা লম্বা টানাপোড়েনর পর আমিও একটু শান্তি অনুভব করছি’।
 সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস