বার বার নৌকায় ভোট দেয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই : প্রধানমন্ত্রী

বার বার নৌকায় ভোট দেয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই : প্রধানমন্ত্রী

ছবি : প্রতিনিধি

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাবনা স্বাধীনতা চত্বর উদ্বোধনকালে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তরিকভাবে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের মানুষকে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রমুক্ত উন্নত জীবন দিবেন। যার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন।  দেশের মানুষ বার বার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জনগণকে সেবা করা সুযোগ দেয়ায় দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।  তিনি বলেন, ২০০৯ এ যখন আমরা সরকার গঠন করি তার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকারে আছি বলেই আমরা দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারছি। দেশের দারিদ্রসীমা যেমন আমরা কমিয়ে এনেছি; অর্থনৈতিকভাবে মাথাপিছু আয়ও আমরা বৃদ্ধি করতে স্বক্ষম হয়েছি।  দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ এবং মানুষের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ হয়েছে। অর্থনীতির চাকাটা যেন সচল থাকে সেবিষয়ে নজর দিয়েই কিন্তু আমরা পরিকল্পনা করেছি।

রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই পাবনার ঐতিহাসিক স্বাধীনতা চত্বরের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ঐতিহাসিক টাউন হল বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল ‘স্বাধীনতা চত্বরের’ উদ্বোধন উপলক্ষে আধুনিকায়ন ও দৃষ্টি নন্দন করে সাজিয়ে তোলা হয়। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ সকল আন্দোলন সংগ্রাম ও জেলার সাংস্কৃতিক প্রাণ কেন্দ্র এই ‘স্বাধীনতা চত্বর’ পৌর টাউন হল ময়দান।

একই সময়ে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় মধুমতি নদীর উপর শেখ হাসিনা সেতু, নারায়ণগঞ্জ রুপগঞ্জ উপজেলায় শিতলক্ষা নদীর উপর বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগির গাজী বীর প্রতিক সেতু, যশোর অভয়নগর উপজেলায় ভৈরব নদীর উপর সেতু শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

পাবনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রধান মন্ত্রী বলেন, পাবনায় বহু ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব এসেছেন। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একাধিকবার পাবনায় এসেছেন। অনেকবার পাবনায় মিটিং করেছেন এবং ৬ দফা ঘোষণার পরে পাবনায় মিটিং করার পর তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তিনি বলেন, রফিকুল ইসলাম বকুল তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র জীবন থেকে খুবই স্বক্রিয় ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তাকে বকুল মামা বলে ডাকতাম।  দুঃসময়ে রফিকুল ইসলাম বকুল আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

প্রধান মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদের যে সংবিধান দিয়েছিলেন সেই সংবিধানেই এদেশের মানুষের উন্নয়নের কথা, মৌলিক চাহিদা পূরণের কথা উল্লেখ রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর বক্তবেই স্পষ্ট দিক নির্দেশনা রয়েছে কিভাবে এদেশের উন্নতি হতে পারে। আমরা মুজিব বর্ষ পালন করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের শতজন্ম বার্ষিকী।

করোনা ভাইরাসের বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বকে অচল করে দিয়েছে। এই দুর্যোগের মধ্যে আমরা চেষ্ট করেছি অর্থনীতির চাকাটা সচল রাখা। তিনি বলেন, আরেকটা নতুন ধাক্কা এখন আসছে বিশ্বব্যাপী; আমরা এখন থেকে সে প্রস্তুতি নিচ্ছি। সে জন্য সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। আমাদের প্রথম দিকে অতটা অভিজ্ঞতা ছিলনা এখন আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে কাজেই নিজেকে সুরক্ষিত করা এবং অপরকে সুরক্ষিত রাখা। এই দায়িত্বটা সকলকেই পালন করতে হবে।  যে  ভ্যাকসিন হচ্ছে সেটা ক্রয় করার জন্য আমরা অগ্রীম টাকা দিয়ে বুক করেছি।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই  মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিব বাহিনীর পাবনা অ লের অন্যতম সদস্য ও স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু ফলক উন্মোচন এবং এ চত্বরের নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। স্থানীয় শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষের উদ্যোগে স্বাধীনতা চত্বরের নির্মাণকাজ চলতি বছরের মার্চ মাসে শেষ হয়। যেখানে প্রতিটি ইট পাথরের নকশায় মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস বিদ্যমান। স্বাধীনতা চত্বরের প্রধান মে র দৈর্ঘ্য ৪৬ ফুট ও প্রস্থ ৪০ ফুট এবং উচ্চতা ২০ ফুট। দেখতে ঝিনুক আকৃতির। যার দুই পাশে দু’টি গ্রীণ রুম রয়েছে। মাঠের দৈর্ঘ্য ১১৮ ফুট ও প্রস্থ ১১৭ ফুট। যার তিনদিকে বসার গ্যালারি রয়েছে।

এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা চত্বর বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামছুল হক টুকু, পাবনা-৫ আসের গোলাম ফারুক প্রিন্স, পাবনা-৩ আসনের মকবুল হোসেন, পাবনা-২ আসনের আহম্মেদ ফিরোজ কবির, পাবনা-৪ আসনের নুরুজ্জামান বিশ^াস, পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল, পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ, পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলামসহ মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতীক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সংস্কৃতিক ব্যক্তি, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন।