ভ্যাকসিনে আগ্রহী নয় গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ

ভ্যাকসিনে আগ্রহী নয় গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ

ভ্যাকসিনে আগ্রহী নয় গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।  দেশের বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যে টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল নাগরিককে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। তবে সরকারী এ টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ নেই গ্রাম এলাকার অধিকাংশ মানুষের। করোনায় নগরনঞ্চলগুলোতে ভীতি ছড়ালেও গ্রামের মানুষের মাঝে তেমন প্রভাব পড়েনি। তাই অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধির মতো টিকার প্রয়োজনীয়তাও বোধ করছেন না তারা।

গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ মানুষই টিকা নিতে অনাগ্রহী। তাদের মতে, টিকা না নিয়েই যেহেতু সুস্থ্য থাকা যাচ্ছে তাই টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া টিকা নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে টিকা নিতে চাচ্ছেন না তারা। তবে সরকার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করলে টিকা নেবেন বলে মত তাদের। এ ক্ষেত্রে কিছু মানুষ কোনোভাবেই টিকা নেবেন না বলেও জানান। তবে গ্রামীণ মানুষের একটি অংশ টিকার প্রতি তাদের আস্থার কথা ব্যক্ত করে সুযোগ পেলে টিকা নেওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন।

ঝিনাইদহের ত্রিবেণী এলাকার বাসিন্দা মুদি দোকানদার রাজু আহমেদ বলেন, ‘টিকা না নিয়েও যেহেতু সুস্থ্য আছি তাই টিকা নেওয়ার দরকার আছে বলে মনে করি না। তবে সরকার নিতে বললে নিতে হবে কিন্তু মন থেকে টিকা নেওয়ার ইচ্ছে নাই।’ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী আনসার সদস্য প্রদীপ চন্দ্র দাস বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি টিকা নেওয়ার পর অনেকেই অসুস্থ হচ্ছে তাই টিকা নেওয়ার খুব বেশী ইচ্ছে নাই। তবে আমাদের নিরাপত্তা বিভাগ থেকে যদি টিকা নিতে বলে তাহলে নিতে হবে। এমনিতেই আমাদের যে কাজ অসুস্থ হলে আরো সমস্যায় পড়তে হবে।’ মুকুল নামের অন্য এক আনসার সদস্য বলেন, ‘আমি কোনভাবেই টিকা নিব না। এমনিতেই ভালো আছি।  টিকা নিয়ে নতুন করে অসুস্থ হতে চাই না।’

ঝিনাইদহের শেখপাড়া এলাকার বাসিন্দা কৃষক আফসার আলী বলেন, ‘এতদিন যেহেতু করোনায় কিছু হয়নি তাই আর কিছু হবেও না। টিকা নেওয়ার এসব ঝামেলার দরকার নেই। আমরা এমনিতেই ভালো আছি।’ একই এলাকার ব্যবসায়ী আলেয়া বেগম বলেন, ‘আল্লাহ চাইলে এমনিতেই সুস্থ্য থাকবো। আমাদের টিকা নেওয়া লাগবে না।’ সাজেয়া খাতুন নামের আরেক নারী বলেন, সবাই টিকা নিলে নিব নাহলে নিব না।’

তবে অনেকেই টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সুযোগ পেলে টিকা নিতে চান তারা। ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকার বাসিন্দা ভ্যান চালক হাবিল বিশ্বাস বলেন, ‘যেহেতু ডাক্তাররা অনেক গবেষণা করে টিকা বানিয়েছে এবং সরকার সবাইকে দিতে চাচ্ছে নিশ্চয় এতে ভালো কিছু আছে। তাই সুযোগ পেলে অবশ্যই টিকা নিব।’

ত্রীবেণী এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী সজীব বলেন, ‘টিকা নিলে ভালোই হয়। করোনা থেকে অনেকটা চিন্তামুক্ত থাকা যাবে। সুযোগ হলে আমিও টিকা নিব।’ কুষ্টিয়ার সুগ্রীপপুর এলাকার নির্মাণ শ্রমিক মামুন বলেন, ‘করোনা যেহেতু অনেক জায়গায় ভয়ানক অবস্থার তৈরী করেছে তাই আবার কখন ভয়াবহ পরিস্থিতি হয় বলা যায় না এজন্য আগে থেকেই সবার টিকা নেওয়া দরকার।’