মানুষের সম্পদরাজি আল্লাহর দেয়া ধনভাণ্ডার স্বরূপ

মানুষের সম্পদরাজি আল্লাহর দেয়া ধনভাণ্ডার স্বরূপ

মানুষের সম্পদরাজি আল্লাহর দেয়া ধনভাণ্ডার স্বরূপ-

وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ هَذَا الْخَيْرَ خَزَائِنُ لِتِلْكَ الْخَزَائِنِ مَفَاتِيحُ فَطُوبَى لِعَبْدٍ جَعَلَهُ اللَّهُ مِفْتَاحًا لِلْخَيْرِ مِغْلَاقًا لِلشَّرِّ وَوَيْلٌ لَعَبْدٍ . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

সাহল ইবনু সা'দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: নিশ্চয় এ মাল হলো বিরাট ধনভাণ্ডার। সে ধনভাণ্ডারের চাবিও আছে। অতএব সে বান্দার জন্য সুসংবাদ যাকে আল্লাহ তা'আলা কল্যাণের দ্বারা খোলা এবং অকল্যাণের দ্বারা বন্ধ করার চাবি বানিয়েছেন। আর সে বান্দার জন্য ধ্বংস যাকে আল্লাহ অকল্যাণ বা মন্দের দ্বারা খোলা এবং কল্যাণের দ্বারা বন্ধ করার চাবি বানিয়েছেন। [ সহীহ : ইবনু মাজাহ ২৩৮, য'ঈফুল জামি ২০২১; তবে হাদীসটিকে আলবানী (রহ.) প্রথমে যঈফ বলেন, কিন্তু পরবর্তীতে সহীহ বলেছেন, সিলসিলাতুস্ সহীহাহ্ ১৩৩২, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ৬৬, আল হিদায়াহ্ ৫১৩৬, যিলালুল জান্নাহ্ ২৯৬, ২৯৮৯]

ব্যাখ্যা : মানুষের সম্পদরাজি আল্লাহর দেয়া ধনভাণ্ডার স্বরূপ। এ ধনভণ্ডার থেকে খরচ করে কল্যাণ কিংবা অকল্যাণ হাসিল করা সেটা মানুষের ইখতিয়ারভুক্ত। আর মানুষকেই এই ধনভাণ্ডারের চাবী বলা হয়েছে অর্থাৎ সে নিজে তা থেকে হয় কল্যাণ বের করবে অথবা অকল্যাণ আনয়ন করবে। যে সম্পদের সদ্ব্যবহার করে তার জন্য কল্যাণ এবং সুসংবাদ, পক্ষান্তরে যে তার যথাযথ হাক্ব আদায় করবে না তার জন্য কল্যাণের দ্বার থাকবে বন্ধ এবং তার জন্য রয়েছে অকল্যাণ অর্থাৎ ধ্বংস। আল্লাহ যাকে কল্যাণের বা নেক কাজের তাওফীক দান করেন সেটা তার পরম অনুগ্রহ। 

‘সম্পদ’ শব্দটি ব্যাপকার্থে ব্যবহৃত হবে, টাকা-পয়সা, জ্ঞান-প্রজ্ঞা, ‘ইবাদাত-বন্দেগীর যোগ্যতা ইত্যাদি সবই এর অন্তর্ভুক্ত। 

রাগিব ইস্পাহানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (الْخَيْرَ) হলো ঐ বস্তু (الْخَيْرُ مَا يَرْ غَبُ فِيهِ الْكُلُّ كالْعَقْلِ مَشَلًا وَالْعَدْلِ وَالْفَضْلِ وَالشَّيْءِ النَّافِعِ) প্রত্যেক মানুষ যার প্রতি আগ্রহশীল থাকে, যেমন জ্ঞান, ন্যায়-বিচার, পদমর্যাদা এবং অন্যান্য উপকারী বস্তু। পক্ষান্তরে ‘আরবীতে (الشَّرّ) হলো খায়র-এর বিপরীত। কখনো কখনো কল্যাণ এবং অকল্যাণ একই বস্তুতে অবস্থান করে। সেটা একজনের জন্য কল্যাণ অপরের জন্য অকল্যাণ। যেমন “ইলম, একজনের জন্য হবে জাহান্নামের পর্দা, অন্যের জন্য জাহান্নামে প্রবেশের কারণ হবে। অনুরূপ কুরআন কারো পক্ষে সুপারিশকারী হবে আবার কারো বিপক্ষে সাক্ষ্য প্রদানকারী। 

(মিরকাতুল মাফাতীহ, তানবীর শারহু জামিউস্ সগীর, আল কাশিফ ১০ খণ্ড, ৩৩০০ পৃ.)