গালিগালাজ সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে

গালিগালাজ সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে

গালিগালাজ সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে

গালিগালাজ নিন্দনীয় কাজ। গালি মানুষকে ঝগড়ার দিকে নিয়ে যায়; ফিতনা-ফ্যাসাদ তৈরি করে। মুহাম্মদ (সা.) গোটা জীবনে কাউকে গালি দেননি। গালি দাতার আমলের খাতায় গুনাহ লেখা হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘দুই ব্যক্তি যখন গালমন্দে লিপ্ত হয়, তখন তাদের উভয়ের গুনাহ তার ওপর বর্তাবে, যে প্রথমে শুরু করে; যতক্ষণ না অত্যাচারিত সীমা লঙ্ঘন করে।’ (সহিহ মুসলিম : হাদিস : ৬৪৮৫)

মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসেকি

মুসলমান আল্লাহর প্রিয় বান্দা। তিনি মুসলমানদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে গেঁথে দিয়েছেন। মুহাম্মদ (সা.) তাদের সম্পর্কে বলেন, ‘মুসলমান এক দেহের মতো, মুসলমান পরস্পর আয়নার মতো।’

মুসলমানদের এ বন্ধন পবিত্রতায় নির্মিত। ইসলাম চায়, মুসলমানরা পরস্পরকে ভালোবেসে জীবনযাপন করবে। সহযোগিতায় চলাফেরা করবে। বিপদ-আপদে সাহায্যের হাত বাড়াবে। কেউ কাউকে কষ্ট দেবে না। কারো বিপদের কারণ হবে না। কাউকে অন্যায়ভাবে গালি দেবে না। মুসলমানকে গালি দেওয়া গুনাহ। গালিদাতা ফাসিক। গালি ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে অশ্লীলতা ছড়ায়। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসেকি এবং মুসলমানের বিরুদ্ধে লড়াই করা কুফরি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৮)

মৃত ব্যক্তিকে গালি দেওয়া

মৃত ব্যক্তির প্রতি স্বাভাবিকভাবে মানুষের সহমর্মিতা জন্ম নেয়। তার অন্যায়-অপরাধ, ভুলগুলো মানুষ ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখে। তার জন্য কল্যাণের প্রার্থনা করে। সদকায় জারিয়ার পুন্য ছাড়া অন্য সব বন্ধ হয়ে যায়। কাজেই তার জন্য পুন্য পাঠানো দরকার। তার সমালোচনা, দোষত্রুটি আলোচনা না করা কর্তব্য। তাকে গালমন্দ করা অশুভনীয় কাজ। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কোনো সঙ্গী মারা গেলে তাকে ছেড়ে দাও এবং তার সম্পর্কে কটূক্তি কোরো না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৯৯)

সময়কে গালি দেওয়া

সময় সব সময় অনুকূল থাকে না। সময়কে ধারণ না করতে পারলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জীবনে নানা অসুবিধায় পড়ে। বিপদ-আপদের সম্মুখীন হয়। অর্থনীতিতে ধস নামে। মান-সম্মানে আঘাত আসে। সর্বোপরি জীবনে বিপর্যয় নেমে আসে। মানুষ তখন দিশাহারা হয়ে সময়কে গালি দেয়। সময়ের নিন্দা করে। সময়ের ওপর দোষ চাপায়। মহান আল্লাহ সময়কে গালি দিতে ও মন্দ বলতে নিষেধ করেছেন। সময় আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। তিনিই রাত-দিনের পরিবর্তন ঘটান।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ বলেন, মানুষ সময়কে গালি দেয়, অথচ আমিই মহাকাল (এর নিয়ন্ত্রণের মালিক)। একমাত্র আমারই হাতে রাত ও দিনের পরিবর্তন ঘটে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬১৮১)