মানবজীবনে ঈমানের সুফল

মানবজীবনে ঈমানের সুফল

প্রতীকী ছবি

সাইফুল ইসলাম তাওহিদ: আমাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার অসংখ্য অগণিত নিয়ামতের মধ্যে সবচেয়ে বড় নিয়ামত হলো ঈমান। ঈমান ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির নিশ্চয়তা দেয়। মানসিক প্রশান্তি অর্জনে ঈমানের আছে ব্যাপক ভূমিকা। মানুষ তার ঈমানের মাত্রানুযায়ী সে প্রশান্তি অনুভব করবে। তার ঈমান বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক প্রশান্তি ও তৃপ্তি বাড়বে। তার প্রতিটি কাজে ঈমানের স্বাদ অুনভব করবে। ঈমান মুমিনের জীবনে মানসিক প্রশান্তির নিশ্চয়তা দেয়। একজন মানুষের ব্যক্তি জীবনে ঈমানের প্রভাবটা বেশ উল্লেখযোগ্য।

অনুপম জীবন : আল্লাহর প্রতি ঈমান নির্মল জীবনের নিশ্চয়তা দেয়। জীবনের পরতে পরতে রয়েছে পবিত্র ও প্রশান্তির ছোঁয়া। মুক্তি মেলে যাবতীয় অস্থিরতা থেকে। জীবন সাজে বর্ণিল সৌন্দর্যে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমানদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরস্কার দেব, যা তারা করত।’ (সুরা নাহল, আয়ত : ৯৭)

সঠিক পথের দিশা : আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান ও বিশ্বাস অন্তরকে সঠিক পথের দিশা দেয়। বিপদের সময় অনেক মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়ে। ছোট বিপদও তাঁর কাছে বড় মনে হয়। কিন্তু প্রকৃত ঈমানদার থাকে মহান আল্লাহর হেফাজতে। প্রকৃত ঈমান ঈমানদের মনোবল জোগায়। তাকে সঠিক পথের দিশা দেয়। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাআলার নির্দেশ ছাড়া কোনো বিপদ আসে না এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান আনে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন। আর আল্লাহ তাআলা সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।’ (সুরা তাগাবুন, আয়াত : ১১)

যাবতীয় কল্যাণের নিশ্চয়তা : প্রকৃত ঈমান যাবতীয় কল্যাণ ও বরকতের নিশ্চয়তা দেয়। আসামানি বরকত ও জমিনের বরকতের অঙ্গীকার করা হয়েছে ঈমানদারদের জন্য। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানি ও পার্থিব নেয়ামতগুলো উম্মুক্ত করে দিতাম।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৯৬)

ঐশী নিরাপত্তা : আল্লাহ তাআলার প্রতি আবিচল বিশ্বাস ও আস্থা ঈমানদারদের ঐশী নিরাপত্তা দেয়। আল্লাহ তাআলা তাঁর মুমিন বান্দাদের নিজ হেফাজতে রাখেন। তাদের আসমান ও জমিনের বিপদাপদ থেকে রক্ষা করেন। তাদের যাবতীয় অস্থিরতা থেকে মুক্ত রাখেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ মুমিনদের থেকে শত্রুদের হটিয়ে দেবেন।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৮)

অন্তরের প্রশান্তি : প্রকৃত ঈমান মানসিক শান্তির নিশ্চয়তা দেয়। জীবনের কদর্যতা ও কলুষতা থেকে রক্ষা করে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান আনে এবং স্বীয় বিশ্বাসকে শিরকের সঙ্গে মিশ্রণ করে না, তাদের জন্যই শান্তি এবং তারাই সুপথগামী।’ (সুরা আনআম, আয়ত : ৮২)

হকের ওপর অবিচলতা : হিদায়াতের চাবি আল্লাহ তাআলার হাতে। কার ভাগ্যে হিদায়াত আর কার ভাগ্যে ভ্রষ্টতা আছে কেউ জানে না। কিন্তু প্রকৃত ঈমানদার আল্লাহ তাআলা হকের ওপর অবিচল রাখেন। তাদের হকের ওপর অবিচল থাকার তাওফিন দান করেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাআলা মুমিনদের সুদৃঢ় কথার প্রতি স্থিতি দান করেন—পার্থিবজীবনে ও পরকালে। এবং আল্লাহ অবিচারকারীদের পথভ্রষ্ট করেন। আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ২৭)

জান্নাতের সুসংবাদ : আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান মুমিনদের জান্নাতের সুসংবাদ দেয়। তাদের জান্নাতের নিয়ামতরাজির সুসংবাদ দেয়। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার নষ্ট করি না। তাদেরই জন্য রয়েছে বসবাসের জান্নাত। তাদের পাদদেশে প্রবাহিত হয় নহরগুলো। তাদের তথায় স্বর্ণ-কঙ্কনে অলংকৃত করা হবে এবং তারা পাতলা ও মোটা রেশমের সবুজ কাপর পরিধান করবে এ অবস্থায় যে তারা সিংহাসনে সমাসীন হবে। চমৎকার প্রতিদান এবং কত উত্তম আশ্রয়!’ (সুরা কাহফ, আয়াত : ৩০-৩১)