অস্ট্রেলিয়ায় দাবানল: ভয়াবহ বায়ুদূষণের কবলে সিডনি

অস্ট্রেলিয়ায় দাবানল: ভয়াবহ বায়ুদূষণের কবলে সিডনি

ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের বিস্তৃত এলাকাজুড়ে সৃষ্ট দাবানলে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে সিডনি ও অ্যাডিলেডের মতো বড় শহর। বায়ুদূষণ এতটাই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে যে, দেশটির সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ শহর সিডনি বায়ুদূষণের দিক থেকে বিশ্বের বাজে ১০ শহরের তালিকায় চলে এসেছে। দূষণজনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালে মানুষের ভিড় বাড়ছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা চতুর্থদিনের মতো শুক্রবার সকালেও নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজধানী সিডনির বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙে ঘন ধোঁয়াশা আর তেজোদীপ্ত সূর্যের মধ্যে। ১০ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশকেই মাস্ক পরে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ভিড় বাড়ছে। চালকদের গাড়ি চালাতে মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে। বিবিসি বলছে, এক প্যারামেডিক কর্মী জানিয়েছেন, তারা অন্তত ৪৫০ জনকে দূষণজনিত সমস্যার কারণে চিকিৎসা দিয়েছেন। একই অবস্থা বিরাজ করছে পার্শ্ববর্তী অ্যাডিলেড শহরেও।

ধোঁয়াশার সঙ্গে আসা দূষিত বস্তুকণা মানবদেহের রক্তে মিশে যাওয়ার ফলে যে স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে তার কারণেই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছে নিউ সাউথ ওয়েলসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নর্থ সাউথ ওয়েলস ও সাউথ অস্ট্রেলিয়া রাজ্য কর্তৃপক্ষ ধোঁয়াশার কারণে চালকরা দৃষ্টিসীমা নিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন জানিয়ে গাড়ি চালানোর সময় সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে।

সিডনির বাতাসের মধ্যে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইড অতিরিক্ত মাত্রায় বিরাজ করছে, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। চিকিৎসকরা বলছেন, এর ফলে শ্বাসকষ্ট এবং চোখ, নাক ও গলায় জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হতে পারে। শিশু, বৃদ্ধ ও ধূমপায়ীরা এ অবস্থায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া হাঁপানি ও হৃদরোগে ভোগা রোগীদের জন্য পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

চিকিৎসকরা বাইরে বেরোনোর সময় সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছেন। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালেও এয়ার ভিজুয়াল গ্লোবাল র‌্যাংকিংয়ে সিডনির অবস্থান ছিল ১০; জাকার্তা ও শেনঝেনের উপরে, মুম্বাই-কলকাতার নিচে। গত সপ্তাহে এ র‌্যাংকিংয়ে সিডনি একবার ৮-এও স্থান করে নিয়েছিল।

দাবানল, দূষণের এ বিপর্যয়কর পরিস্থিতি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করছে। এমন বিরূপ অবস্থায়ও তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফায়াস সার্ভিস কর্মীদের লড়াইয়ে দুই সপ্তাহ পরও নিউ সাউথ ওয়েলসে ৫৫টি স্থানে আগুন জ্বলছে।