আরব কাপের পর কাতারের সামনে বিশ্বকাপের কঠিন পরীক্ষা

আরব কাপের পর কাতারের সামনে বিশ্বকাপের কঠিন পরীক্ষা

আরব কাপের পর কাতারের সামনে বিশ্বকাপের কঠিন পরীক্ষা

আরব কাপের সফল আয়োজনের পর কাতার তাদের প্রথম পরীক্ষায় ভালভাবেই উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু আগামী বছর বিশ্বকাপকে সামনে রেখে তাদের সামনে আরো বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে, যেখানে ৩২টি আন্তর্জাতিক দল ছাড়াও প্রায় ১.২ মিলিয়ন সমর্থকের উপস্থিতি আশা করা হচ্ছে। 

শনিবার আরব কাপের ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের গোলে তিউনিশিয়াকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছে আলজেরিয়া। ঠিক এক বছর পর এই দিনে বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ী দলের নাম জেনে যাবে পুরো ফুটবল বিশ্ব। ফিফা সভাপতি গিয়ান্নি ইনফান্তিনো আরব কাপের সফল আয়োজন নিয়ে দারুন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু এখন বিশ্বকাপের মত মেগা ইভেন্ট প্রথমবারের মত আয়োজনের সুযোগ পেয়ে কাতার কতটা সফল হতে পারে সেটাই দেখার বিষয়। বিশেষ করে একটি মাত্র শহর দোহায় এই বৃহৎ আয়োজন নিয়ে সাধারণের মনে কিছুটা হলেও শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সীমিত হোটেল আবাসন ও ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক যথাসময়ে প্রস্তুত করে তোলাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ। এছাড়া বিশ্বকাপের বিভিন্ন অবকাঠোমো নির্মানে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার আদায় নিয়েও বেশ তোপের মুখে পড়তে হয়েছে বিশ্বের অন্যতম ধনী এই মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে। 

রক্ষনশীল মুসলিম দেশ হিসেবে পরিচিত কাতারের সংষ্কৃতির ব্যপারে কিছুটা পিছুটান রয়েছে যা ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ফুটবল সমর্থকদের জন্য অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে। জনসমুক্ষে মধ্যপান এখানে একেবারেই অবৈধ। 
১৬ দলের অংশগ্রহণের প্রথমবারের মত আয়োজিত আরব কাপের জন্য ৬ লাখেরও বেশী টিকিটি বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে চির প্রতিদ্বন্দ্বী সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে স্বাগতিক কাতারের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটিতে রেকর্ড ৬৩ হাজার ৪৩৯টি টিকিট বিক্রি হয়। 

এ পর্যন্ত বিশ্বকাপের আটটি ভেন্যুর মধ্যে ৬টি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। আরব কাপের ম্যাচগুলো এই ভেন্যুতে আয়োজনের মাধ্যমে কাতার ট্রেনিং সেন্টার, ট্রান্সপোর্ট, আবাসন, স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যান্য নিরাপত্তা   বাহিনী এলাকাগুলোকে যাচাই করে নিয়েছে। সমর্থকদের অভিযোগের মুখে ফ্যান আইডি সিস্টেম টুর্নামেন্টের মাঝপথে অবশ্য বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। তিউনিশিয়া বনাম ওমানের মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে কিছু ক্ষুব্ধ সমর্থকের কারনে স্টেডিয়ামের বেশ কিছু আসন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। 

বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির সহ-সভাপতি জসিম আল-জসিম বলেছেন, ‘একটি সেরা বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই এই আরব কাপের মাধ্যমে শিখে নিয়েছে কাতার।’
বিশ্বকাপের ফাইনালের ভেন্যু লুসাইল স্টেডিয়ামটি অবশ্য আরব কাপের জন্য ব্যবহৃত হয়নি। অক্টোবরে এর প্রকল্প ম্যানেজার জানিয়েছিলেন এখনো এর চূড়ান্ত পরীক্ষা বাকি রয়েছে। 

আরব কাপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের কোচরাও ভেন্যুগুলোর আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে দারুন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আলজেরিয়ান অভিজ্ঞ কোচ মজিদ বুগেরা বলেছেন সবকিছুই এখানে খুব ভাল, স্টেডিয়ামগুলো দুর্দান্ত, সুযোগ সুবিধাও পর্যাপ্ত। কিছু কিছু হোটেলে সামন্য কিছু সমস্যা রয়েছে। কিন্তু এগুলো বিশ্বকাপে কোন প্রভাব ফেলবে না। আরব কাপের দারুন একটি আয়োজনের জন্য আমরা কাতারকে অভিনন্দন জানাতেই পারি। আমি মনে করি এখানকার বিশ্বকাপ সত্যিকার অর্থেই একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন হবে।’

মিশরের বর্তমান ও ইরান, পর্তুগাল ও রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক কোচ কার্লোস কুইরোজ বলেছেন একটি সফল আয়োজনের জন্য যা যা প্রয়োজন কাতার বিশ্বকাপের আগে স্বাগতিকদের হাতে তার সবকিছুই রয়েছে।

 সূত্র: বাসস