বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় কোথায় যেতে পারেন নিঃসন্তান দম্পতিরা

বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় কোথায় যেতে পারেন নিঃসন্তান দম্পতিরা

বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় কোথায় যেতে পারেন নিঃসন্তান দম্পতিরা

ঢাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এক সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা হয় এক মনমরা নারীর সঙ্গে।সেখানে চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন বেশ কয়েকটি দম্পতি।ঢাকা ও দেশের নানা জেলা থেকে এসেছেন তারা। বেশিরভাগের বয়স তিরিশের উপরে বলে মনে হলো।পটুয়াখালীর বাউফল থেকে এই নারীটি বসেছিলেন একদম পেছনের সারিতে। কথা বলতে চাইলে শুরুতে একটু দ্বিধা বোধ করলেন।

এক পর্যায়ে জানালেন সন্তান জন্ম না দিতে পারলে তার স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করানো হবে, শ্বশুরবাড়ি থেকে এমন কথা শোনার পর তিনি চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসেছেন এক আত্মীয়র সাথে।

সন্তানহীনতার জন্য পারিবারিকভাবে তাকে কিসের মুখোমুখি হতে হয় তার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলছেন, "আমার বিয়ে হইছে আট বচ্ছর হয়। আমাকে বলা হয় এত বছর হইলো বিয়া হইছে এখনো বাচ্চা হয় না, সমস্যা কি? আমার স্বামীকে আমি বাচ্চা দিতে পারতেছি না। এত টাকা পয়সা কে খাবে? এইগুলাতো চলতি পথে রোজ শুনতে হয়। শ্বশুরবাড়ি থেকে বলতেছে আমরা আমাদের ছেলেকে আবার বিয়ে করাবো। আমার যে বাচ্চা হয় না সেটা নিয়ে আমার কি কষ্ট হয় না? এখন ঢাকায় আসছি আল্লাহ পাক যদি আমারে একটা সন্তান দেয়।"

এই নারী বলছিলেন বিয়ের দ্বিতীয় বছর থেকেই তাকে চাপ দেয়া শুরু হয়েছে। অবশেষে সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন।অথচ বন্ধ্যাত্ব নারী ও পুরুষ উভয়েরই হতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, সন্তান ধারণে অক্ষম নারী ও পুরুষের সংখ্যা একই রকম।যদিও পারিবারিক ও সামাজিকভাবে বাংলাদেশে নারীদেরই এজন্য নিগ্রহের শিকার হতে হয় বেশি।বন্ধ্যাত্বের এখন নানা চিকিৎসা বাংলাদেশে রয়েছে। তবে তা দীর্ঘমেয়াদি, ব্যয়বহুল এবং কষ্টকর।

যেসব কারণে নারীদের বন্ধ্যাত্ব হয়

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সন্তান ধারণের চেষ্টা করার পর টানা এক বছর সময়কাল যদি কেউ সফল না হন তাহলে তাকে ইনফার্টাইল বা সন্তান ধারণে অক্ষম হিসেবে গণ্য করা হয়।বাংলাদেশে কত শতাংশ দম্পতি বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই।

স্ত্রী রোগের পাশাপাশি নারীদের বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন ডা. সেলিনা আক্তার। তিনি বলছিলেন, তার কাছে যে দম্পতিরা আসেন তাদের মধ্যে সন্তান ধারণে অক্ষমতায় নারী ও পুরুষের সংখ্যা একই রকম।দেখা যায় দম্পতিদের মধ্যে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ত্রী এবং একই সংখ্যক স্বামীদের শারীরিক সমস্যা থাকে। বাকি ১০ ভাগ ক্ষেত্রে দুজনেরই সমস্যা থাকে। কিন্তু ১০ ভাগ ক্ষেত্রে সমস্যা অজানা থেকে যায়।

নারীরা প্রধানত কি কারণে সন্তান ধারণে অক্ষম হয়ে থাকেন সে সম্পর্কে ধারণা দিলেন ডা. সেলিনা আক্তার:প্রেগন্যান্সির জন্য জরুরি পলিসিস্টিক ওভারি, যার মাধ্যমে একটা করে ওভাম আসার কথা, সেটা আসে না।জরায়ুর কিছু সমস্যা থাকে যা জন্মগত হতে পারে আবার অসুখের কারণে হতে পারে।জন্মগত সমস্যার কারণে হয়ত ডিম আসছে না, তার টিউব ব্লক, জরায়ু যেটা আছে সেটা বাচ্চাদের মতো।

আরও কিছু অসুখ আছে, যেমন: ওভারিয়ান চকলেট সিস্ট, এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণে হতে পারে।হরমোনের কারণেও হতে পারে। যেমন থাইরয়েডের সমস্যার কারণে হতে পারে।আর যৌনবাহিত রোগের কারণে মেয়েদের প্রজনন অঙ্গগুলোর ক্ষতি করে। সেজন্য বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

পুরুষের যেসব কারণে বন্ধ্যত্ব

জাতীয় কিডনি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ফজল নাসের বলছেন, তাদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে পুরুষরা বন্ধ্যত্বের সমস্যা নিয়ে অনেক দেরিতে চিকিৎসকের কাছে যান।কেননা সন্তান না হলে শুরুতেই স্ত্রীকে চিকিৎসকের কাছে নেয়া হয়। পুরুষদের বন্ধ্যত্বের মূল কারণগুলো কি জানালেন তিনি:

একটা কারণ এজোস্পার্মিয়া, অর্থাৎ বীর্যের মধ্যে শুক্রাণু নেই। তার নালির কোথাও বাধা সৃষ্টি হয়েছে তাই শুক্রাণু মিলতে পারছে না। শুক্রাণু তৈরি হওয়ার যে স্থান অণ্ডকোষ, কোন কারণে সেটি তৈরিই হয়নি।অনেক সময় শুক্রাণু থাকে কিন্তু পরিমাণে কম থাকে।আবার শুক্রাণুর পরিমান ঠিক আছে কিন্তু মান ঠিক নেই। যার ফলে সে ডিম ফার্টিলাইজ করতে পারে না।এছাড়া টেস্টোস্টেরন হরমোনও 'সিক্রেশন' হতে হবে।

প্রজনন অঙ্গে কোন ধরনের আঘাত

অস্ত্রোপচারের কারণে সৃষ্ট বাধা

প্রজনন অঙ্গে যক্ষ্মা

ডায়াবেটিস

ছোটবেলায় মাম্পস

এমনকি মাথায় চুল গজানোর ঔষধও পুরুষদের সন্তান ধারণের অক্ষমতার উৎস।

বন্ধ্যাত্ব যেভাবে সামাজিক নিগ্রহের উৎস

জন্মগত ত্রুটি অথবা কোন অসুখ যে কারণেই হোক না কেন, নারী ও পুরুষ সমস্যা যারই হোক না কেন, সন্তান ধারণে অক্ষমতা বাংলাদেশে বিবাহিত দম্পতিদের জন্য সামাজিক ও পারিবারিক নিগ্রহের উৎস।

তুলনামূলকভাবে এর শিকার নারীরা বেশি হন। অনেক সময় পুরুষের সমস্যা হলেও।৫৫ বছর বয়সী কিশোরগঞ্জের মোহাম্মদ আবুল কালাম একসময় জেনেছেন তার নিজের ও স্ত্রী দু'জনেরই সন্তান ধারণে জটিলতা রয়েছে।

কিন্তু তারপরও তার স্ত্রীকেই নিগ্রহ সহ্য করতে হয়েছে। আবুল কালাম বলছিলেন, সন্তান ধারণে অক্ষমতা কিভাবে নিজের ও তার স্ত্রীর মানসিক কষ্টের কারণ ছিল।"সামাজিকভাবে আমাকে কেউ কিছু বলে নাই কিন্তু আমার স্ত্রীকে বলতো। বিশেষ করে আমার মা বাবা। ও তখন কষ্ট পেত। আমি জানি আমার মধ্যে কমতি আছে কারণ ডাক্তার বলেছে"।

"বিষয়টা একান্তই কষ্টের যে আমার সাথে একই সময়ে বিয়ে করলো তাদের বাচ্চা হইছে, তারা বাচ্চা নিয়ে আনন্দ ফুর্তি করছে কিন্তু আমরা করতে পারছি না। এটা কষ্টদায়ক ছিল বিশেষ করে আমার স্ত্রীর জন্য। আমার স্ত্রীর কথাতেই কিন্তু আমি ডাক্তারের কাছে গিয়েছি। তা নাহলে কিন্তু যেতাম না। একটা সন্তানের জন্য ও যতটুকু ব্যাকুল হয়েছিল আমাকে যে সে জোর করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছে।"

এই ব্যাকুলতার উৎস ঠিক কতটা আসলে নিজের জন্য চাওয়া? নাকি সম্ভবত সামাজিক নিগ্রহ থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষাই এর কারণ?

বাংলাদেশের সমাজে সন্তানহীনদের বাঁজা, আটকুঁড়ে এসব নামে ডাকা হয়।ঘুম থেকে উঠে সন্তানহীন কারো মুখ দেখলে, কোন শুভ কাজে এমন কেউ উপস্থিত থাকলে অমঙ্গল হবে বলে মনে করার একটি সংস্কৃতি এখনো রয়েছে।

সন্তানহীনদের জন্য চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে গবেষণা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা।তিনি বলছেন, এর পেছনে রয়েছে সমাজকে টিকিয়ে রাখার জন্য পরবর্তী প্রজন্ম রেখে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা।

"সমাজ চায় যে সমাজকে টিকিয়ে রাখতে হবে। সবার বড় দায়িত্ব হচ্ছে সমাজকে টিকিয়ে রাখতে হবে। টিকিয়ে রাখতে হলে আপনার পরবর্তী প্রজন্ম লাগবে। পরবর্তী প্রজন্ম না থাকলে যেকোনো প্রজাতি এনডেনজার্ড হয়ে পড়বে। সামাজিকভাবে এই দায়িত্ব বর্তায় যে আর একটি প্রজন্ম রেখে যেতে হবে। আর সেটি হতে হলে বাচ্চা হতে হবে"।

"আমাদের এখানে যেহেতু বিয়ের মধ্য দিয়ে বাচ্চা হয়, আমাদের এখানে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, সামাজিকভাবে ওই ধারনা তৈরি হয়ে আছে যে বিয়ে হলেই বাচ্চা হবে। বাচ্চা হওয়াটা পৃথিবীর সব সমাজেই গুরুত্বপূর্ণ", বিবিসিকে বলছিলেন অধ্যাপক সুলতানা।

তিনি বলছেন, সন্তান ধারণে অক্ষম নারী পুরুষের সন্তানের জন্য ব্যাকুলতার আর একটি কারণ বার্ধক্যে তাদের দায়িত্ব কে নেবে সেই দুঃশ্চিন্তা।এর পেছনে রয়েছে বাংলাদেশের মতো দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়স্কদের জন্য সহায়তামূলক কর্মকাণ্ডের অভাব।তিনি আরও মনে করেন, যৌথ পরিবার থেকে সরে আসা ব্যক্তিকেন্দ্রিক সমাজে একাকীত্ব বোধ থেকে মুক্তি, শিশুকে কেন্দ্র করে স্বামী স্ত্রীর বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষাও একটি কারণ।

যে ধরনের চিকিৎসা রয়েছে

সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশে এখন বন্ধ্যত্বের চিকিৎসার নানা ব্যবস্থা রয়েছে।সে সম্পর্কে ডা. সেলিনা আক্তার বলছিলেন, "যখনই কোন কাপলের এক বছর বাচ্চা হচ্ছে না, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে আসতে হবে। বয়স যদি তিরিশের বেশি হয়, সেক্ষেত্রে আমরা এক বছর অপেক্ষা করতে মানা করি।

তাদের তার আগেই ডাক্তারের কাছে চলে আসতে হবে। ছয় মাসের মধ্যে যদি না হয়। আর বয়স যদি তিরিশের নিচে হয় তাদের বলি এক বছরের কথা।"এছাড়া আজকাল অনেকেই পেশাগত কারণে সন্তান ধারণে সময় নেন, সেটি এক এসময় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

মানুষের জীবনযাত্রায় যে পরিবর্তন এসেছে সেটি স্বাস্থ্যসম্মত করা পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি:

মেয়েদের খাদ্যাভ্যাস ঠিক করতে হবে।

ক্যালরি খাওয়া কমাতে হবে।

ঘরে রান্না খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

ব্যায়াম করতে হবে।

শরীরের স্বাভাবিক ওজন রক্ষা করতে হবে।

জীবনাচারণ পরিবর্তন করতে হবে।

দিনে ঘুমানো, রাতে জেগে থাকার মত অভ্যাস বদলাতে হবে।

বয়স থাকতে বাচ্চা নিতে হবে।

ডা সেলিনা আক্তার বলছেন, নারীদের ডিম্বাণু বৃদ্ধির জন্য ঔষধ, হরমোন ইনজেকশন দেন তারা।ডিম্বাশয়, এর নালী ও জরায়ুর সমস্যা দেখতে ল্যাপারস্কপি রয়েছে। কিছুদিন আগে স্বল্প পরিসরে চালু হয়েছে স্টেম সেল থেরাপি।সন্তান জন্মদানে অক্ষম দম্পতির দেহ থেকে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু সংগ্রহ করে কৃত্রিম পরিবেশে তা নিষিক্ত করে পুনরায় স্ত্রীর জরায়ুতে স্থাপন করা বা টেস্টটিউব বেবির ব্যবস্থা শুরু হয়েছে প্রায় কুড়ি বছর আগে।

তবে বাংলাদেশে সন্তানহীনতার চিকিৎসা যতটুকু রয়েছে তার বেশিরভাগেই নারীদের জন্য এবং তা মূলত বিভাগীয় শহর ভিত্তিক।দেশের সবগুলো বিভাগীয় শহরে মেডিকেল কলেজগুলোতে এর ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।ঢাকায় শুধুমাত্র বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় বেসরকারি ক্লিনিক রয়েছে। বড় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ইনফার্টিলিটি বিভাগ রয়েছে।

পুরুষদের জন্য কিছু চিকিৎসার কথা বলছিলেন চিকিৎসক ফজল নাসের:

ঔষধ দিয়ে শুক্রাণু বাড়ানো যেতে পারে।স্বাভাবিক হচ্ছে প্রতি মিলিতে চল্লিশ থেকে ১২০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকার কথা। যদি সংখ্যাটা ১০ মিলিয়নের নিচে নেমে যায়, তাহলে কৃত্রিম গর্ভধারণে যেতে হবে।

যদি পুরোপুরি 'অবস্ট্রাকশন' হয়ে থাকে যে, শুক্রাণু আসছে না, তাহলে দেখতে হবে অণ্ডকোষটা সক্রিয় আছে কিনা।অণ্ডকোষ সক্রিয় থাকলে সেখান থেকে সুঁই দিয়ে শুক্রাণু নিয়ে এসে টেস্টটিউব পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দেয়া যায়।"পৃথিবীর ভাল কেন্দ্রগুলোতেও অবস্ট্রাকশনের সার্জারি সফল হওয়ার হার মোটে ২৫ শতাংশ এবং এটি খুবই ব্যয়বহুল", বিবিসিকে বলেন মি. নাসের।

ধৈর্য, ব্যয় ও শারীরিক কষ্ট

বিশ্বব্যাপী পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় সাফল্যের হার কম। নারী পুরুষ দুজনের জন্যই বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি।এক সপ্তাহের ডোজেই এটি সেরে যায় না। তাই এক্ষেত্রে ধৈর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।এটি প্রায়শই ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। বিশেষ করে টেস্টটিউব পর্যন্ত যদি বিষয়টি গড়ায়।

বেসরকারি পর্যায়ে এর খরচ দুই থেকে আড়াই লাখ। কিন্তু এটি একবারে সফল নাও হতে পারে।আর বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা অনেক কষ্টকর। ঢাকায় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদক ফারিহা আফসানা কান্তা সন্তানহীন হওয়ার সামাজিক যতরকম হয়রানি সবকিছুই সামাল দিয়েছেন।

কিন্তু এখন এর চিকিৎসায় কতটা শারীরিক কষ্টের শিকার হয়েছেন সেটি বর্ণনা করে তিনি বলছিলেন, "হরমোন ইনজেকশনে অসময়ে ব্লিডিং হয়। দেখা যায় আমার পিরিয়ডের সময় না কিন্তু আটদিন দশদিন ধরে চলে। পেটে অসম্ভব ব্যথা হয়। চুল পড়ে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়"।

"এছাড়া ঔষধ খেতে হয় ইনজেকশনের ডেটের সাথে হিসেব করে। সেটার হিসেব মেলানো। মাসিকের দ্বিতীয় দিনে ঔষধ খেতে হবে। মিস হয়ে গেলে ওই মাসের কোর্সটা আর হয় না। ভুল হওয়ার ভয়, কিছুদিন পর পর সময় বের করে ডাক্তারের কাছে যাওয়া এটা খুব স্ট্রেসফুল।"তার কাছে ইদানীং মনে হয় যতটা না নিজের জন্য সন্তান নেবার চেষ্টা করছেন তার চেয়ে বোধহয় সামাজিক চাহিদা পূরণ করাটাই এখন প্রধান কারণ।

ফারিহা আফসানা কান্তা, কিশোরগঞ্জের মোহাম্মদ আবুল কালাম আর বাউফলের সেই মনমরা নারী - সবার শারীরিক ও সামাজিক সমস্যা একই রকম না হলেও অন্তত একটি জায়গায় যেন সবার মিল রয়েছে।আর তা হলো একটি সন্তান প্রাপ্তির জন্য নিঃসন্তান দম্পতিরা বহুদূর পর্যন্ত যেতে প্রস্তুত।

সূত্র : বিবিসি