ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশের বোলারদের হতাশার দিন

ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশের বোলারদের হতাশার দিন

ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশের বোলারদের হতাশার দিন

ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন হতাশায় কাটলো বাংলাদেশ বোলারদের। প্রথম দিন মাত্র ১ উইকেট নিতে পেরেছে সফরকারী বোলাররা। এক ব্যাটারকে হারিয়ে ৯০ ওভারে নিউজিল্যান্ড রান তুলেছে ৩৪৯। দলকে বড় স্কোর এনে দিতে বড় অবদান রাখেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম লাথাম। দু’বার রিভিউ নিয়ে বেঁেচ সেঞ্চুরি তুলে ১৮৬ রানে অপরাজিত আছেন লাথাম। অপর প্রান্তে ৯৯ রানে অপরাজিত আছেন প্রথম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান ডেভন কনওয়ে। 

এ ম্যাচেও টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল হক। দু’টি পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। আঙ্গুলের ইনজুরির কারনে একাদশে সুযোগ হয়নি ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের। আর কুঁচকির ইনজুরিতে পড়ে এ টেস্টে খেলা হলো না মুশফিকুর রহিমের। তাই জয় ও মুশফিকের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ হয় মোহাম্মদ নাইম ও নুরুল হাসান সোহানের। বাংলাদেশের শততম টেস্ট খেলোয়াড় হিসেবে এ ম্যাচে অভিষেক হলো নাইমের। 

ব্যাট হাতে সতর্কতার সাথেই শুরু করেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার লাথাম ও উইল ইয়ং। প্রথম  ৮ ওভারে ২২ রান তোলেন  ফেলেন লাথাম ও ইয়ং। নবম ওভারে দু’বার লেগ বিফোর আউট হয়ে রিভিউ নিয়ে বেঁেচ যান লাথাম। 
প্রথম টেস্টের হিরো পেসার এবাদত হোসেনের বলে নবম ওভারের দ্বিতীয় ও পঞ্চম বলে লেগ বিফোর আউট হন লাথাম। অন-ফিল্ড আম্পায়ার আউটও দেন লাথামকে। দু’বারই রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি । এ সময় লাথামের ব্যক্তিগ রান ছিল যথাক্রমে  ১৬ ও ১৮  । 

জীবন পেয়ে ইয়ংকে নিয়ে দলের স্কোর বড় করেছেন লাথাম। ১৫তম ওভারে দলের স্কোর হাফ-সেঞ্চুরিতে নেন তারা। প্রথম সেশনে বিনা উইকেটে ৯২ রান তোলে  নিউজিল্যান্ড। এ সময়  হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন লাথাম। ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন  ইয়ং। 

বিরতির পরের ওভারেই লাথাম-ইয়ং জুটি ভাঙ্গার দারুন সুযোগ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। সেই সুযোগ হেলায় ফেলেছে। এবারও হতভাগা বোলার এবাদত। 

২৬তম ওভারের শেষ বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ ফেলেন ফিল্ডার লিটন দাস। তার হাতে লেগে বল চলে যায় ফাইন লেগে। এই সুযোগে রান নেয়ার চেষ্টা করেন লাথাম-ইয়ং। সেখান থেকে বল ছুঁড়ে মারেন তাসকিন। বল পেয়ে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান রান আউটের জন্য নন-স্ট্রাইকে ছুঁড়ে মারেন। কিন্তু নুরুলের থ্রো স্টাম্প মিস করায়, বল সীমানা অতিক্রম করেন। তখন স্টাম্পের কাছে কোন ফিল্ডার ছিলেন না। এতে দৌঁড়ে তিন রান ও বাউন্ডারি হওয়ায়, মোট সাত রান পায় নিউজিল্যান্ড। ফলে ২৬ রানে জীবন পান ইয়ং। 

জীবন পেয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ইয়ং। হাফ-সেঞ্চুরি পাবার দুই ওভার পরই আউট হন ইয়ং। বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। পয়েন্টে নাইমকে ক্যাচ দেন ইয়ং। ১৭৬ মিনিটে ১১৪ বল খেলে ৫৪ রানে আউট হওয়ার আগে  ৫টি চার মারেন ইয়ং। লাথামের সাথে ১৪৮ রানের জুটি গড়েন ইয়ং। বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান লাথাম ও ইয়ংয়ের। 

ইয়ং ফিরে যাবার কিছুক্ষণ পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লাথাম। এজন্য ১৩৩ বল খেলেছেন তিনি। 
সেঞ্চুরির পরও দমে যাননি লাথাম। তিন নম্বরে নামা কনওয়েকে নিয়ে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তিনি। ১ উইকেটে দলীয় ২০২ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যান লাথাম ও কনওয়ে। প্রথম দুই সেশনে ভাগ্য সাথে না থাকায় ও ক্যাচ মিসের কারনে হতাশায় কাটে বাংলাদেশের। তৃতীয় ও শেষ সেশনেও বাংলাদেশ বোলারদের হতাশ করেন লাথাম ও কনওয়ে। 

কারন দিন শেষে অবিচ্ছিন্ন থেকে যান লাথাম ও কনওয়ে। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল-সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থেকে ১৮৬ রানে অপরাজিত থেকে  দিন শেষ করেছেন লাথাম। সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে অর্থাৎ ৯৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষে  করেন  কনওয়ে। 

২৭৮ বল খেলে ২৮টি চার হাঁকান লাথাম। আর ১০টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো কনওয়ের ১৪৮ বলের ইনিংসে। দ্বিতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২০১ রান করেছেন লাথাম ও ইয়ং। বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেট জুটি সর্বোচ্চ রান নিউজিল্যান্ডের। 
দিনের একমাত্র উইকেট শিকারী বাংলাদেশের শরিফুল ১৮ ওভারে ৫০ রানে ১ উইকেট নেন। তাসকিন-এবাদত-মিরাজ ও শান্ত উইকেটশুন্য ছিলেন। এই ইনিংসে বল হাতে দেখা যায়নি প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬ রানে গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল হককে।  

 সূত্র: বাসস