শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার শর্ত আরো শিথিল করলো সরকার

শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার শর্ত আরো শিথিল করলো সরকার

শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার শর্ত আরো শিথিল করলো সরকার

বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার শর্ত আরো শিথিল করেছে সরকার। বলা হচ্ছে, যেকোন ছেলেমেয়েই যদি প্রমাণ করতে পারে যে সে বারো থেকে সতের বছর বয়সী শিক্ষার্থী, তাহলেই সে করোনাভাইরাসের টিকা পাবে।

বাংলাদেশের সরকার, এখন একটি টিকাদান কর্মসূচী চালাচ্ছে, যেটার উদ্দেশ্য ১৫ই জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থীদের অন্তত এক ডোজ টিকা দেয়া শেষ করা।প্রথম দিকে শিক্ষার্থীদের টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও পরের দিকে তা কিছুটা শিথিল করে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা জন্মসনদ দেখাতে পারলেই টিকা পাবে।কিন্তু এখন সেই শর্তে আরো ছাড় দেয়া হলো।

ঢাকায় সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, "তারা যে শিক্ষার্থী সেই প্রমাণটুকু দিলেই টিকা পাবে তারা।"আইডিকার্ড, রেজিস্ট্রেশন নম্বর কিংবা রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেখালে তাদেরকে টিকা দেয়া হবে।আর এ কারণে বয়স নির্ধারণের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদের যে প্রয়োজনীয়তা ছিল সেটি আর থাকছে না বলেও জানান তিনি।

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রনের সংক্রমণ সামনের দিকে অনেক বাড়তে শুরু করবে এমন আশংকা থেকে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঘোষণা দেয়া হয় যে, দেশজুড়ে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী সকল শিক্ষার্থীকে অন্তত এক ডোজ টিকা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করা হবে।এক ডোজ টিকা নেয়া না থাকলে শিক্ষার্থীরা সশরীরে ক্লাসে যেতে পারবে না বলেও জানানো হয়।

এর আগে গত বছর নভেম্বরের এক তারিখ ঢাকায় ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়।প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের ঢাকার ১২টি কেন্দ্রে এই স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পরে জানুয়ারিতে সেটি আরো সম্প্রসারণ করা হয়।

চারটি অসুখ থাকলে সশরীরে স্কুলে যাওয়ার দরকার নেই

এদিকে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে এমন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের স্কুলে না এসে বাসায় থেকে অনলাইনে ক্লাস করা এবং পাঠদানের পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।অতিরিক্ত স্বাস্থ্যঝুঁকি বলতে চার ধরণের রোগের উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার, কিডনি রোগ, ক্রনিক রোগ এবং অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট।

২০২০ সালের ৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার পর দেড় বছরের মতো বন্ধ ছিল সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।গত বছর সেপ্টেম্বরের ১২ তারিখ স্কুল পর্যায়ে আংশিক শ্রেণীকক্ষে পাঠদান শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় সরকার নতুন করে নানারকম বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা করছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তবে শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে করার কোন চিন্তা সরকারের নেই।এ নিয়ে রবিবার রাতের বেলা কোভিড-১৯ বিষয়ক কারিগরী পরামর্শক কমিটির সাথে একটি বৈঠকের পর সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান দীপু মনি।

তবে এ বিষয়ে সাত দিন পর আবার কারিগরি পরামর্শক কমিটির সাথে আলোচনা করা হবে এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।এ পর্যন্ত ৪৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী টিকার জন্য নিবন্ধন করেছে। ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ এবং ১৭ লাখের বেশি দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো ১২ বছরের কম বয়সীদের টিকা দেয়ার অনুমোদন না দেয়ার কারণে এই বয়সী শিশুদের এখন টিকা দেয়া হচ্ছে না। এসব শিক্ষার্থীরা স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে পারবে।এছাড়া ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও বছরের মাঝামাঝিতে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি।

সূত্র : বিবিসি