ছাত্র-অছাত্র প্রশ্নে ইবির ক্রিকেট টুর্নামেন্টে তালগোল

ছাত্র-অছাত্র প্রশ্নে ইবির ক্রিকেট টুর্নামেন্টে তালগোল

ছাত্র-অছাত্র প্রশ্নে ইবির ক্রিকেট টুর্নামেন্টে তালগোল

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বঙ্গবন্ধুকাপ আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রত্ব না থাকার পরও দুইটি বিভাগের একজন করে খেলোয়াড় খেলায় অংশ নেওয়ায় টুর্নামেন্টটির সেমিফাইনাল ও কোয়ার্টার ফাইনালের দুটি ম্যাচ পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে আবারো নতুন করে ম্যাচ খেলতে হবে। এদিকে, করোনায় টুর্নামেন্টটি দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর আবারো শুরু হলেও জটিলতায় সময় ক্ষেপণ এবং করোনায় নতুন করে বিধিনিষেধের ফলে টুর্নামেন্টটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। 

জানা যায়, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আন্তঃবিভাগ ও আন্তঃহল টুর্নামেন্টটি শুরুর পর করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হলে খেলা  স্থগিত হয়ে যায়। পরে গত ২০ ডিসেম্বর আন্তঃবিভাগ খেলা পুনরায় খেলা শুরু হয়। খেলায় ২৮ ডিসেম্বর আইন বিভাগ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। খেলা শেষে বিজয়ী আইন বিভাগের বিরুদ্ধে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া এক খেলোয়াড়কে খেলানোর অভিযোগ তুলে ব্যবস্থাপনা বিভাগ। 

অপর দিকে ২৯ ডিসেম্বর ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ও বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মধ্যে সেমিফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। খেলা শুরুর আগেই বায়োটেকনোলজি বিভাগের এক খেলোয়াড়ের ছাত্রত্ব নিয়ে আপত্তি জানায় ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের খেলোয়াড় ও শিক্ষকরা। কিন্তু অভিযুক্ত বিভাগগুলো থেকে খেলোয়াড়দের ছাত্রত্ব আছে মর্মে জোর দিয়ে বলা হলে সূচী অনুযায়ী খেলা অনুষ্ঠিত হয়। 

শারীরিক শিক্ষা বিভাগ জানায়, ক্রীড়া বিভাগের আপীল কমিটির কাছে আপীল করলে অভিযুক্ত ওই দুই বিভাগের দুই খেলোয়াড়ের ছাত্রত্ব ছিলনা বলে প্রমাণিত হয়েছে। ম্যাচ দুটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে আবারো নতুন করে খেলতে হবে। এখনো তারিখ ঘোষণা হয়নি। তবে আন্তঃহল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শেষে এই খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, খেলায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে খেলোয়াড় নামানোর ঘটনায় অভিযুক্ত বিভাগদুটির বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছে অভিযোগকারী বিভাগগুলো। কিন্তু কতৃর্পক্ষ কোন প্রকার শাস্তি না দিয়ে শুধু ম্যাচ পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে পুনরায় খেলার নির্দেশনা দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিযোগকারী বিভাগগুলোর শিক্ষক ও খেলোয়াড়রা। তারা ভবিষ্যতে এ ধরণের অনিয়ম রোধ করতে অভিযুক্ত বিভাগের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খেলাকে কেন্দ্র করে খেলার মাঠে ও ক্রীড়া কমিটির মিটিংয়ে দুই বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসৌজ্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। ক্রীড়া বিভাগের আপীল কমিটির মিটিংয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক শিক্ষক আইন বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন বলে অভিযোগ করেছে আইন বিভাগের শিক্ষকরা। এ ছাড়া সেমিফাইনাল ম্যাচে বায়োটেকনোলজি বিভাগের একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমরা দুইজন খেলোয়াড়ের ছাত্রত্ব ছিল না বলে প্রমাণ পেয়েছি। ফলে ম্যাচদুটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেছি। টুর্নামেন্টের ক্রীড়া আইনে কোনো শাস্তির বিধান না থাকায় অবিযুক্ত বিভাগগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারছি না।’