ইবিতে উচ্চ আওয়াজে বিঘ্নিত ক্লাস-পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ইবিতে উচ্চ আওয়াজে বিঘ্নিত ক্লাস-পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ইবিতে উচ্চ আওয়াজে বিঘ্নিত ক্লাস-পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সাউন্ডবক্সের উচ্চ আওয়াজে বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বিঘ্নিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার (১২ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বভাগের আয়োজনে পৌষ উৎসব উদযাপনে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে পৌষ উৎসব উদযাপন করে বাংলা বিভাগ।একইসময়ে পাশের অনুষদ ভবনে ছয়টি বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। ফলে অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে সাউন্ডবক্সের উচ্চ আওয়াজে পরীক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। একইসাথে বিভিন্ন বিভাগের ক্লাসেও বিঘ্ন ঘটে বলে জানা গেছে। 

এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরীক্ষায় মনোযোগ দিতে না পেরে শিক্ষকদের জানালেও তাৎক্ষণিক কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।  ফলে উচ্চ আওয়াজের মধ্যেই পরীক্ষা দিতে হয় তাদের। 

দাওয়াহ  অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল বাকী বলেন, 'আমাদের মাস্টার্সের ফাইনাল পরিক্ষা চলাকালে হঠাৎ অনুষদ ভবনের নিচে থেকে উচ্চশব্দে কনসার্ট শুরু হয়। শব্দে মনোযোগ নষ্ট হতে  থাকে৷ বেশি শব্দে মাথাব্যথা শুরু হলে কিছুক্ষণ কানে হাত দিয়ে বসেছিলাম৷ এতে পরিক্ষায় লিখতে খুবই সমস্যা হয়েছে৷  আমরা স্যারদের বিষয়টি জানালেও কোন সমাধান পাইনি। পরিক্ষা শেষে অন্য বন্ধুরা জানায় তাদেরও একই সমস্যা হয়েছে৷'

ফয়সাল আকবর নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, 'একদিকে আমাদের পরীক্ষা চলছে অন্যদিকে চলছে উচ্চস্বরে গানের আসরও। পরীক্ষা দিতে কমবেশি সবারই কষ্ট হয়েছে। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ফোন দেয়ার পরেও কোন প্রতিকার মিলেনি।'

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ফিরোজ আল মামুন বলেন, 'অনুষদ ভবনে আমাদের বিভাগের পরীক্ষা ছিল। আমি নিজেও পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলাম। উচ্চ আওয়াজের কারণে কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এভাবে একাডেমিক ভবনের পাশে উচ্চ আওয়াজে অনুষ্ঠান করা কতটা যৌক্তিক সেটা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। তারা চাইলে ক্লাস সময়ের পর বা অন্য কোন স্থানেও করতে পারতো।'

দাওয়াহ অ্যান্ড  ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. অলিউল্লাহ বলেন, 'সকালে অনুষ্ঠান শুরুর পরপরই আমরা প্রক্টরকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু আওয়াজ বন্ধ হয়েছে জোহরের নামাজেরও পরে। আমাদের নামাজেও ব্যাঘাত ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে খুবই কষ্ট হয়েছে।'

এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক. গাজী মাহবুব মুর্শেদ বলেন, 'অনুষ্ঠানটি বাংলা মঞ্চে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগের দিন রাতের বৃষ্টিতে মঞ্চ ভেজা থাকায় একাডেমিক ভবনের সামনে করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের উচ্চ আওয়াজে আমাদের শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয়েছে এটা খুবই দুঃখজনক। তবে আমাদেরকে যদি আরো আগে পরীক্ষার্থীদের সমস্যার বিষয়টি জানানো হতো তাহলে আমরা তখনই বন্ধ করে দিতাম।' 

প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'ওই বিভাগের অনুষ্ঠান করার কথা ছিল বাংলা মঞ্চে, তারা জানিয়েছে বৃষ্টির কারণে একাডেমিক ভবনের সামনে করেছে। আমাকে দুইটি বিভাগের সভাপতি ফোন দিয়ে উচ্চ আওয়াজের বিষয়টি জানালে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের পাঠিয়ে বন্ধ করিয়েছি এবং সাড়ে চারটার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার নির্দেশনা দিয়েছি।  আরো আগে জানতে পারলে আগে ব্যবস্থা নিতে পারতাম।'