গ্রীষ্মকালীন উন্নত জাতের পেঁয়াজের ফলন বিঘা প্রতি ১০০ মনের উপর

গ্রীষ্মকালীন উন্নত জাতের পেঁয়াজের ফলন বিঘা প্রতি ১০০ মনের উপর

গ্রীষ্মকালীন উন্নত জাতের পেঁয়াজের ফলন বিঘা প্রতি ১০০ মনের উপর

দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বনির্ভর করতে নতুন উদ্ভাবন শুরু করা হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন উন্নত জাতের পেঁয়াজের ফলন বিঘা প্রতি ১০০ মনের উপর উৎপাদন হবে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সিটিটিউট,পাবনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রোববার মোঃ রবিউল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে  জানান, বর্তমান দেশে তাহেরপুর বারি-১ জাতের পেঁয়াজ আবাদ হচ্ছে। এ জাতের চেয়ে বারি-২,৩,৪ ও ৫ জাতের ফলন অনেক বেশি। কিন্তু এসব জাতের আবাদ এখনো কৃষক শুরু করেনি। তিনি বলেন, বর্তমান দেশে শুধু শীতকালীন পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে; যা বিঘা প্রতি ৫০ থেকে ৭০ মন  পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। আর বারি-৫ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর ফলন এতটাই বেশি যে কৃষক এর মজা পেয়ে গেলে এ জাতের প্রতি তখন ঝুঁকে পড়বে বেশি। প্রতি বিঘায় এর ফলন ১০০ (একশত) মনের উপর। তিনি জেলার সুজানগরে পেঁয়াজ মাঠ পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে বলেন,‘ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সিটিটিউট এর উদ্ভাবনী শীতকালীন উন্নত জাতের পেঁয়াজ মনমুগ্ধ করে তুলেছে। অত্যন্ত আকর্ষণীয় মনমাতানো পেঁয়াজ মাঠ কৃষকদের উৎফুল্ল করে তুলেছে।  বিশেষজ্ঞরা গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদের প্রতি আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন।

প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিকে আরো জানান,“বাংলাদেশকে পেঁয়াজের উদ্বৃত্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কৌশলের অংশ হিসেবে সরকার পেঁয়াজ উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে। সরকার আগামী দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বনির্ভর করতে চায়, যদিও তা অর্জন করতে কমপক্ষে পাঁচ/ছয় বছরে অধিক সময় প্রয়োজন।’ এই ধরণের একটি মাইলফলক অর্জনের জন্য একটি পাঁচ/ছয় বছরের রোডম্যাপ প্রয়োজন; কারণ নতুন জাত উদ্ভাবন সময়সাপেক্ষ। ইতোমধ্যেই উদ্ভাবনের কার্যক্রম শুরুও হয়েছে।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পুনর্ব্যক্ত করেন,"দেশে বর্তমান প্রায় ১১ লক্ষ টন টন পেঁয়াজ ঘাটতি আছে। সরকারের নির্দেশানুযায়ী আমাদের সারা বছরের জন্য পেঁয়াজের উৎপাদন প্রয়োজন এবং এজন্য আমাদের নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে।" নতুন ও উন্নতজাত অবমুক্ত করতে সময় লাগবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আরো বলেন,‘বাংলাদেশের মধ্যবর্তী এলাকাগুলো পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য আদর্শ জেলাগুলোর ওপরও জোর দেয়া হয়েছে। পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, মাগুরা, মাদারীপুর ও রাজশাহীসহ বর্তমানে নয়টি জেলায় প্রায় ৮০ শতাংশ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এর সাথে আরো জেলা সংযুক্ত করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ 

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন,‘চলতি বছর শীতকালীন ৬ লাখ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যে ৫২ হাজার ৪শ’৩২ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পেঁয়াজ লাগানো প্রায় শেষের দিকে। পুরো জানুয়ারি মাস ধরেই লাগানোর কাজ চলবে।