আপাতত বাড়ছে না গ্যাসের দাম

আপাতত বাড়ছে না গ্যাসের দাম

আপাতত বাড়ছে না গ্যাসের দাম

সব শ্রেণীর গ্রাহকের গ্যাসের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। তবে এ প্রস্তাব বিধিসম্মত না হওয়ায় আমলে নেয়নি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।বুধবার বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিইআরসির কর্মকর্তারা জানান, গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করতে হলে প্রবিধানমালা মেনে প্রস্তাব জমা দিতে হবে। বিতরণ কোম্পানি তা মানেনি। নিরীক্ষা প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় নথি জমা দেয়নি। তাই তাদের নিয়ম মেনে আবেদন করতে বলা হয়েছে।

এর আগে সব শ্রেণীর গ্রাহকের গ্যাসের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। আবাসিক গ্রাহকের ব্যবহৃত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৯ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে ২০ টাকা ৩৫ পয়সা এবং শিল্পে ব্যবহৃত প্রতি ঘনমিটারের গ্যাসের দাম ১০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩ টাকা ২৪ পয়সা নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

একই সাথে ক্যাপটিভে (শিল্পকারখানায় নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাস) ১৩ টাকা ৮৫ পয়সার স্থলে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানির মধ্যে তিনটি তিতাস, বাখরাবাদ ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি গত সপ্তাহে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) পৃথকভাবে এই প্রস্তাব জমা দিয়েছে।

বাকি তিনটি কোম্পানির প্রস্তাব জমা দেয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ প্রস্তাব আমলে নিলে আবাসিকে এক চুলা ৯২৫ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার টাকা এবং দুই চুলার ক্ষেত্রে ৯৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ১০০ টাকা হবে। পেট্রোবাংলার এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

এ দিকে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আবারো মানুষের আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনিতেই গত দুই বছরে করোনার প্রাদুর্ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা ছিল। এ অবস্থায় গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে সব শ্রেণীর পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। একই সাথে আবাসিকে গ্রাহকদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিতরণ কোম্পানিগুলো অতীতে একবারে গ্যাসের দাম এত বৃদ্ধির প্রস্তাব করেনি। এমনিতেই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সবশ্রেণীর ভোক্তা ও শিল্প উদ্যোক্তারা নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে শিল্পোক্তাদের মুনাফার মার্জিন কমিয়ে পণ্য রফতানি করছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বিদ্যুতের দামও বেড়ে যাবে। একদিকে গ্যাসনির্ভর শিল্পগুলোর ব্যয় বেড়ে যাবে, একই সাথে বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেলে পণ্যের উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাবে। এতে পণ্যমূল্য আরো বেড়ে যাবে। এতে সাধারণের দুর্ভোগ যেমন বাড়বে, তেমনি উদ্যোক্তারাও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।