মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের

মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের

মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের

মিয়ানমারের জনসাধারণের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশটির সামরিক জান্তাকে চাপ দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ।শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাশেলে এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের এক বছর পরেও, জীবন ও স্বাধীনতা হারানোর উচ্চ মূল্যের বিনিময় দিয়ে আসা মিয়ানমারের জনগণ তাদের গণতন্ত্রের জন্য নিরলস প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে।’

তিনি বলেন, জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক দেশগুলোর সহযোগিতা সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনসের (আসিয়ান) নেয়া পদক্ষেপ মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে সহিংসতা বন্ধে বাধ্য করার জন্য যথেষ্ট নয়।

তিনি বলেন, ‘এখনই সময় মিয়ানমারে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নতুনভাবে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়।’

ব্যাশেলে বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ মিয়ানমারে সংখ্যালঘিষ্ঠ জনসাধারণ সামরিক জান্তার হাতে নিপীড়ন ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতার শিকার হয়ে আসছে।তিনি বলেন, ‘এবং তা সত্ত্বেও সাহসী মানবাধিকার রক্ষাকারী কর্মী ও ট্রেড ইউনিয়নিস্টরা বিক্ষোভ, প্রচারণা এবং সহিংসতার প্রমাণ সংগ্রহ করে আসছে।’

২০২০ সালে নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদা। অভ্যুত্থানের জেরে প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। পরে ১ আগস্ট জরুরি অবস্থার মেয়াদ ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেন জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং লাইং।

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া অহিংস বিক্ষোভকে সামরিক উপায়ে জান্তা সরকার দমন করতে গেলে বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র হাতে নেয়।

গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট দেশের সাধারণ মানুষকে সামরিক জান্তার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা দেয়।

মিয়ানমারের অবস্থা পর্যব্ক্ষেণকারী থাইল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) তাদের শুক্রবারের প্রতিবেদনে জানায়, ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে তিন শ’ ৬২ দিনে দেশটিতে বিক্ষোভে সামরিক জান্তার দমন অভিযানে মোট এক হাজার চার শ’ ৯৯ জন নিহত হয়েছেন। অপরদিকে, বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় সামরিক জান্তার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ১১ হাজার আট শ’ ১০ জন।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি