দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর এখনো থমথমে পরিস্থিতি

দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর এখনো থমথমে পরিস্থিতি

ছবি : প্রতীকি

ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মুসলিম অধ্যুষিত একটি এলাকার ভেতর দিয়ে হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রা যাওয়ার সময় সেখানকার মসজিদে গেরুয়া পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতীয় মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, হনুমান জয়ন্তীকে ঘিরে দিল্লিতে দুই সম্প্রদায়েক মধ্যে সংঘর্ষ হয় শনিবার বিকেলে। ওই ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাস্তায় নামানো হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। কয়েক শ' পুলিশ কর্মকর্তা নিজেরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। এরই মাঝে এবার শুরু হয়েছে একে অপরকে দোষ দেয়ার পালা। আর এই পরিস্থিতিতে আম জনতার মধ্যে আতঙ্কের সঞ্চার ঘটেছে। কোনো দোকান খোলা তো দূরে থাক, এই গরমের মধ্যেও এলাকায় প্রায় কোনো বাড়িতেই জানালা পর্যন্ত খোলা নেই। এদিকে এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, অমিত শাহ পুলিশ কমিশনার ও স্পেশাল কমিশনারের সাথে কথা বলেছেন।

জানা গেছে, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয় দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীতে। ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করে চলেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে মুসলিমরা পাথর ছুড়েছিল মিছিলে। এদিকে এলাকার স্থানীয় মুসলিমদের দাবি, মিছিলে থাকা হিন্দুরা উস্কানিমূলক স্লোগান তুলে সহিংসতার প্ররোচণা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই তরফের থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু ভিডিও প্রকাশ করে বিভিন্ন দাবি করা হয়েছে। সেগুলির কয়েকটিই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এদিকে দুই পক্ষেরই বেশির ভাগ মানুষের দাবি, ‘বহিরাগতদের’ মদতেই এই সহিংসতা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরপুরীর মুসলিম অধ্যুষিত ব্লকের এক বাসিন্দা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, দুপুর দেড়টার সময় একটি মিছিল গিয়েছিল। তারা শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে এরপর বিকেল সাড়ে পাঁচটার সময় আরো একটি মিছিল যায়। সেখান থেকেই সহিংসতার সূত্রপাত। ওই স্থানীয় বাসিন্দার বক্তব্য, ‘সব বহিরাগতরা ছিল সেই মিছিলে (বিকেল সাড়ে পাঁচটার মিছিলে)। বলা হচ্ছিল যে আমাদেরও রাম রাম স্লোগান তুলতে হবে। তারপরও আমরা বিষয়টিকে পাত্তা দিচ্ছিলাম না। এরপর আমাদের ব্লকে ঢুকে মসজিদে গেরুয়া পতাকা লাগাতে শুরু করে কয়েকজন। এরপরই সংঘর্ষ হয়।’

এদিকে জাহাঙ্গীপুরীর হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার এক রিক্সা চালক দাবি করেন, মিছিল যখন মসজিদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময় তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া শুরু হয়। এরপরই সংঘর্ষ হয় বলে তার দাবি। এরপর নাকি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় দোকানে তাণ্ডবলীলা চালানো হয়। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তবে কী কারণে সংঘর্ষ বেঁধেছে, তা নিয়ে এখনও পুলিশ কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস