ব্যতিক্রমী আয়োজনে পাবিপ্রবির ট্যুরিজম বিভাগে নবীন বরণ সম্পন্ন

ব্যতিক্রমী আয়োজনে পাবিপ্রবির ট্যুরিজম বিভাগে নবীন বরণ সম্পন্ন

ছবি: প্রতিনিধি

পাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট (টি এইচ এম)  বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার (২৩মে) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের "গ্যালারি-২" -তে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বিভাগের শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাচের ছাত্র-ছাত্রীরা।  পরে বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে যারা বিভিন্ন বর্ষে মেধাতালিকায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন তাদেরকে বই উপহার প্রদান করা হয়। এরপর অলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

বিভাগের সভাপতি  ড. মোঃ আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সভাপতি ড. মোঃ মুশফিকুর রহমান। প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী মারুফা তিশার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বিভাগের শিক্ষক এস এম শাহেদুল আলম, মোঃ আশিকুর রহমান অভি ও শ্রাবণী বাগচী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান নবীন শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তোমরা অনেক প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছো।বিশ্ববিদ্যালয় মুক্ত জ্ঞান চর্চা করার জায়গা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ভালো ভালো  কাজের ক্ষেত্র আছে যেখানে তোমরা তোমাদের মেধাকে আরো বিকশিত করতে পারবে।এখানের সুযোগ-সুবিধাগুলো কাজে লাগিয়ে তোমরা জাতীয় ও  আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদেরকে প্রকাশ করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি যে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে ভালো করবে আর যে জিপিএ-৪ পেয়েছে সে ভালো করবে না বিষয়টা এমন নয়,কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখা পড়ার ধরণ স্কুল-কলেজের মত নয় এখানে সেই শিক্ষার্থী ভালো করবে যে বেশি বেশি গবেষণা ও লাইব্রেরী স্টাডি করবে এবং সার্বক্ষণিক শিক্ষক ও সিনিয়রদের থেকে পরামর্শ নিবে।

বিভাগের শিক্ষকদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে,এস এম শাহেদুল আলম শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিতে দক্ষ হতে  গুরুত্ব দিয়ে বলেন,আমরা বর্তমানে ২০২২ সালে দাঁড়িয়ে আছি এই মুহূর্তে প্রায় ৬.৬১ বিলিয়ন মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করছি আর আপনারা যখন ২০২৫ সালে গ্রাজুয়েট হয়ে বের হবেন তখন এই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৭.৭৩ বিলিয়নে।বর্তমানে স্মার্টফোন কে কেন্দ্র করে আমরা যে টেকনোলজি দেখতে পাচ্ছি এই জায়গা গুলো কে কেন্দ্র করে মূলত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হবে আর এই শিল্প বিপ্লবের জন্য যদি নিজেকে একজন যুগোপযোগী ও দক্ষ কর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে চান তাহলে নিজেকে অবশ্যই টেকনোলজিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

মোঃ আশিকুর রহমান অভি তার বক্তব্যে বলেন,আপনারা যে বিভাগে ভর্তি হয়েছেন সেটি বাংলাদেশের মধ্য অন্যতম সেরা একটি বিভাগ।এই বিভাগে পড়ার অনেকগুলো সুবিধার মধ্যে রয়েছে বিদেশে যেয়ে ইন্টার্নি করার সুযোগ। ইন্টার্নশিপ শেষ করার পর তারাই আপনাদের জব অফার করবে।আর এই একটা ইন্টার্নশিপের মধ্য দিয়ে আপনি খুব সহজেই আইএলটিএস বা কোন ফরমালিটিজ ছাড়াই  প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন অথবা  সেখান থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরে যেকোনো একটা ফাইভ স্টার  হোটেলে জেনারেল ম্যানেজার হয়ে যেতে পারবেন।

শ্রাবণী বাগচী তার বক্তব্যে বলেন, আপনাদের সফলতা বা স্বপ্ন বলেন তার প্রথম ধাপ বিশ্ববিদ্যালয়। আপনারা এখানে অনেক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একটা আসন পেয়েছেন । এখানে আপনাদের নিজেদের লক্ষ ঠিক করে সেই পথেই আগাতে হবে মাঝি ছাড়া যেমন একটা নৌকা সঠিক গন্তব্যে  যেতে পারে না ঠিক তেমনি জীবনে একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য না থাকলে সফল হওয়া যায় না। আপনারা আপনাদের সব ধরনের সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসতে পারেন আমারা সব সময় আপনাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিবো এবং পাশে থাকবো।

সভাপতির বক্তব্যে বিভাগের সভাপতি ড. মোঃ আমিরুল ইসলাম নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন,তোমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রতি মায়া ও ভালোবাসা থাকতে হবে এবং বড়দের সম্মান করতে হবে। তিনি সিনিয়র শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন,নতুন জায়গায় এসে নবীন শিক্ষার্থীরা যেন অভিভাবক বা আত্মীয়তার অভাব বোধ না করে সেজন্য তাদের প্রতি তোমাদের  স্নেহ ও ভালোবাসা দিতে হবে।

এছাড়া,প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাবিনা খাতুন ,মোঃ সোহান ও আলিফ হৃদয়  দ্বিতীয় ব্যাচ থেকে মৌমিতা বাগচী এবং তৃতীয় ব্যাচ থেকে আবরার ফাহিম নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভা শেষে বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।