পাবিপ্রবিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ মূলক অনুষ্ঠান

পাবিপ্রবিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ মূলক অনুষ্ঠান

ছবি- নিউজজোন বিডি

পাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃপাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া পদক প্রাপ্ত বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা আক্তার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান।

শুক্রবার (৩ জুন) বিকেল ৪টায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(পাবিপ্রবি)  উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের সভাপতিত্বে এবং মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুল্লাহর সঞ্চালনায় বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যালারি -২’তে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।নীরবতা পালন শেষে  প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া ও পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য তাঁর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা আক্তার বলেন, আমাদের একটি শব্দ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জেগে উঠেছিল এবং বাঙালি জাতি একত্রে মিলিত হয়েছিল। হাজারো মা বোনেরা সেদিন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু অনেক মা বোন তাঁদের স্বীকৃতি পাননি। মুক্তিযুদ্ধ একটি নিরবচ্ছিন্ন, একটি ইতিহাস ও মহাকাব্যিক শব্দ। শব্দটিকে স্মরণ করলে আমরা শক্তি পাই, সাহস পাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের সবার ভিতরে থাকতে হবে। সামনে তাকাতে হলে আমাদের পেছনের ইতিহাসও স্মরণ করতে হবে।

এসময় তিনি আরও বলেন, আমি জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে অনেক স্নেহ পেয়েছি। উনার ভেতরে যে সরলতা ছিলো তা অন্য কোন নেতার মধ্যে ছিলোনা। স্মৃতিশক্তি ছিলো অনেক প্রখর। সব কথাই উনার মনে থাকতো। এদেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা ছিলো অকৃত্রিম। অথচ পঁচাত্তরে এদেশের কিছু মানুষ এই মহান নেতাকে হত্যা করে। যেটা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জার একটি অধ্যায়।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান তার বক্তব্যে বলেন, আমি এদেশের মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি কিন্তু গতশতাব্দীর শেষের দিকে বেড়ে উঠার কারণে যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখেছি। আমি যুদ্ধ বিধস্ত অনেকগুলো দেশে ভ্রমণ করে দেখেছি ছেলেহারা মায়ের আর্তনাদ, স্বামী হারা স্ত্রীর বেদনা। সেই কারণে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা অনেকটাই আমি উপলব্ধি করতে পারি। এদেশের মানুষ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করেছিলো কিন্তু পচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর এদেশের মানুষের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি দেখা দেয়। আজকেও সেই দ্বিধাবিভক্তি বিরাজমান। আমাদেরকে এই দ্বিধাবিভক্তি জাতিগঠনে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন অনুষ্ঠানে সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আজ আমাদের জন্য একটি বিশেষ ও আনন্দের দিন কারণ একাত্তরের রণাঙ্গনের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমাদের সামনে এদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেছেন। আমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের উপর বেশি বেশি আলোচনা করতে হবে। তাহলে নতুন প্রজন্ম আমাদের বীরত্বগাঁথা সংগ্রামের কথা জানতে পারবে।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।