নড়াইলে ফেসবুক পোষ্টকে কেন্দ্র করে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা

নড়াইলে ফেসবুক পোষ্টকে কেন্দ্র করে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা

নড়াইলে ফেসবুক পোষ্টকে কেন্দ্র করে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টকে কেন্দ্র করে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়ি, দোকান ও মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় লোহাগড়ার দীঘলিয়া গ্রামের সাহা পাড়ায় হামলার ওই ঘটনা ঘটলেও দিনভর বিষয়টি নিয়ে সেখানে উত্তেজনা চলেছে।এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা শেখ আবু হেনা মিলন বিবিসিকে বলেছেন, দীঘলিয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ এবং র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে, এবং এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।ঘটনার পর ওই এলাকার বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।তবে এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা দায়ের হয়নি। পুলিশ কর্মকর্তা মি. মিলন বলেছেন, আটক ব্যক্তি অভিযুক্ত ছেলেটির বাবা।

নড়াইলে মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই ইসলামের নবীকে নিয়ে মন্তব্যের জন্য সমালোচিত ভারতের বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার সমর্থনে ফেসবুকে এক কলেজ ছাত্রের পোস্টকে কেন্দ্র করে কলেজটির অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ সেসময় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছিল।

সবশেষ লোহাগড়ার ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে পুলিশ বলছে, বৃহস্পতিবার সেখানকার এক কলেজ ছাত্রের ফেসবুক আইডি থেকে ইসলামের নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে একটি পোষ্ট দেয়া হয়। তবে পোষ্টটি আসল কিনা - তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। যার ফেসবুক আইডি থেকে পোস্টটি দেয়া হয় তিনি এখন পলাতক রয়েছেন।এই পোষ্টটি নিয়েই শুক্রবার জুমার নামাজের সময় থেকে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর সন্ধ্যায় হামলা ভাঙচুর শুরু হয়ে তা রাত প্রায় সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চলে।

এরপর পুলিশ এসে ফাঁকা গুলি এবং কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। হামলাকারীদের 'চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে' বলে জানিয়েছে পুলিশ।কর্মকর্তারা বলছেন, এলাকার লোকজন জানিয়েছে তারা হামলাকারীদের চেনেন না। ফলে পুলিশ এখন ঘটনার সময়কার ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হামলা ও অগ্নিসংযোগকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।

পুলিশ কর্মকর্তা মি. মিলন বলেছেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।ফেসবুক পোষ্টের মাধ্যমে কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িঘর, দোকানপাট এবং উপাসনালয়ের ওপর হামলার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।

সূত্র :  বিবিসি