তিস্তায় পানি বৃদ্ধি : লালমনিরহাটে ১০ স্কুলে পাঠদান বন্ধ

তিস্তায় পানি বৃদ্ধি : লালমনিরহাটে ১০ স্কুলে পাঠদান বন্ধ

সংগৃহীত

তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন করে বন্যায় লালমনিরহাটের ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লালমনিরহাটের জেলা সদর, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও পাটগ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এই পাঁচ উপজেলায় বন্যায় বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

বুধবার সকাল ৯টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌল্লা বলেন, ভোর থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী জানান, বন্যায় জেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত মঙ্গলবার থেকে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। পানি কমলে আবার যথারীতি নিয়মে চলবে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, গড্ডিমারী ইউনিয়নের চার ওয়ার্ডে প্রায় দু’হাজার পরিবার গত দু’দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছেন। পরিবারগুলোর তালিকা করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়নি।

এদিকে আদিতমারী উপজেলার সলেডি স্পার-২ এলাকায় তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে তিস্তা পাড়ের লোকজন অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকেই তাদের গবাদিপশু নিয়ে উঁচু স্থানে গাদাগাদি করে অবস্থান করেছেন। উপজেলার কালমাটি এলাকার গত দু’দিনে প্রায় ৩০ পরিবারের বাড়িঘর নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছেন। পরিবারগুলো বাড়িঘর হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সেই সাথে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রটি যাওয়ার রাস্তায়ও হাটু পরিমাণ পানি উঠায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে বানভাসি মানুষদের।

মহিষখোচা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মতিয়ার রহমান মতি বলেন, হঠাৎ করে রাতেই তিস্তায় পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এখানকার বাসিন্দারা। এবারের বন্যা সবচেয়ে ভয়াবহ। এর আগে আর কখনো এমন বন্যা দেখা দেয়নি। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো: আবু জাফর বলেন, বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর সার্বক্ষণিক খোঁজ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে তিন হাজার প্যাকেট বরাদ্দ করা হয়েছে তা দ্রুত বিতরণ করা হবে।

সূত্র : ইউএনবি