ইবি ছাত্রী ঊর্মীকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী ও শ্বশুর আটক

ইবি ছাত্রী ঊর্মীকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী ও  শ্বশুর আটক

ইবি ছাত্রী ঊর্মীকে হত্যার অভিযোগ, স্বামী ও শ্বশুর আটক :ছবি- নিউজজোন বিডি

ইবি প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীতে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ওই ছাত্রীর নাম নিশাত তাসনীম ঊর্মী (২৪)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও গাংনী উপজেরার চাদপুর গ্রামের বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় স্বামী ও শ^শুরকে আটক করা হয়েছে। এরআগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিশাতের বাবা গোলাম কিবরিয়ার দাবি, ঊর্মীকে শ^শুরবাড়ির লোকজন কর্তৃক হত্যা করা হয়েছে। পরে একে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। তিনি বলেন, রাতে শ্বশুর হাসেম শাহ্ মোবাইল ফোনে ঊর্মী অসুস্থ হওয়ায় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে বলে জানান। অসুস্থতার কারণ হিসেবে জানালার সাথে ফাঁস নিয়েছে বলে জানানো হয়। কিন্তু হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক জানান ঊর্মী অনেক আগেই মারা গেছেন।  তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। 

সহপাঠীরা জানান, প্রেমের সম্পর্কের পর কলেজে পড়া অবস্থায় গাংনীর পদ্মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী হাশেম শাহ্ এর ছেলে আশিকুজ্জমান প্রিন্সকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে ঊর্মী। তাদের ঘরে আবনাব আবির প্রত্যয় নামে ১৩ মাস বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। স্বামী প্রিন্স নেশাগ্রস্থ হওয়ায় প্রায়ই ঝামেলা হতো এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার করতেন।

এ ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা করলেও পরে ঊর্মী বাবার হত্যা মামলার পর স্বামী প্রিন্স ও শ^শুর হাশেম শাহকে আটক করেছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের পর বিকেলে দাফন সম্পন্ন হয়। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ ঊর্মীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। উর্মীর বাবা হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা অভিযুক্ত প্রিন্স ও তার বাবাকে আটক করেছি। যদিও প্রিন্স হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। যৌতুকের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা অনুমান করছি।’

এ দিকে, ঊর্মীর মৃত্যুর বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিকেলে গাংনী বাসস্ট্যান্ড ও প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তার সহপাঠীরা। তারা বিচার দাবি করে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। তার স্কুল, কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ের সহপাঠীরা এতে অংশ নেন। ঊর্মীর মৃত্যুতে স্বজন ও বিশ^বিদ্যালয় পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন, বিভিন্ন বিভাগ, শাখা ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন ও সমিতি এবং স্বেচ্ছাসেবী  ও সামাজিক সংগঠন শোক প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন।

ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ড. মিঠুন মোস্তাফিজ বলেন, ‘মেধাবী শিক্ষার্থীর এমন অকাল মৃত্যু খুবই কষ্টের। বিভাগ ও সহপাঠীরা শোকে মুহ্যমান। আমরা সজাগ দৃষ্টিতে মনিটর করছি। মেহেপুরের পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা হচ্ছে। ন্যয় বিচার নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার সবটুকু করবো।’