কঠিন হলো বাংলাদেশের সেমিফাইনাল স্বপ্ন

কঠিন হলো বাংলাদেশের সেমিফাইনাল স্বপ্ন

ফাইল ছবি

ভারতকে হারিয়ে সেমিফাইনালের  পথে অনেকটা এগিয়ে গেল আফ্রিকা। সেই  সাথে ভারতের হারে ধূসর হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সেমিফাইনাল স্বপ্ন। দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের ফলে দুই দলের জন্যই কঠিন হলো সেমিফাইনালে যাবার সমীকরণ। তাই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া সত্বেও আজ ভারতের জয় চেয়েছিল বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয় দল।

রোববার প্রথমে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৩৪ রানের ছোট লক্ষ্য দেয় ভারত, তবুও ব্যাট করতে নেমে কেঁপে উঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর্শদ্বীপ সিংয়ের নিয়ন্ত্রিত পেসে শুরুতেই ভাঙন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডারে। মাত্র ৩ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। কুইন্টন ডি কককে ফেরানোর এক বল পরে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রাইলি রুশোও ফিরেন আর্শদ্বীপের শিকার হয়ে।

কুইন্টন ডি ককে রানের খাতা খুললেও রুশো ফিরেন শূন্য রানে। সেখান থেকে বাভুমাকে সাথে নিয়ে মার্করাম ইনিংস এগিয়ে নিতে চাইলে এবার বাঁধা হয়ে দাঁড়ান মোহাম্মদ শামি, টেম্বা বাভুমাকে ফেরান তিনি। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ছিলো মাত্র ২৪ রান।

পরের উইকেট পেতে ভারতের অপেক্ষা ১৫.৪ ওভার পর্যন্ত। ৪১ বলে ৫২ করে এবার ফিরেন মার্করাম। মূলত, বাভুমা ফিরে গেলে ডেভিড মিলারকে নিয়ে লক্ষ্য পানে এগিয়ে যান মার্করাম। শুর‍ুটা সাবধানী হলেও ফলে সময়ের সাথে সাথে আগ্রাসী হয়ে উঠেন দু'জনে। মার্করাম যখন ফিরেন দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ২৬ বলে ৩৭ রান।

তবে সেই রান আর ভয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। ডেভিড মিলারের ব্যাটে সব শঙ্কা উড়িয়ে দেয় তারা। শেষ পর্যন্ত ২ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় তারা। টানটান উত্তেজনার শেষাংশে ৪৬ বলে ৫৯ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েই ক্ষান্ত হন ডেভিড মিলার।

এদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে লুঙ্গি এনগিডি হুমকি দিয়েছিলেন, ‘পেস দিয়ে ধ্বসিয়ে দিবেন।’ তবে সেই ম্যাচে আর খেলা হয়নি তার। আজ যখন একাদশে সুযোগ পেলেন, সেই দিনের দেয়া কথা রাখলেন। ভারতকে একাই কাঁপিয়ে দিলেন। ২৯ রানে ৪ উইকেট শিকার করে ভারতকে মাত্র ১৩৩ রানেই থামিয়ে দেন লুঙ্গি এনগিডি।

আজ শুরু থেকেই ভারতকে চাপে রাখে দক্ষিণ আফ্রিকা। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত প্রথম রানের দেখা পায় ১০ বলের মাথায়। রাবাদা-পার্নেল জুটির প্রথম স্পেল শেষে পঞ্চম ওভারে বল হাতে আসেন লুঙ্গি এনগিডি। এই ওভারেই লুঙ্গি এনগিডি ফিরিয়ে দেন ভারতের দুই ওপেনারকেই।

১৪ বলে ১৫ করে ফিরেন রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল করেন ১৪ বলে ৯ রান। পরের ওভারে এসে ভারতের এনগিডি উঠিয়ে নেন ভারতের ব্যাটিং স্তম্ভকে, বিরাট কোহলিকে সাজঘরে পাঠান ১২ রানে। পরের ওভারে এসে বিগ ফিশ হার্দিক পান্ডিয়াকেও তুলে নেন লুঙ্গি এনগিডি। তার আগ্রাসী বোলিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে ভারত। মাঝে এনরিখ নর্টজে দীপক হোডাকে ফিরিয়ে দিলে ৯ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাড়ায় ৫ উইকেটে ৫১ রান।

ইনিংসের প্রথমার্ধের সেরা লুঙ্গি এনগিডিকে ছাপিয়ে এবার দ্বিতীয়ার্ধে মূল চরিত্রে আসেন সূর্য কুমার যাদব। এনগিডি থেকে এবার সমস্ত ফোকাসটা নিজের করে নেন এই ভারতীয় ব্যাটার। সময়ের সাথে সাথে নিজেকে অন্য মাথায় নিয়ে যাওয়া ভারতের ৩৬০° খ্যাত সূর্য কুমার আজ আরো একবার ত্রাতার ভূমিকায়।

৬ চার আর ৩ ছক্কায় ৪০ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলে সূর্য কুমার যখন ফিরলেন সাজঘরে, ততক্ষণে ভারত তাদের সম্মান বাঁচিয়ে উঠেছে। অষ্টম উইকেট হয়ে সূর্য কুমার ফেরার সময় ১৮.৫ ওভারে দলের রান তখন ১২৭। মাঝে দীনেশ কার্তিক ১৫ বলে ৬ ও আশ্বিন করেন ১১ বলে ৭ রান। সূর্য কুমারের পরে ব্যাট করতে নামা কেউ দুই অংকের ঘর স্পর্শ করতে পারেনি, ৪১ বল খেলে তাদের সম্মিলিত রান ২১।