হ্যালোউইন ট্র্যাজেডি : দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশপ্রধানের দফতরসহ ৫৫টি অফিসে হানা

হ্যালোউইন ট্র্যাজেডি : দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশপ্রধানের দফতরসহ ৫৫টি অফিসে হানা

হ্যালোউইন ট্র্যাজেডি : দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশপ্রধানের দফতরসহ ৫৫টি অফিসে হানা

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে হ্যালোউইন উৎসবের সময় পদদলিত হয়ে দেড় শ’র বেশি মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্তের অংশ হিসেবে কর্মকর্তারা মঙ্গলবার অন্তত ৫৫টি অফিসে হানা দিয়েছেন।এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশ প্রধান জেনারেল ইওন হি-কিউনের দফতরও রয়েছে।সিউলের কেন্দ্রে ইতেওনে ২৯ অক্টোবর রাতে হাজার হাজার মানুষ যখন একটি সরু গলি দিয়ে যাচ্ছিল, তখন সেখানে ভিড়ের চাপে পদদলিত হয়ে ১৫৬ জন নিহত হয়।

তদন্ত কর্মকর্তারা পুলিশ প্রধানের দফতর ছাড়াও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা এবং ফায়ার সার্ভিসের প্রশাসনিক দফতরেও যান। তারা ইতেওন সাবওয়ে স্টেশন এবং সোলের মেট্রো পরিবহন ব্যবস্থার সদর দফতরেও হানা দেন।সিউলে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর সমালোচনা হয়েছিল যে পুলিশ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এরকম একটি ঘটনার সময় যথাযথভাবে সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়েছিল।

এই দুর্ঘটনায় নিহতদের জন্য দেশজুড়ে যে জাতীয় শোক পালন করা হয়, সেটি শেষ হওয়ার পর মানুষ এখন এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার দাবি জানাচ্ছে।মঙ্গলবার তদন্তকারীরা যেসব জায়গায় অভিযান চালান, তার মধ্যে ছিল সিউলের আটটি পুলিশ স্টেশন। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন।

তদন্তকারীরা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্য দুটি- প্রথমত, হ্যালোউইনের সেই উৎসবের রাতে পুলিশ বিশাল ভিড় সামলাতে কতটা প্রস্তুতি আসলে নিয়েছিল, বা আদৌ নিয়েছিল কিনা।আর দ্বিতীয়ত, সেই রাতে মানুষ যখন সাহায্য চেয়ে ফোন করছিল, তখন পুলিশ কতটা দ্রুত বা কার্যকর সাড়া দিয়েছিল।

এটিকে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ায় যখন মানুষের মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে, তখন এই ঘটনার আরো বৃহত্তর তদন্তের দাবি উঠছে।দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশপ্রধান সোমবার স্বীকার করেন যে, হ্যালোউইন উৎসবের রাতের এত মৃত্যুর জন্য তিনি তার ‘বিরাট দায়’ স্বীকার করেন।

ব্যাপক ক্ষোভ
ইতেওনের এই দুর্ঘটনা ছিল দক্ষিণ কোরিয়ায় গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর এক ট্রাজেডি।এ নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ কতটা ব্যাপক এবং তীব্র তার প্রকাশ দেখা গেছে গত শনিবার রাজধানী সিউলে নিহতদের স্মরণে আয়োজিত বড় কিছু শোকসভায়। হাজার হাজার মানুষ এগুলোতে যোগ দিয়েছিলেন।আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে দেশটির খ্যাতি বা পরিচিত তারুণ্যনির্ভর এবং কে-পপ সঙ্গীত চালিত সংস্কৃতির জন্য, সেই দেশটিই তাদের তরুণদের রক্ষায় এমন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে- এটিকে এক বিরাট লজ্জার ব্যাপার বলে মনে করছেন বহু মানুষ।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুনের বিরুদ্ধে এই ট্রাজেডির পর নিয়মিত বিক্ষোভ চলছে। আর এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছে প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর একটি জোট, ‘ক্যান্ডেল-লাইট একশন’।হাজার হাজার মানুষ শনিবার তাদের সমাবেশে যোগ দিয়েছিল। সেখানে জনতাকে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সূত্র : বিবিসি