বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে মধ্যম-আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া একমাত্র দেশ : হাস

বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে মধ্যম-আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া একমাত্র দেশ : হাস

বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে মধ্যম-আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া একমাত্র দেশ : হাস

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ বলেছেন, নতুন নতুন ব্যবসায় উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি নারীদের পেশাগত উন্নয়নের মধ্যদিয়ে একটি নগর শিল্পায়ন ও মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়ে- বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে ‘অনন্য অবস্থান’ অর্জন করে নিয়েছে।তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বল্প আয়ের দেশ থেকে উত্তরণ ঘটিয়েছে এবং তৈরি পোশাক খাতের শ্রমশক্তিতে বিপুল সংখ্যক নারী কর্মী নিয়োজিত করেছে। তবে এ খাতে নারীদের নেতৃত্বের ভূমিকায় আসতে এখনো আরো বেশকিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।’

রাষ্ট্রদূত রাজধানীর ধানমন্ডির ইএমকে সেন্টারে মার্কিন দূতাবাসের সহায়তায়, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অর্থায়নে ও ব্র্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় আয়োজিত ‘অ্যাকাডেমি ফর উইম্যান এন্টারপ্রাইজ (এডব্লিউই)’র ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে একথা বলেন।হাস বলেন, ক্রমবর্ধিষ্ণু ও টেকসই ব্যবসায় উদ্যোগ খাতটি বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল শক্তি। অর্থনীতিকে বহুমুখীকরণ ও আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে দেশটির উদ্যোক্তাদের নতুন নতুন ধারণা ও পরিকল্পনা নিযে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘বালিকা ও নারীদের পেশাগত উন্নয়নের কোন বিশেষ সময় নেই। ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষ প্রাধান্য পাওয়া এই ক্ষেত্রটিতে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে- নারীরা অবিরাম প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।’এ ব্যাপারে তিনি বলেন, নারী ও মেয়েদের তাদের স্বপ্ন পূরণে সকল বাধা ও প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে, তা দূর করা সকলের দায়িত্ব।পিটার হাস বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করছি। আমরা এই সময়ে বাংলাদেশকে একটি ব্যাপক সম্ভাবনাময় ও আর্থিক প্রবৃদ্ধির রাষ্ট্র হিসেবে দেখছি- যার একদল তরুণ ও সুশিক্ষিত শ্রমশক্তি আছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের ১৬ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাই নারীদের ওপর এই বিনিয়োগ অবশ্যই সকলের অন্তর্ভূক্তিমূলক হতে হবে এবং পিছিয়ে পড়া নারীদেরও এর পূর্ণ সুফল পেতে হবে।এডব্লিউই’র আওতায় মোট ৫০ জন বাংলাদেশী নারী উদ্যোক্তাকে জ্ঞান, প্রশিক্ষণ, নেটওয়ার্ক এবং ব্যবসা শুরু ও সফল করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে।

মার্কিন দূতাবাস বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মের ১৬০০ আবেদনকারীর মধ্য থেকে ৫০ নারীকে বেছে নিয়েছে।হাস আশা করেন যে- অংশগ্রহণকারীরা প্রশিক্ষণের এই সুযোগকে ভালভাবে কাজে লাগাবেন এবং আরো নারীকে ব্যবসায় আসার পথ সুগম করবেন।এডব্লিউই কার্যপ্রণালী নারীদের অর্থনৈতিক সযোগ সৃষ্টি করতে সরাসরি ‘ইউএস ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি অন জেন্ডার ইক্যুইটি অ্যান্ড ইকুয়ালিটি’- কে সহায়তা করবে এবং নিশ্চিত করবে যে- নারীদের যেন অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, দক্ষতা ও জ্ঞান নিশ্চিত হয়।এডব্লিউই এর মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা ব্যবসায়িক দক্ষতা শিখে একসাথে বসে একটি ক্লাসের মতো অভিজ্ঞ উদ্যোক্তা, স্থানীয় শিক্ষক ও ইউএস এক্সচেঞ্জ এলামনাই নেটওয়ার্কের সাথে আলোচনা করতে পারেন।

২০২১ সালের একটি কর্মপ্রণালীর মূল্যায়নে দেখা গেছে যে, বিশ্বব্যাপী এডব্লিউই প্রোগ্রাম সম্পন্ন করা ৭৪ শতাংশ নারীর ব্যবসায় আয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২৯ শতাংশ নারীর ব্যবসা এতোটাই বড় হয়েছে যে তাদের তা পরিচালনা করাতে আরো কর্মী নিয়োগ দিতে হয়েছে।বিশ্বব্যাপী ৮০টির বেশি দেশে নারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির মাধ্যমে এডব্লিউই প্রোগ্রাম তাদের উপার্জনক্ষম করে তুলছে এবং নারী-নেতৃত্বাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরী সৃষ্টির মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে আর্থিক সমৃদ্ধি ও উন্নতিতে অবদান রেখে যাচ্ছে।

সূত্র  : বাসস