মাথা ঘোরা রোগ কেন হয়, প্রতিকারের উপায়

মাথা ঘোরা রোগ কেন হয়, প্রতিকারের উপায়

প্রতিকী ছবি

মাথা ঘোরার অনুভূতি হলে কারো মনে হয়, তিনি নিজেই ঘুরছেন। আবার কারো মনে হয়, চারপাশের সবকিছু বনবন করে ঘুরছে। 
আমাদের অন্তঃকর্ণের ভেস্টিবুলার অংশ শরীরের সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। এই কাজের যাবতীয় তথ্য স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছায়। প্রতি মুহূর্তে প্রতি ভঙ্গিমায় শরীর এই ভারসম্যা রক্ষা করে চলে। এই ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় সামান্য গোলমালেই ভারসাম্য নষ্ট হয়। তখনই মাথা ঘোরে। 

এ সমস্যার সাধারণ কারণগুলো হলো-

১. উচ্চ রক্তচাপ। 

২. কানের সমস্যা (ক) বিনাইন পজিশনাল ভার্টিগো-এতে অন্তঃকর্ণের ভেতর ক্যালসিয়াম জমে। (খ) মিনিয়ার্স রোগ-অন্তঃকর্ণের অভ্যন্তরীণ তরলের চাপ মাথা ঘোরা (ভাটির্গো) পরিবর্তন হয়। (গ) প্রদাহ, যেমন: ভাইরাস সংক্রমণ, ভেস্টিবুলার নিউরাইটিস ইত্যাদি। 

৩. মস্তিষ্কের সমস্যা: যেমন: মাথায় আঘাত বা পেট্রাস হাড়ের ক্ষতি, জোরে ঝুঁকনি, স্ট্রোক, টিউমার, মাইগ্রেন ইত্যাদি। 

৪. ঘাড়ের সমস্যা; ঘাড়ে আঘাত, স্পনডাইলাইটিস ইত্যাদি। 

৫. রক্তে লবণের তারতম্য, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মাথা ঘুরলে কান, চোখ ও ঘাড় পরীক্ষা করতে হবে। মিনিয়ার্স রোগে কানের ভেতর শো শো বা দপ দপ শব্দ হয়। বিনাইন পজিশনাল ভার্টিগো হলে মাথা বা ঘাড়ের অবস্থান পাল্টালে বা কাত বদল করলে মাথা ঘোরে। রক্তচাপের পরিবর্তনের জন্য বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘুরতে পারে। 

কী করবেন? রক্তচাপ মাপুন ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। দাঁড়ানোর সময় ধীরে ধীরে অবস্থান বদলাবেন। হাঁটার সময় মাথা ঘুরে উঠলে বসে বিশ্রাম নিন। ঘাড়ের রক্তনালিতে চর্বি জমে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়, তাই তেল-চর্বি কম খান। যে পাশে শুলে সমস্যা হয় পাশ না ফিরে সে পাশে জোর করে আধা মিনিট শুয়ে থাকুন। কোনো অংশ দুর্বল থাকলে ডাক্তার দেখাতে হবে।

লেখক: অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল, ঢাকা