ইতালির ভেনিসের ক্যানেল শুকিয়ে ‘কাঠ’

ইতালির ভেনিসের ক্যানেল শুকিয়ে ‘কাঠ’

ইতালির ভেনিসের ক্যানেল শুকিয়ে ‘কাঠ’

বিভিন্ন দেশের ভ্রমণবিলাসী মানুষদের পছন্দের গন্তব্য ইতালির ভেনিস। সেই ভেনিসের খালে এখন আর আগের মত পানি নেই। খাল শুকিয়ে ‘কাঠ’ হয়ে গেছে। ইতালির এই ঐতিহাসিক শহরে এখন আর বৃষ্টি হয় না। তাছাড়া হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডা ও ভাটা ভেনিসের এই খালগুলোকে শুকিয়ে দিয়েছে।

লিগামবিয়েন্তে নামে এক পরিবেশবাদী সংস্থা জানিয়েছে, ইতালির নদী-নালাগুলো পানির অভাবে ভুগছে। দেশটির উত্তর দিকের অবস্থা খারাপ বেশি খারাপ। ইতালির সর্ববৃহৎ নদী ‘পো’, যেটি আল্পস পর্বতমালা থেকে শুরু হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে বয়ে গেছে। সেই পো নদীতে এখন সাধারণ সময়ের চেয়ে ৬১ ভাগ কম পানি রয়েছে।

ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় শহর ভেনিস জুড়ে জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য খাল। এই খালগুলো ভেনিস পর্যটকদের কাছে যেন স্বর্গরাজ্য। খালে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য পর্যটকরা ভিড় করত। কিন্তু খালগুলোয় এখন আর পানি নেই। খালের কাদায় আটকে রয়েছে একাধিক নৌকা। স্থানীয়ভাবে খালে চলাচল করা এ নৌকাকে বলা হয় ‘গন্ডোলা’।

শীত, ভাটা ও বৃষ্টির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে এসব খাল। শীত যত বাড়ছে ভেনিসের গন্ডোলা ব্যবসায়ীদের চিন্তা আরো বাড়ছে। যদিও বিবিসির প্রতিবেদনের দাবি, ‘ভেনিসজুড়ে এমন পরিস্থিতির জন্য উচ্চচাপ, পূর্ণচন্দ্র ও সমুদ্রস্রোতসহ কিছু কারণ রয়েছে।’

ভেনিস সিটি কাউন্সিলের স্রোতসংক্রান্ত বিভাগে প্রধান আলভিস পাপা জানান, খরার কারণে হ্রদ ও নদীতে পানি কমে গেছে। ভূমধ্যসাগরে উচ্চচাপসহ এমন এক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যার প্রভাবে বৃষ্টি কম হচ্ছে। ভাটা পড়ছে। তবে ভেনিসের বড় বড় খালগুলোতে এখনো কোনো রকম পানির জোগান স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। শহরের ছোট খালগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। সাধারণত, জোয়ারের টানে ভেনিসের খালগুলো পানিতে ভরে থাকে। কিন্তু এবারের শীতে ভাটার টানে পানি কমে গেছে, আবার বৃষ্টিও নেই।

ভেনিসে গন্ডোলা চড়ার সবচেয়ে নামী জায়গার নাম ‘সেন্ট মার্কস স্কোয়ার’। সেখানেও একের পর এক গন্ডোলা কাদায় আটকে আছে। শহরটির জরুরি স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান পাওলো রোসি বলেন, ‘বেশির ভাগ জায়গায় খালে চলাচলের অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। হেঁটে রোগীদের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে।’

খরা পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করার পর গত বছর পো নদীর আশপাশের অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। ওই পো নদীর ওপর নির্ভর করেই উৎপাদিত হয় ইতালির এক তৃতীয়াংশ কৃষিপণ্য। গত বছর পো নদীতে গত ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরা দেখা যায়। ইতালির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বর্তমান এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ইতালিতে অন্তত ৫০ দিন মুষলধারে বৃষ্টির প্রয়োজন।

সূত্র : জি নিউজ