রাশিয়ার সীমান্তবর্তী বেলগোরদ অঞ্চলে আবারও গোলাবর্ষণ

রাশিয়ার সীমান্তবর্তী বেলগোরদ অঞ্চলে আবারও গোলাবর্ষণ

রাশিয়ার সীমান্তবর্তী বেলগোরদ অঞ্চলে আবারও গোলাবর্ষণ

রুশ কর্তৃপক্ষ বলছে রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী বেলগোরদ অঞ্চলে আবারও গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং তাতে আটজন আহত হয়েছে।

ওই অঞ্চলের গভর্নর ভাচেস্লাভ গ্লাদকভ সেখানকার শেবেকিনো শহরের পরিস্থিতি উত্তেজনাকর বলে উল্লেখ করেছেন এবং হামলার জন্যে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের দায়ী করেছেন।ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই হামলার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বেলগোরদ অঞ্চলের পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে।রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস বলছে দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সীমান্তরক্ষা বাহিনী, জরুরি সেবা বিভাগ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তরফে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে সর্বশেষ খবরাখবর জানানো হচ্ছে।

এর আগেও ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের সীমান্তবর্তী রাশিয়ার এই বেলগোরদে হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং তখনও মস্কোর পক্ষ থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের দায়ী করা হয়েছিল।রাশিয়ার সোশাল মিডিয়া চ্যানেলগুলো প্রথমে সবশেষ এই আক্রমণের কথা উল্লেখ করে। এসব খবরে শেবেকিনো শহরের সীমান্তের একটি তল্লাশি চৌকিতে যুদ্ধের কথা উল্লেখ করা হয়।বিবিসির ভেরিফাই বিভাগও কিছু ভিডিও দেখেছে যেখানে ইউক্রেনপন্থী দুটি আধাসামরিক বাহিনী রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে অভিযান পরিচালনার কথা ঘোষণা করতে দেখা যাচ্ছে।

একটি ভিডিও যা রাশান ভলান্টিয়ার কোর নামের একটি গ্রুপ শেয়ার করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে- সামরিক পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি বলছেন তাদের যোদ্ধারা “রুশ ভূখণ্ডের ভেতরে আরো একবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।”এই ভিডিওটি কখন ও কোথায় ধারণ করা হয়েছে তা পরিষ্কার নয়।ইউক্রেন সীমান্ত থেকে প্রায় ২৫ মাইল উত্তরে বেলগোরদ। অতিসম্প্রতি এখানে গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং এরকম পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

বেলগোরদের গভর্নর ভাচেস্লাভ গ্লাদকভ বলেছেন ওই অঞ্চলে বড় ধরনের ড্রোন হামলায় ব্যক্তিগত গাড়ি, বাড়িঘর, অফিস এবং গ্যাসের পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস বলছে, আক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্য যারা সেখান থেকে পালিয়ে গেছে তাদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে।

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১ বছর বয়সী একটি শিশুও রয়েছে। নিহত বাকি দুজন নারী।ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সব মিসাইলই গুলি করে ধ্বংস করা হয়েছে এবং উপর থেকে পড়া সেগুলোর ধ্বংসাবশেষের আঘাতে লোকজনের প্রাণহানি হয়েছে।কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়া কিয়েভ লক্ষ্য করে নিয়মিত মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে। গত মে মাসে এরকম ১৭টি হামলা চালানো হয় এবং সবশেষ বুধবার রাতের এই আক্রমণ এ-সপ্তাহেই চতুর্থ হামলা।বেশির হামলাই চালানো হয়েছে রাতের বেলায়। এর মধ্যে একবার দিনের বেলাতেও আক্রমণ করা হয়েছিল।সবশেষ এই হামলায় আরো ১১ জন আহত হয়েছে বলে খবরে বলা হচ্ছে।

হামলায় বেশ কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিচকো টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছেন শহরে “ধারাবাহিক বিস্ফোরণের” ঘটনা ঘটেছে এবং উদ্ধারকারীরা ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ সরানো ও আগুন নেভাতে কাজ করছে।প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন রাশিয়া এখন ইউক্রেনের রাজধানীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সাম্প্রতিক কালে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া যেসব হামলা চালিয়েছে সেগুলোতে ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ছাড়াও কামিকাজে ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছে।ইউক্রেন যখন রাশিয়ার ওপর পাল্টা আক্রমণ চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সেসময় কিয়েভ লক্ষ্য করে সবশেষ এই আক্রমণ চালানো হলো।

ইউক্রেন কয়েক মাস ধরেই রাশিয়ার ওপর পাল্টা আক্রমণের পরিকল্পনা করছে।কিন্তু পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে আধুনিক অস্ত্র এসে পৌঁছানো এবং সেগুলো ব্যবহারের বিষয়ে সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে তাদের পাল্টা হামলা শুরু করতে দেরি হচ্ছে।এই পরিকল্পনাকে ইউক্রেনের জন্য বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি