২৫ হাজার টাকা দাবি ট্যানারি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি

২৫ হাজার টাকা দাবি ট্যানারি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি

আলোচনা সভায় বক্তারা বক্তব্য রাখছেন।

এই উচ্চ মূল্যের বাজারে স্বল্প মজুরিতে সংসার চলছে না ট্যানারি শ্রমিকের। সব শেষ ২০১৮ সালে এ খাতের জন্য ন্যূনতম মজুরি ১৩ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও সেটি আজও পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায়নি। ট্যানারি শিল্প মালিকরা ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা দিয়ে শ্রমিকদের কাজ করাচ্ছেন। এই স্বল্প মজুরিতে দুই বেলার খাবার জোটানো কঠিন হয়ে পড়েছে ট্যানারি শ্রমিকদের।

তাই এ খাতের শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে। 

বুধবার (৩১ মে) বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল অডিটরিয়ামে ‘চামড়া শিল্প : অর্জন ও প্রতিবন্ধকতা, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কার্যক্রম, বর্তমান অগ্রাধিকার ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব দাবি জানান। ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ লেবার রাইটস জার্নালিস্ট ফোরামের (বিএলআরজেএফ) যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভাটির সার্বিক সহযোগিতা করে সলিডারিটি সেন্টার।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ড. ওয়াজেদুল ইসলাম খান।

বিএলআরজেএফের সভাপতি কাজি আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন বিএলআরজেএফের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান। 

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পরিবেশ দূষণের অভিযোগে রাজধানীর হাজারিবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে ট্যানারি শিল্প স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সেখানেও পরিবেশ দূষণ করছে ট্যানারি কারখানাগুলো।

সঠিকভাবে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার তৈরি না করায় ট্যানারি বর্জ্য শোধন করা যাচ্ছে না। এই দূষিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে। এ ছাড়া যেখানে সেখানে ফেলে রাখা হচ্ছে সলিড বর্জ্য। এভাবে হেমায়েতপুরের ট্যানারি পল্লীতেও পরিবেশ দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অথচ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ ব্যয় করে সরকার ট্যানারি পল্লী স্থাপন করেছে।

এখানে শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিসিকের ব্যর্থতার কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর দায় প্রতিষ্ঠান দুটিকে নিতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, ট্যানারি মালিকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। কারণ শ্রমিকরা চরমভাবে বঞ্চিত। সাভার ট্যানারি পল্লীতে শ্রমিকদের জন্য আবাসনের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে হাজারীবাগ থেকে প্রতিদিন ৭০ টাকা গাড়িভাড়া দিয়ে কারখানায় যেতে হয় কাজে। এতে স্বল্প বেতনের বড় একটি অংশ চলে যাচ্ছে। তাই ট্যানারি পল্লীতে শ্রমিকদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। আলোচনা সভায় বক্তারা আসন্ন কোরবানির ঈদের পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণেরও দাবি জানান।