প্রধান শিক্ষককে লাঞ্চিত করার অভিযোগের সেই কৃষকলীগ নেত্রী গ্রেপ্তার
সংগৃহিত ছবি।
সরকারি কাজে বাধা দান ও সরকারি কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বুধবার (৭ জুন) রাতে আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও জেলা কৃষকলীগের মহিলা সম্পাদিকা সামশাদ রানুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৭ জুন) সকালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা সরকারি বহুমুখী মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানকে লাঞ্চিত করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই কৃষকলীগের ঐ মহিলা নেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৭ জুন) সকাল থেকে আলমডাঙ্গা সরকারি বহুমুখী মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা চলছিল। একই দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষার দিন ছিল। অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার জন্য সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে দেরি হচ্ছিল। এজন্য ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পরীক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। এর মধ্যে সামশাদ রানুর ছেলেও (সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী) ছিল। ছেলের শরীরে রোদের আঁচ লাগার কারণে ক্ষুব্ধ হন নারী নেত্রী সামশাদ রানু।
এরপর প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানকে বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেখেই তার শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে শ্রেণিকক্ষের দিকে নিয়ে যান এবং কিলঘুষি মারতে থাকেন রানু। একপর্যায়ে তিনি নিজের জুতা খুলেও মারধরের চেষ্টা করেন। এসময় অন্য শিক্ষকরা এগিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান বলেন, সবার সামনে মারধরের ঘটনায় আমি হতবাক। বিষয়টি ইউএনও সাহেবকে জানিয়েছি। পরে পুলিশকে জানানো হয়েছে। থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযুক্ত সামশাদ রানুর দাবি, বিদ্যালয়ের কক্ষ না খোলায় তার ছেলেসহ প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। তীব্র তাপদাহে শিক্ষার্থীদের হাঁসফাঁস অবস্থা। পরীক্ষা কখন শুরু হবে সেটা শিক্ষকদের ব্যাপার। তবে শিক্ষার্থীরা এ গরমের মধ্যে মাঠে কেন থাকবে? শ্রেণিকক্ষ খুলে দিলেই তো তারা সেখানে থাকতে পারত। এ তীব্র গরমে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থও হয়ে যেতে পারত। এজন্য শিক্ষকের শার্টের কলার ধরে টেনে নিয়ে কক্ষের তালা খোলানো হয়েছে। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসতে পেরেছে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, সরকারি কাজে বাধা দান ও সরকারি কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর আসামি সামশাদ রানুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।