সোমালিয়ায় ভয়াবহ সহিংসতায় নিহত অন্তত ৩৬

সোমালিয়ায় ভয়াবহ সহিংসতায় নিহত অন্তত ৩৬

সংগৃহীত

পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় ভয়াবহ সহিংসতায় কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২০ জুন) দেশটির আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ পান্টল্যান্ডে ভয়বাহ সংঘাত ও লোয়ার শাবেল অঞ্চলে বোমা বিস্ফোরণে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে দেশটির সেনা সদস্যরাও রয়েছেন। বুধবার (২১ জুন) পৃথক দুই প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সোমালিয়াজুড়ে সহিংসতায় কমপক্ষে ৩৬ জন মারা গেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। আধা-স্বায়ত্তশাসিত পান্টল্যান্ড প্রদেশে তীব্র সহিংসতা এবং দেশটির লোয়ার শাবেল অঞ্চলে বোমা বিস্ফোরণে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

আল জাজিরা বলছে, সোমালিয়ার আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ পান্টল্যান্ডে ভয়বাহ লড়াইয়ে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৬ জনই সেনা সদস্য। মঙ্গলবার প্রাদেশিক রাজধানী গারওয়েতে স্থানীয় সংসদে ভোটিং পদ্ধতিতে পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক নিয়ে এই সংঘর্ষ-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

গারওয়ে পাবলিক হাসপাতালে কর্মরত ডা. আবদিরসাক আহমেদ বলেন, সহিংসতায় অন্তত ২৬ জন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে ১৬ জন সৈন্য। এছাড়া এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন। নিহতদের মধ্যে কিছু ব্যক্তির মরদেহ ওই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অন্য তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বিরোধী দলগুলো পান্টল্যান্ডের নেতা সাইদ আবদুল্লাহি ডেনিকে সাংবিধানিক পরিবর্তনের জন্য অভিযুক্ত করার পরে ব্যাপক সংঘাতের সূচনা হয়। বিরোধীদের অভিযোগ, সাংবিধানিক পরিবর্তন কার্যকর হলে তা আগামী বছরের জানুয়ারির পরেও সাইদ আবদুল্লাহির ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি করবে বা তার পক্ষে ব্যালট কারচুপি করতে সহায়তা করবে।

পান্টল্যান্ড সরকার ফেসবুকে বলেছে, আঞ্চলিক সংসদ সংবিধানের সংশোধনী বিবেচনা করার জন্য ভোট দিয়েছে এবং এ বিষয়ে আরও বিতর্ক ও ভোট হবে।

স্থানীয় প্রবীণ নাগরিক ফারাহ ওসমান বলেছেন, পান্টল্যান্ড পার্লামেন্ট একাধিক রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি এক-মানুষ-এক ভোট-নির্বাচনের জন্য ভোট দেয়ার পরপরই লড়াই শুরু হয়। এটি খুব ভয়ঙ্কর লড়াই।

এদিকে সোমালিয়ার প্রধানমন্ত্রী হামজা আবদি বারে একে-অপরের প্রতিদ্বন্দ্বীদের ‘বন্দুকের নলের পরিবর্তে’ সংলাপের মাধ্যমে তাদের মতপার্থক্য সমাধান করতে জরুরি আবেদন করেছেন। তিনি বলেছেন, পান্টল্যান্ড হচ্ছে শান্তির আবাসস্থল এবং ২০ বছর ধরে সরকার থাকার পর সেখানকার রাজধানীতে যুদ্ধ শুরু হওয়া অগ্রহণযোগ্য।

অন্যদিকে পৃথক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, সোমালিয়ার লোয়ার শাবেল অঞ্চলে পৃথক সহিংসতায় কমপক্ষে দশ জন মারা গেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা ও একজন সৈন্য জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশু থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত বারিরে গ্রামে দূর-নিয়ন্ত্রিত একাধিক বোমা বিস্ফোরণে প্রাণহানির ওই ঘটনা ঘটে।

সৈনিক নুর দিরিয়ে রয়টার্সকে বলেছেন, প্রথম একটি বোমা বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোক নিহত হয়। তারপর অনেক বেসামরিক ব্যক্তি এবং আমরা সৈন্যরা প্রথম বিস্ফোরণ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার তৎপরতা শুরু করি। একপর্যায়ে অনেক লোক একত্রিত হলে দ্বিতীয় বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।