ঝালকাঠিতে কলেজ ছাত্রীকে হত্যার দায়ে এক যুবকের ফাঁসি

ঝালকাঠিতে কলেজ ছাত্রীকে হত্যার দায়ে এক যুবকের ফাঁসি

ঝালকাঠিতে কলেজ ছাত্রীকে হত্যার দায়ে এক যুবকের ফাঁসি

ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী বেনজির জাহান মুক্তাকে গলা কেটে হত্যার দায়ে মো. সোহাগ মীর (২৮) নামে এক যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত। 
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় জেলা দায়রা জজ মেহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম আসামীর উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। 

রায়ে একই সাথে সোহাগ মীরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চসহকারী মো. রুস্তম আলী খান রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত সোগাগ মীর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়নের আনিপাড়া গ্রামের ছোবাহান মীরের ছেলে। সে ঢাকায় একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের কাজ করতো।

পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল মান্নান রসুল বলেন, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বাড়ইকরণ গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদারে মেয়ে ঝালকাঠি সরকারী মহিলা কলেজের বি.এ প্রথম বর্ষের ছাত্রী বেনজীর জাহান মুক্তার (১৯) সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় সোহাগ মীরের। কিছুদিন সম্পর্ক চলার পর তাদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝির সৃস্টি হয়। ঘটনার দিন ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে সোহাগ ঢাকা থেকে এসে মোবাইল ফোনে মুক্তাকে তাদের বাড়ির কাছে কাপড়িয়া বাড়ির নতুন রাস্তায় দেখা করার জন্য ডেকে আনে। মুক্তা সেখানে এলে কথাবার্তা বলার একপর্যায়ে সোহাগ মীর মুক্তার গলায় ছুরিকাঘাত করে। মুক্তা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সোহাগ পালিয়ে যায়। 

পরে স্থানীয়রা মুক্তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার দিন রাতে নিহত মুক্তার বাবা মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার বাদী হয়ে নলছিটি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 
ঘটনার তিনদিন পর ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি  নলছিটি থানা পুলিশ ঝালকাঠি ডিবি পুলিশের সহায়তায় পটুয়াখালী জেলার কলাপড়া উপজেলার চাকমাইয়া গ্রামের ফুপুর বাড়ি থেকে সোহাগ মীরকে গ্রেফতার করে। পরেরদিন ৮ ফেব্রুয়ারি সোহাগ মীরকে আদালতে হাজির করা হলে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। 

২০২০ সালের ৫ মার্চ নলছিটি থানার পরিদর্শক আব্দুল হালিম তালুকদার সোহাগ মীরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। ৫৩ কার্য্যদিবসে ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ  শেষে জেলা ও দায়রা জজ মো. ওয়ালিউল ইসলাম রায় ঘোষণা করেন। আসামী সোহাগের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন লিগ্যাল এইড নিয়োজিত আইনজীবী মঞ্জুর হোসেন। বাদী পক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আব্দুল মান্নান রসুল।

সূত্র : বাসস