উচ্চ রক্তচাপ থাকলে লবণ খাওয়া নিষেধ, তবে লবণের বিকল্প কি?

উচ্চ রক্তচাপ থাকলে লবণ খাওয়া নিষেধ, তবে লবণের বিকল্প কি?

উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। —প্রতীকী ছবি।

চেনা-পরিচিত, সহকর্মী, আত্মীয়স্বজন অনেকেরই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। ব্যস্ততার জীবনে অনিয়ম আর পরিশ্রম হল অন্যতম সঙ্গী। সেই সঙ্গে বাইরের তেল-মশলাদার খাবারের প্রতি ভালবাসা তো রয়েছেই। তবে এই কারণগুলিই রক্তচাপের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার জন্য একমাত্র নয়। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, অত্যধিক হারে নুন খাওয়ার কারণে এই অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তাই নুন খাওয়ায় রাশ টানা জরুরি। রক্তচাপের মাত্রা যাঁদের এখনও লক্ষণরেখা পার করেনি, ঝুঁকি এড়াতে নুন খাওয়া কমানো জরুরি।

ইতিমধ্যেই যাঁরা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত, কাঁচা নুন তাঁদের কাছে বিষের সমান। নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, শরীরচর্চা করা, বাইরের খাবার কম খাওয়া— রক্তচাপের মাত্রা কমাতে এই নিয়মগুলি মেনে চলাই যথেষ্ট নয়। নুন খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তবেই সুস্থ থাকা সম্ভব। একই কথা বলছেন চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায়।

চিকিৎসক বলেন, ‘‘অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন, উচ্চ রক্তচাপে কী খাওয়া উচিত আর কী খাওয়া উচিত নয়। যদি উচ্চ রক্তচাপের রোগীর ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, থাইরয়েডের মতো আর কোনও সমস্যা না থাকে, তবে যে বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সংযত হওয়া জরুরি, তা হল নুন। যতটা সম্ভব নুন কম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এমনিতে আমরা পাতে নুন খেতে বারণ করি। এমনকি, রান্নাতেও কম নুন দিলে ভাল। তবে নুন খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিলে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে।’’ সে দিকেও খেয়াল রাখতে বলছেন চিকিৎসক।

খাওয়ার সময়ে আলাদা করে নুন নেওয়া বন্ধ করে দিলেন। রান্নাতেও আগের চেয়ে নুনের ব্যবহার কম করছেন। তা হলেও কি নুন থেকে দূরে থাকা সম্ভব? তা কিন্তু নয়। কারণ, এমন অনেক খাবার রয়েছে, যেগুলিতে নুনের পরিমাণ অনেক বেশি। পাঁপড়, চানাচুর, বাইরের বিভিন্ন মুখরোচক খাবারে নুন থাকে। সরাসরি না খেলেও এই খাবারগুলির মাধ্যমে শরীরে নুনের প্রবেশ ঘটছে। শুধু নুন খাওয়া কমালে চলবে না। সেই সঙ্গে এই ধরনের খাবারও কম খেতে হবে।

রক্তচাপ থাকলে নুন খাওয়া চলবে না। অথচ রান্না সুস্বাদু হয় নুনের গুণে। নুন ছাড়া কোনও রান্নাই মুখে তোলা বেশ কষ্টকর। ডায়াবেটিকরা চিনি খেতে পারেন না। সে জন্য অনেকেই বিকল্প হিসাবে সুগার ফ্রি খান। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য নুনের কোনও বিকল্প আছে? চিকিৎসকের কথায়, ‘‘লো ফ্যাট সল্ট খাওয়া যেতে পারে। তবে সেটাও অল্প পরিমাণে। অনেকেই আবার বিটনুন, সৈন্ধব লবণ খান। সৈন্ধব লবণ আয়োডিন যুক্ত নয়। ফলে এই ধরনের নুন খাওয়ার কোনও মানে নেই। আর বিটনুনের কোনও স্বাস্থ্যগুণ নেই। খেতে ভাল লাগলেও শরীরের কোনও উপকার হয় না।’’