চকরিয়ার চিংড়ি জোন থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, সাতজন গ্রেপ্তার

চকরিয়ার চিংড়ি জোন থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, সাতজন গ্রেপ্তার

ছবিঃ সংগৃহীত।

কক্সবাজারের চকরিয়ার চিংড়ি জোনের দুর্গম ছিলখালি এলাকায় অভিযান চালিয়েছে র‌্যাবের আভিযানিক দল। এ সময় দেশে তৈরি বিভিন্ন সাইজের পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ কার্তুজ, সেনাবাহিনীর নকল ইউনিফর্ম, অত্যাধুনিক বাইনোকুলার ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় ডাকাত দলের কাছে অস্ত্র ভাড়াদানকারী চক্রের সাত সদস্যকে।

র‌্যাব-১৫ কর্তৃক এই অভিযান পরিচালনা করা হয় বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার (৭ জুলাই) ভোর পর্যন্ত।

এই ঘটনায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে শনিবার (৮ ‍জুলাই) দুপুরে চকরিয়া থানায় মামলা রুজু ও গ্রেপ্তারকৃতদের সোপর্দ এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্র-গোলাবারুদ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।

উদ্ধারকৃত অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি ওয়ান শুটার এক নলা বন্দুক, ১টি ওয়ান শুটার কাটা রাইফেল, ১টি ওয়ান শুটার রাইফেল (এলজি), ১টি এয়ার রাইফেল/গান, ২ রাউন্ড মেশিনগান (এমজি)-এর বুলেট, ১০ রাউন্ড রাইফেলের বুলেট, ১১ রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, ৮৯ রাউন্ড এয়ার রাইফেল বল, ১টি বড় রামদা, ১ সেট সেনাবাহিনীর ভুয়া ইউনিফর্ম, ১টি বাইনোকুলার, ৮টি মোবাইল ফোন এবং ১০টি সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চকরিয়ার নলবনিয়ার মৃত সিদ্দিকের ছেলে খায়রুল আমিন, ঈদগাঁওর মধ্যম শিয়াপাড়ার মৃত আবদুস ছত্তারের ছেলে মাহবুব তৈয়ব, লামার আজিজ নগরের নূর ইসলাম, চকরিয়ার দরগা পাড়ার মৃত ডা. আব্দুল মোতালিবের ছেলে মো. আব্দুল হাসিম, খুটাখালীর দক্ষিণ মেদাকচ্ছপিয়ার মৃত আব্দুর শুক্কুরের ছেলে জুলফিকার আলী ভুট্টো, পূর্ব হাজীপাড়ার মো. হোসেনের ছেলে মো. সেলিম ও গর্জনতলীর মো. হোসেনের ছেলে শাহাব উদ্দিন।

র‌্যাব জানায়- কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ও মহেশখালী থানাসহ উপকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকায় সশস্ত্র ডাকাত দলের নিয়মিত তৎপরতার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার সশস্ত্র ডাকাত দলের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদেরকে গ্রেপ্তার প্রচেষ্টার পাশাপাশি তাদের অস্ত্রের উৎস খুঁজে বের করতে অনুসন্ধানে নামে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১৫ জানতে পারে যে, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানাধীন স্থল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম ছিলখালির ঘরবসতিহীন সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় অবস্থান করে একটি চক্র টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ডাকাত দলের নিকট আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী নিয়মিত ভাড়া দিয়ে থাকে।

জানা যায়, এক ঘণ্টার পায়ে হাঁটা পথ ব্যতীত সেখানে যাওয়ার আর কোনো স্থলপথ নেই। আশেপাশে ১/২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অপরিচিত কোনো মানুষ ঢুকলেই ডাকাতদের নিযুক্ত চেকারদের মাধ্যমে তাদের কাছে তথ্য চলে যায় এবং তখন তারা গা ঢাকা দিয়ে দেয়। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার এর সিপিএসসি এর একটি চৌকস আভিযানিক দল উক্ত চক্রটিকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে একটু ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতঃ গত বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে লবণের বড় নৌকার পাটাতনে লুকিয়ে ডাকাতদের সেই আস্তানার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।

একপর্যায়ে সংযুক্ত একটি ছোট খালের মাধ্যমে আস্তানার একেবারে নিকটবর্তী হয়ে কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই র‌্যাবের আভিযানিক দল নৌকা থেকে নেমে সেখানে অতর্কিত অভিযান শুরু করে। উপস্থিত দুষ্কৃতকারীরা সশস্ত্র অবস্থায় থাকলেও পরিস্থিতির আকস্মিকতায় ও র‌্যাব সদস্যদের এরূপ কৌশলী অবস্থানের কারণে গুলি ছোড়ার কোনো সুযোগ পায়নি। এ সময় চক্রটির ৭ অস্ত্রধারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল জব্বার র‌্যাবের এই অভিযান পরবর্তী থানায় মামলা রুজুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।